I am what I am and that's how I would be. No I am not stubborn. I just want to be myself. স্কুলের সময় থেকেই চিঠি লিখতাম প্রচুর। বড়বোন ঢাকায় চলে গেলো বিয়ের পরে, হলুদ খামে করে নিয়মিত চিঠি লিখতাম। ভাই চলে গেলো যুক্তরাষ্ট্রে। বাসার সবাই দলবেঁধে, একটা এয়ারমেইল খামে ভরে চিঠি পোস্ট করতাম। তারপর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম জবাবের জন্যে।
লেখালিখির হাতেখড়ি বোধকরি সেসময় থেকেই হয়েছিল আমার।
চট্টগ্রামের দৈনিক পূর্বকোণে একটা মহিলাদের পাতায় একটা গল্প লিখেছিলাম, তখন আমি পড়ি ক্লাস এইটে। বাসায় কাউকে না-বলে লিখেছিলাম লুকিয়ে। কেউ না দেখে মতো পোস্ট করে দিয়েছিলাম মোটা খামে ভরে। অবশ্যই ছদ্মনামে লিখেছিলাম, কারণ রোমান্টিক গল্প, বাসায় জানলে যদি মাইর দেয়!! প্রতিসপ্তাহে সেই পাতা উল্টিয়ে দেখতাম আমার লেখা এলো কিনা।
আমার মনে আছে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি, ছাপানো হয়ে গেল সেই গল্পটা।
বুক ধুকধুক করেছিল সারাটাদিন, যদি পড়ে আম্মু বুঝে ফেলে, ওটা আমি লিখেছি? যদি আমার বড়বোন বুঝে ফেলে? ভয়ে ভয়ে গল্পটা নিজেও পড়েছিলাম। কী যে আনন্দ হয়েছিল ছাপার অক্ষরে নিজের লেখা পড়তে, সেটা আজও ভুলিনি। কেউ বুঝে ফেলবে এই ভয়ে নির্বিকার থেকেছি। রাতে ঘুমুতে যাবার আগে আবার, পরেরদিন আবারো পড়েছিলাম।
কাউকে বলতে পারিনি। লেখাটা জমিয়েও রাখিনি। মনেও নেই কোন ছদ্মনামে, কী লিখেছিলাম। শুধু মনে আছে তখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি, এবং পত্রিকাটা পূর্বকোণ।
কলেজের সেকেন্ড ইয়ারে আরেকটা গল্প লিখলাম।
কাগজের পর কাগজে লিখে স্ট্যাপ্ল করে পড়তে দিলাম তিনজন বান্ধবীকে। প্রেমের গল্প, বলা অপেক্ষা রাখেনা। পড়ার পরে, অবাক কান্ড, আমার তিনজন বান্ধবীই আমাকে জিজ্ঞেস করলো, ঘটনা কি সত্যি নাকি? আমি যে বানিয়ে এমন গল্প লিখতে পারি সেটা তারা বহুদিন পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারেনি। কী আর করা, সেই লেখাও আর ছাপতে দেওয়া হলোনা। কে জানে, বাসার সবাই যদি মনে করে ঘটনা সত্যি? ঐ লেখাও জমিয়ে রেখেছিলাম অনেকদিন, একদিন পরে ফেলে দিলাম।
ডায়রী লেখা শুরু করলাম স্কুলের শেষের দিকে। একবার বড়বোনের কথাবার্তায় বুঝলাম সে আমার ডায়রীর নিয়মিত পাঠক। ইতি হলো ডায়রী লেখার। আবার ডায়রী লেখা শুরু করলাম রোকেয়া হলে এসে। তখন নিজের একটা লকার ছিল।
লেখার মত অনেক টপিকও ছিল। তবে সময় ছিলনা যে, নিয়মিত লিখবো। বিশেষ একজন একদিন সেই ডায়রী লেখা নিয়ে কিছু খোঁচা দিলেন। আমার এমন ফেভারিট ব্যাপার নিয়ে কটুকাব্য সইতে না-পেরে সেই ডায়রীকে দিলাম অগ্নিবিসর্জন।
তবে চট্টগ্রাম থেকে আমার দুই বান্ধবী আমাকে চিঠির পর চিঠি লিখতো।
রোকেয়া হলে একবার চিঠি হারিয়ে গিয়েছিল। আমি অবর্ণণীয় কষ্ট পেয়েছিলাম তখন। এরপর থেকে চিঠি আসতো আমার ডিপার্ট্মেন্টে্র ঠিকানায়। ব্যাচ, নাম, রোল নাম্বার ধরে বিশাল বিশাল মোটা খামে চিঠি আসতো। এক পর্যায়ে প্রোগ্রাম অফিসার আমাকে প্রশ্ন করাও ছেড়ে দিলেন, এত কিসের চিঠি? আমাদের ক্লাসের সবার জন্যে খুব হাসির ব্যাপার ছহিল আমার চিঠি আসা-টা, আমাকে বেশ পচাতো এই নিয়ে।
তখন কি আর লেখার টপিকের কমতি ছিল? আজ প্রেম তো কাল ছ্যাঁকা, পরশু এক্সাম, তরশু ট্রেন জার্নি…কত্তো কী!!
একদিন যখন প্রেম হয়ে গেলো, লেখাটেখা কমে গেলো। এক্কেবারে সীমাবদ্ধ হয়ে গেলো চিরকুটের মত প্রেমপত্রের মধ্যে। ডায়রী লেখাটাও বাদ হয়ে গেলো, সেটা তো লিখেইছি।
চাকরি ছেড়ে দিলাম, ভাইয়ের ব্লগে গিয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম, বাহ, বেশ দারূণ প্ল্যাটফর্ম তো, লেখালিখি করার!!
আমার ভাই আর ব্লগ লিখেনা, কিন্তু আমি মাঝে মাঝে এখনও আজাইরা প্যাঁচাল পেড়ে যাই। লিখতে ভালই লাগে, তাই লিখি।
আমার লেখা পড়তে কার কেমন লাগে, সেটা ভাবতে গেলে তো আর লেখাই যাবেনা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।