আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দূর্নীতিঃ ফাসী তো আর হবেনা, টেনশন কিসের !!

সেদিন টিভির এক অনুস্ঠানে দেখেছিলাম জনৈক মহা দূর্ণীতিবাজের দম্ভ ভরা উক্তি, ' যা করেছি তার জন্য ফাসী তো আর হবেনা, কাজেই টেনশন কিসের!' আরেক মহা দূর্ণীতিবাজ যিনি বনের রাজা বলে খ্যাত , আমার ভাষায় বন চোরের রাজা ,তাকে ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতারের সময় দেখেছিলাম তার স্ত্রীর একই উদ্ধত আচরণ। আন্তর্জাতিক খবরদারী সংস্থাগুলোর মূল্যায়নে দূর্ণীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান তো সবারই জানা। আমাদের কতিপয় নেতা এবং বুদ্ধিজীবিরা প্রতিনিয়তই বলে থাকেন 'দেশটা দূর্ণীতিতে ছেয়ে গেছে, দেশের মানুষ দূর্ণীতিতে অভ্যস্থ্য হয়ে গিয়েছে, আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্ণীতি ' আমরা দুর্ণীতিবাজ জাতিতে পরিণত হয়েছি ' ইত্যাদি, ইত্যাদি। সত্যি কি তাই ! আমরা গোটা জাতিই কি দুর্ণীতিবাজ নাকি কতিপয় ব্যাক্তি বা গোষ্ঠি ? সমাজের বৃহত্তর জন গোষ্ঠি তো দুর্ণীতি করে না । তাহলে সমগ্র জাতি কেনো এই কলংকের বোঝা মাথায় নিবে ? চুরি করে দশ ঘর, নাম হয় চোরের গ্রাম ব্যাপারটা কি সেরকম ! বলতে পারেন দুর্ণীতিতে যারা ক্ষতিগ্রস্থ, ঘুষ, কমিশন ইত্যাদি দিতে বাধ্য হয় তারাও দোষী।

তাহলেও গোটা জাতিকে দুর্নীতিবাজ বলার অবকাশ আছে কি ! কারণ প্রায় সত্তর ভাগ লোক গ্রামে নিরীহ সাধারন জনগন। তার উপর শতকরা ষাট ভাগ লোকের দরিদ্রসীমা বা তার নীচে অবস্থান। এরা তো দুর্ণীতি করেনা , দুর্নীতি তো করে অল্প কিছু বিত্তবান বা উচ্চবিত্ত। তা হলে গোটা জাতি কেন দুর্ণীতি বাজ বলে কলংকের বোঝা মাথায় নেবে ? অতএব এ জাতীয় ঢালাও মুল্যায়ন পরোক্ষভাবে ঐ দুর্ণীতিবাজদেরই সহায়ক হয়। মূল বিষয়টি ডাইলুটেড এবং লক্ষ্যচ্যুত হয়ে যায।

আর অল্প সংখ্যক দুর্ণীতিবাজ এর আড়ালে ব্যাপারটি কে সার্বজনীন করে পার পেয়ে যায়, যার কোনো প্রতিকারের পথ থাকে না। । এসব দুর্ণীতিবাজদের কাজ হচ্ছে রাজনীতিকে প্রভাবিত করা, যুব সমাজকে বিপথগামী করা, সন্ত্রাসী লালন করা, কিছু সংখক বুদ্ধিজীবি, গবেষক ও এন জিও কে দুর্ণীতি থেকে দৃস্টি সরিয়ে নেয়ার কর্মকান্ডে নিবদ্ধ রাখা। এরাই স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষা ব্যাবস্থা যাতে অনুন্নত থেকে যায়, জাতি যাতে শিক্ষিত না হয় তার সব ব্যবস্থাই করেছেন। তাই দেখা যায় বিত্তবানদের সন্তান রা শিক্ষা, চাকুরীর জন্য বিদেশগামী আর দেশের ছাত্রসমাজ ও মধ্যবিত্ত শ্রেনী আজ ভোগবাদী আদর্শের দিকে ধাবিত।

জন কল্যানমুখী কোনো লক্ষ্য তাদের আকৃস্ট করে না। বিরাট সংখ্যক সম্ভাবনাময় ছাত্রসমাজ আজ বিপথগামী। তাই প্রয়োজন নতুন মুল্যায়নের, নতুন দৃষ্টীভঙ্গী এবং আপামর জনগনকে এ বিষয়ে সচেতন করে, উদ্বুদ্ধ করে দুর্ণীতির বিরুদ্ধে বিপ্লব করা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।