বর্তমান যুগে ব্যক্তিগত পর্যায়ে যোগাযোগের জন্য মানুষ ডাক বিভাগ তেমনভাবে ব্যবহার করছে না, কেবল দাপ্তরিক কাজেই ব্যবহৃত হচ্ছে ডাক বিভাগ। মনি অর্ডার সার্ভিসের ব্যবহারও বেশ কমে গেছে। যুগের সাথে তাল মেলানোর জন্য ডাক বিভাগ তথ্য প্রযুক্তনির্ভর কিছু সেবা চালু করেছে। কেবলমাত্র প্রচারের অভাবে এগুলোর গ্রাহক সংখ্যা সেভাবে বাড়ছে না।
ডাক বিভাগ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত তাদের যে নেটওয়ার্ক আছে তা ব্যবহার করে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর সেবাগুলো পৌঁছে দেবার চেষ্টা করছে।
সীমিত পরিসরে ডাক বিভাগের চালু করা পোস্টাল কার্ড দিয়ে সরকারি বিভিন্ন ভাতার টাকা তোলা যাবে এবং বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা যাবে। গত বছরের ২৬ মার্চে উদ্বোধনের পর ঢাকার ছয়টি এবং কুমিল্লার ২৫টি ডাকঘরে এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। প্রথম ধাপে ৬০০টি ডাকঘরে এই সেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
ডাক বিভাগের ওয়েব সাইট
http://www.bangladeshpost.gov.bd
পোস্টাল ক্যাশ কার্ড কি?
পোস্টাল ক্যাশ কার্ড হচ্ছে ডাক বিভাগের চালু করা ডেবিট কার্ড। এই কার্ড ব্যবহার করে একজন গ্রাহক তার একাউন্টে টাকা জমা রাখতে পারবেন, পরবর্তীতে টাকা তুলতে পারবেন বা অন্য গ্রাহকের কার্ডে পাঠাতে পারবেন।
প্লাস্টিকের এই কার্ডে ম্যাগনেটিক স্ট্রিপের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়।
একাউন্ট খোলা এবং কার্ড সংগ্রহ করা
মাত্র ৪৫ টাকায় পোস্ট অফিস থেকে এ ধরনের একাউন্ট খোলা যায় এবং শুরুতে ১০ টাকা থাকে গ্রাহকের একাউন্টে। আর এভাবে ১০ টাকা রেখেই একাউন্ট চালু রাখা যায়। কার্ড ইস্যু করার সময়ই এ্যাক্টিভেটেড বা সক্রিয় থাকে, ফলে শুরু থেকেই গ্রাহক লেনদেন করতে পারেন। ডাক বিভাগ সরকারী হওয়ায় টাকা লেনদেনের সমস্ত দায়িত্ব সরকার নিয়ে থাকে।
সুবিধা সমূহ
টাকা ফুরিয়ে গেলে আবার একাউন্ট টাকা জমা রেখে কার্ড ব্যবহার করা যায়।
পোস্টাল ক্যাশ কার্ড সেবা আছে এমন যেকোন ডাকঘর থেকে ক্যাশ কার্ড ব্যবহার করে টাকা তোলা যায় এবং অন্য কার্ডধারীর একাউন্টে টাকা পাঠানো যায়।
কার্ড হারালে
কার্ড হারালে বা নষ্ট হলে তাৎক্ষণিক ভাবে ৯৫৫৫৯৯৩ অথবা ৯৫৬৮১৪২ নম্বরে জানাতে হবে। সেবা কেন্দ্র থেকে হারানো কার্ডটি তাৎক্ষণিকভাবে লক করে দেয়া হবে। পুরনো কার্ডের তথ্য সরবরাহ করে নতুন কার্ড নেয়ার পর নতুন কার্ডে পুরনো কার্ডের ব্যালান্স পাওয়া যাবে।
নতুন কার্ডেরর জন্য ৩০ টাকা চার্জ দিতে হয়। গ্রাহক কিছু চার্জের বিনিময়ে কার্ডে ছবি বসিয়ে পারসোনালাইজ করে নিতে পারেন।
একাউন্ট ব্যালেন্স জানতে করণীয়
যেকোন পোষ্ট অফিসের পিওএস মেশিনে পোষ্টমাষ্টারের সাহায্যে একাউন্টের ব্যালেন্স জানা যায়। প্রতিবার ব্যালান্স জানার জন্য পাঁচ টাকা করে কাটা হয়।
পিন (PIN)
গ্রাহক কার্ড নেবার সময় তাকে চার ডিজিটের একটি পিন নম্বর দেয়া হয়।
তবে যে কাগজে পিন নম্বর দেয়া হচ্ছে সেটি ছেঁড়া থাকলে সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট পোস্ট মাস্টারকে অবহিত করা উচিত।
সতর্কতা
চার ডিজিটের পিন নম্বরটি মুখস্ত করে ফেলা উচিত। সবাই দেখতে পায় এমন কোন জায়গায় এটি লিখে রাখা উচিত নয়। তবে গোপন কোন জায়গায় লিখে রাখা যেতে পারে। আর এই নম্বরটি কাউকেই জানানো উচিত নয়, এমনকি পোস্ট অফিসের কর্মীদেরও নয়।
পিন নম্বর হারিয়ে গেলে বা ভুলে গেলে সেটা পোস্ট অফিসে জানাতে হবে। পিন নম্বরটি চুরি হলে সেবাদান কেন্দ্রে ফোন করে পিন নম্বর পরিবর্তনের অনুরোধ করতে হবে।
ভুল পিন দিলে...
ভুল পিন ব্যবহার করলে লেনদেন সম্পন্ন হবে না এবং পিওএস মেশিন -Invalid Pin” ম্যাসেজ দেখাবে। এভাবে মোট তিনবার চেষ্টা করার পর ঐ দিনের জন্য কার্ডটি লক হয়ে যাবে।
কার্ডের যত্ন
আপনার কার্ডটি পরিস্কার রাখতে হবে এবং বাঁকানো যাবে না।
দু’টি কার্ডের চৌম্বকীয় অংশ পাশাপাশি রাখা ঠিক নয়। কার্ড এর পিছনে স্বাক্ষর এবং নাম লিখে রাখা উচিত।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
পোষ্টাল ক্যাশ কার্ড ব্যবহার করে কিউ ক্যাশ নেটওয়ার্কের অন্যান্য ব্যাংকের এটিএম ও পিওএস মেশিনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের সুবিধা পাওয়া যাবে।
পোষ্টাল ক্যাশ কার্ড ব্যবহার করে সুপার শপ, শপিং মল থেকে কেনাকাটা করার সুবিধা পাওয়া যাবে।
পোষ্টাল ক্যাশ কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার ভাতা প্রান্তিক সুবিধাভোগীদের সরাসরি পৌছিয়ে দেয়ার সুবিধা দেয়া হবে ফলে মধ্যবর্তী খরচ এড়ানো সম্ভব হবে।
পোষ্টাল ক্যাশ কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর প্রিমিয়াম আদায় করা যাবে।
বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল দেয়া যাবে।
তথ্যসূত্রঃ Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।