প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম যতটা না হ্রাস পাচ্ছে তার চেয়েও বেশি নষ্ট হচ্ছে দিনদিন এর পরিবেশ । এক কথায় যদি বলি দিনদিন আরও বেশি নোংরা হচ্ছে । এর জন্য দায়ী কে বা কারা ? যদি বলি ভি.সি.?? প্রো-ভি.সি. ???,প্রক্টর ???? তাহলে তারা বলবেন – আমি কত না বেশি ব্যস্ত থাকি , কই পরিবেশ তো ভালই আছে । আমি আপনার জ্ঞ্যাতার্থে বলছি আপনি একটু খেয়াল করার সুযোগ পেলে হল ক্যান্টিন গুলো একটু ঘুরে যান, দোয়েল চত্বর থেকে জিমনেশিয়াম পর্যন্ত বাম পাশ একটু দেখুন ,শহীদুল্লাহ হল থেকে কার্জন হল পর্যন্ত রাস্তাটি, দোয়েল চত্বর থেকে টি.এস.সি. , টি.এস.সি. থেকে শাহবাগ, কার্জন হল এর গেইট থেকে শিক্ষা ভবন , অমর একুশে হল থেকে শহীদুল্লাহ হল, ঢাকা মেডিক্যাল এর ইমার্জেন্সি গেইট থেকে টি.এস.সি, টি.এস.সি থেকে বক্সীবাজাররের দিকের রাস্তা , আসুন একটু হাঁটি , দেখুন ছাত্র-ছাত্রীরা কিভাবে , কত কষ্টে চলা ফেরা করে , কত দুর্গন্ধ , কার(car) এ চলা ফেরা করলে অবশ্য এই গন্ধ পাওয়া যায় না, পরিবেশ খারাপ এটা অবলোকন করাও যায় না । রিকশা চালক, ড্রাইভারদের, বাইক চালক(বিশেষ করে পুরান ঢাকার) এদের প্রসাব পায়খানা করার ইচ্ছা জাগলেই ফিরে আসে ক্যাম্পাসে ।
আমরাও তাদের ভালোভাবেই আপ্যায়ন করি, আমাদের অনেক খালি জায়গা আসে তাদের প্রসাব,পায়খানা করতে দেয়ার জন্য। এটাতো কেবল রাস্তার কথা, এবার আসুন যাই ভবন গুলোর ভিতরে , ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরী, পাবলিক লাইব্রেরি, টি.এস.সি. ,মধুর ক্যান্টিন , সাইন্স লাইব্রেরীতে যারা কখনও প্রসাব বা পায়খানা বা হাত মুখ ধুইতে গেছেন তারাই জানে আমরা কতটা নোংরা পরিবেশে বাস করছি । এই দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ এ বাস করে আমরা যে কতটা ভাল আছি তা বিভিন্ন সময়ে দেয়াল এর দিকে তাকালেই চোখে পরে – একে বাঁচান, অমুক বাঁচতে চায়,ওকে বাঁচাতে এত লক্ষ টাকা লাগবে , এটা দিনদিন যে কতটা জ্যামিতিক হারে বাড়তেছে তা যারা হল এ থাকেন তারাই জানেন, রাত ১০-১১ টায় ছোট ভাইয়েরা দরজায় করা নাড়ছে ,ভাইয়া আসবো, আমাদের বন্ধু, ইয়ারম্যাট,বোন,বড় ভাইয়ের চিকিত্সার জন্য এত টাকার প্রয়োজন । এমনি করে একদিন অকালে ঝড়ে পরে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা । বিখ্যাত মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইবনে সিনা বলেছিলেন- ‘মানুষ যদি দুর্গন্ধ, ধূলোবালি মুক্ত পরিবেশে বাস করত তাহলে প্রতিটা মানুষ হাজার হাজার বছর বেঁচে থাকতো’ ।
আমাদের ভবিষ্যত কোন দিকে যাচ্ছে ????? লাইব্রেরি যেখানে মানুষ বিদ্যা অর্জন করতে যায় ,ক্যাম্পাস রাস্তা যেটা ছাত্র-ছাত্রীরা ব্যবহার করে ক্লাশ থেকে ক্লাশ এ যাওয়ার জন্যে তার যদি হয় এই করুন দশা । বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ এটাতো ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলা করার স্থান , এটাও যদি প্রায় সারা ভাড়া দেয়া হয় , তাহলে পড়াশোনার ফাঁকে অবসরে তারা কোথায় গিয়ে খেলাধুলা করবে ???? খেলাধুলাও যে শিক্ষার অংশ তা আমাদের শিক্ষকগণ যদি ভুলে যান তাহলে ????? তাহলে এই ছাত্র-ছাত্ররীদের কাছ থেকে জাতি কি আশা করতে পারে ???????? যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় থেকে দেখে বেশিরভাগ শিক্ষকদের কাছে এরা গাধার সমতুল্য , শিক্ষকদের বন্ধু সুলভ আচরণ তো দূরে থাক, ছাত্র-ছাত্রীরা দ শিক্ষকদের জ্ঞান সমদ্রের কাছে তারা এক বিন্দু জল ও না (কিছু শিক্ষকের ধারণা) । জাতি কি আশা করতে পারে ?????? আমরা কি খারাপ বা মেধাবী না হয়েই ভর্তি হয়েছি ???? না এখানে এসে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে মেধাশূন্য হচ্ছি ????
পরিশেষে বলতে চাই , এটা বলে কোন লাভ নেই , আমাদের কর্তৃপক্ষের এই সব ব্যাপার দেখার বা শোনার কোন সময় নাই , তারা ব্যস্ত বিভিন্ন টকশো, সাক্ষাৎকার ও অনুষ্ঠানের দাওয়ার নিয়ে । যদি আমরা আমাদের সোনার বাংলাদেশ পেতে চাই তাহলে ছাত্র-ছাত্রীদের কে সোনার ছেলে মেয়ে হওয়ার পরিবেশ দিতে হবে । কর্তৃপক্ষ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা নিয়ে দেশে থেকে থাকেন(অনেকে আবার দেশের বাইরে থেকেও বেতন পান যুগের পর যুগ) একটু নজর দিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে বিন্দু মাত্র পদক্ষেপ নেন আমার কষ্ট সার্থক হবে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।