একজন স্ত্রী আপনাকে দিতে পারে বিপদে শক্তি-সাহস, অসুস্থ হলে সর্বোচ্চ সেবা-যত্ন আর জীবনে যত ভালোবাসা আপনার প্রয়োজন তার সবটুকু...কিন্তু কোনোমতেই যৌতুক নয়।
এ কথাগুলো পাত্র-পাত্রীর সন্ধানদাতা একটি ভারতীয় ওয়েবসাইটের, যারা ফেসবুকে ‘অ্যাংগ্রি ব্রাইড্স’ শিরোনামে এমন একটি গেম ছেড়েছে যাতে যৌতুকলোভী পাত্রদের বেশূমার জুতো, চপ্পল, ঝাটা, পঁচা টম্যাটো আর বোতল মেরে মেরে পয়েন্ট অর্জন করতে হয় জেতার জন্য।
ফেসবুকে এই খেলা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে হিট লিস্টে চলে গেছে। এছাড়া টু্ইটারে এটা শীর্ষ দশে আছে।
এই খেলায় যৌতুকলোভী ৩টি চরিত্র আছে যাদের একজন ইঞ্জিনিয়ার, একজন চিকিৎসক ও অপরজন বৈমানিক।
এদেরকে যথক্রমে ১১ লাখ, ৩৫ লাখ ও ৪০ লাখ রুপীর প্রাইস ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। খেলোয়াড়দেরকে এইসব ‘যোগ্য-পাত্রদের’ মোকাবেলা করতে হয়।
এদের মোকাবেলায় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের জন্য খেলোয়াড়দের অস্ত্র-ভাণ্ডারে আছে মেয়েদের সুঁচোলো হাইহিল জুতো, চপ্পল, ঝাড়ু, বোতল, রুটি বেলার বেলুন আর টম্যাটোর মত মোক্ষম সামাজিক অপমানসুচক বস্তু। (কারণ কাউকে জুতো-চপ্পল-ঝাড়ু বা টম্যাটো ছূড়ে মারা হয় চরম অপমানের উদ্দেশ্যেই। )
যাহোক, ওইসব অসাধারণ অস্ত্র দিয়ে যৌতুকলোভী পাত্রদেরকে আঘাত করতে হয়।
প্রতি আঘাতের বিপরীতে খেলোয়াড়ের অ্যাকাউন্টে টাকা (নাম্বার) জমা পড়ে। এভাবে প্রতি হিটে ওই ১১ লাখ, ৩৫ লাখ বা ৪০ লাখ টাকার পাত্রের মূল্যমান কমতে থাকে। একইসঙ্গে অর্জিত পয়েন্ট খেলোয়াড়ের যৌতুক-বিরোধী ভার্চুয়াল ফান্ডে জমা পড়তে থাকে। নির্দিষ্ট সংখ্যক পয়েন্ট পাওয়ার পর খেলোয়াড় দ্বিতীয় লেভেলে পৌঁছে। এভাবে পরের লেভেলগুলো পার হতে হয়।
যৌতুকের কু-প্রথার বিরুদ্ধে জনসচেনতা তৈরির উদ্দেশ্যেই এ ধরনের গেমের প্রচলন করা হয়েছে বলে জানায় ওই পাত্র-পাত্রীর সন্ধানদাতা প্রতিষ্ঠান।
বলা যায়, ফেসবুকে অ্যাংগ্রি ব্রাইড্স নামে পাত্র-পাত্রীর সন্ধানদাতা প্রতিষ্ঠানটির যৌতুকের বিরুদ্ধে প্রতীকি এ প্রতিবাদ ও সচেতনতা বেশ সময়োপযোগী হয়েছে বলা যায়।
বাংলাদেশসহ অন্য অনেক দেশের মত ভারতেও যৌতুক দেওয়া-নেওয়া বেআইনী। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বিয়ের আগে পরে যৌতুকের অভিশাপে উন্নয়নশীল এমন কি উন্নত দেশগুলেতেও প্রতি বছর অসংখ্য নারীকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়।
ভারতের ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্যমতে ২০১০ সালে ভারতে যৌতুক দাবি সংক্রান্ত কারণে ৮হাজার ৩৯১ জন নারী খুন হয়েছেন।
এনসিআরবি’র একটি রিপোর্ট মোতাবেক যৌতুকের কারণে ভারতে প্রতি ৪ ঘণ্টায় একজন নারীকে জীবন দিতে হয়। ভারতে পুরুষ অনুপাতে নারীর সংখ্যা কমছে দ্রুত। মেয়ে ভ্রুণ হত্যাসহ অন্য অনেক কারণের সঙ্গে যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যাও এর একটি বড় কারণ। ২০১১ সালের আদম শুমারীতে দেখা গেছে- প্রতি ১০০০ পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যা ৯১৪ জন।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।