বিভাগ পূর্ব ভারতে বাংগালি জাতির জন্য -বিশেষতঃ অবহেলিত এবং নিপীড়িত বাংগালি জাতির অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সবচে বেশি অবদান কার ? মহাত্মা গান্ধীর ? জিন্নাহর ? দেশ বন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের ? নেতাজী সুভাষ বোসের ? শেরে বাংলা ফজলুল হকের ? সোহরাওয়ার্দীর ? না। অত্যাচারিত ও শোষিত দরিদ্র বাংগালি এবং কৃষক শ্রেণির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সবচে বেশি অবদান রেখেছেন যে মানুষটি, তার নাম মওলানা ভাসানী- আবদুল হামিদ খান ভাসানী- আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট । শুনে অনেকের ভ্রু কুঁচকে যাচ্ছে বিস্ময়ে ? ইতিহাস ঘাঁটলে কিন্তু এই সত্য-ই ভেসে ওঠে।
নির্যাতিত বাংগালী জাতির অভিভাবকের দায়িত্ব মওলানা ভাসানী নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন কবে ? ১৯৭১ -এ ? ১৯৬৯-এ ? ১৯৪৭- এ? না, আরো আগে ? হ্যাঁ, ১৯২০-এর দশকে। বাংলার কৃষক সমাজের পক্ষে অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য জমিদাররা তাকে দেশ ছাড়া করে -মানে মওলানা ভাসানীকে বাংলা ছেড়ে আসাম মূলুকে চলে যেতে হয়।
সেই সময়ে জমিদারদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ময়মনসিংহের অনেক নিঃস্ব ও ভূমিহীন কৃষক এবং দরিদ্র বাংগালি জনগোষ্ঠি সেখানে চলে গিয়েছিল নতুন জীবনের আশায় । তখন এতে কোন আইনী বাধাও ছিল না; কারণ বাংলা এবং আসাম ব্রিটিশ সান্রাজ্যের অধীনে ছিল। আর এই দরিদ্র, নিঃস্ব বাংগালী কৃষকেরা কারো জায়গা -জমি ও দখল করেনি। তারা পতিত জমিতে বসত গেড়েছিল- হাতি ও বাঘের সাথে লড়াই করে। মওলানা ভাসানী সেখানে যেয়ে দরিদ্র বাংগালীদের বসতি স্থাপন করতে সাহায্য করেন।
কিন্তু বাংগালীদের সুখ কেন যেন অনেকের ভাল লাগে না । তাই এক-ই দেশের অধিবাসী হওয়া সত্বেও আসামের প্রভাবশালী বাবু এবং জমিদারেরা বাংগালিদের পেছনে লাগলো এবং আসাম হতে বাংগালীদের তাড়িয়ে দেয়ার জন্য 'বাংগালী খেদাও' আন্দোলন শুরু করলো। মওলানা ভাসানী এই শোষিত,নির্যাতিত বাংগালী এবং দরিদ্র অহমীয়াদের ( আসামের অধিবাসী) নিয়ে এই বাংগালী খেদাও প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুললেন। তখন তিনি ছাড়া আর কাউকে এই দরিদ্র,নির্যাতিত বাংগালি জাতির পাশে এসে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল কী ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।