i`m what i`m. আমরা বেশ কয়েকটি ওয়াইড করেছি। রাজীব ভাই এক ওভারে ২০র মত রান দিয়েছেন( আসলে ২৪)। এগুলো দিন শেষে মনে হচ্ছে আমাদের টি টোয়েন্টি ম্যাচটা হারার কারণ। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত আমাদের বিরুদ্ধে গেছে। -বক্তা মুশফিকুর রহিম।
অধিনায়ক বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তার সম্পর্কে কথা বলতে গেলে কাছাকাছি একটা উদাহরণ আনা যায়। তার আগে একটু জেনে নেয়া দরকার মুশফিকুর রহিমের ব্যাটিংকে কি কেউ মিরর ইমেজে( উল্টোভাবে) দেখেছেন? আমার অভিজ্ঞতা বলে যারা এই পোস্ট পড়ছেন তাদের প্রায় শতভাগই সেটা করেননি। দেখলে বুঝতেন আইডল ব্রায়ান লারা-র সঙ্গে ডানহাতি মুশফিকের ব্যাটিং লিফট থেকে শুরু করে কাভার ড্রাইভে কত অদ্ভূত মিল! ডান হাতটাকে খালি বাঁ হাতির জায়গায় পাল্টাপাল্টি করে নিয়ে মানসচক্ষে দেখে নিতে পারেন। ক্রিকেটের ধ্রুপদী লয়ের সঙ্গে সুরে সুর মিলিয়ে অসুর বধের জন্য মুশফিকের মত চেয়ে দেখার মত ব্যাটিঙ এ মূহুর্তে বাংলাদেশ দলে খুব বেশি নেই।
লারা খালি হুক খেলতে গিয়ে বলটাকে তার ডান কাঁধের খুব কাছে আসতে দিয়ে নিজের দৈর্ঘ্যটা বাড়িয়ে নিতেন। এতে করে ধারাভাষ্যকারদের কাছ থেকে আউটস্ট্যান্ডিং শব্দটা ঘনঘন শুনা যেতো। এতোটাই মুগ্ধকর সেই হুক। মুশিফকের হুক বা পুলে পা ওপরে আসে না। কারণ প্রকৃতিগতভাবে তিনি খর্বকায়।
তার দিকে ধেয়ে আসা শর্টবলগুলোকে সামলাতে তার আলাদা দৈর্ঘ্যের দরকার হয় না।
কিন্তু লারা নন। মুশফিকের সঙ্গে ক্রিকেট মানসিকতায় মিল থাকতে পারে আরেকজন বাঁ হাতির। যার কাছে ক্রিকেট মানে বাইশ গজের মত বন্ধু তুমি শত্রু তুমির থিমটাকে মিথ্যে প্রমাণ করে দিয়ে কারগিলের ভারত--পাকিস্তান যুদ্ধের মতই। যে কারণে গৌতম গাম্ভীরের যে রণ মেজাজ তাতে ক্রিকেটটা যুদ্ধংদেহী ভঙ্গীতে খেলার জন্য মুশফিকের সঙ্গে তার অসাধারণ অন্ত্যমিল।
একমাত্র টি টোয়েন্টিতে হারার পর নিজের দোষ নিজের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। সেই সঙ্গে দোষ চাপিয়েছেন টিম ম্যানেজমেন্টের ওপরেও। বোলারদের যথেষ্ঠ সুযোগ দেয়ার পরও তারা কেনো পুরোটা উজাড় করতে পারছেন না সেটা নিয়ে একটু ক্ষোভ ঝড়েছে। বিষয়টাকে তিনি যে খুব ভালো ভাবে নেননি তা বোঝাই যাচ্ছে। দিনেশ চান্দিমালের কাছে নিজের রেকর্ড হারাতে দেখলে কারই বা ভালো লাগে? ২০১১তে নিজের অধিনায়কত্বের অভিষেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুন এক জয় এনে দিয়েছিলেন মুশফিক।
দু বছর পর দেখলেন বিশ্বের সবচেয়ে তরুণ অধিনায়ক চান্দিমাল একই কাজ করে দেখালেন বাংলাদেশের বিপক্ষে! একরোখা তিনি মোটেও নন। জেদী অবশ্যই। এবং সেই জেদের অংশ হিসেবে মনটাকে কখনো কখনো নিয়ন্ত্রণে না রাখার অভিযোগও আছে। সিলেট রয়েলস এবারের বিপিএলে একটা ম্যাচে খুব বাজে ভাবে হারের পর, হোটেল রিজেন্সীতে গিয়ে মুশফিকের তোপের মুখে এমন পড়াই পড়েছিল যে, পরের ম্যাচ জয় ছাড়া তাদের উপায় ছিল না। ঘটনায় প্রকাশ- তার বিকেএসপির অগ্রজজন থেকে শুরু করে অনুজপ্রতিম কেউ বাদ যাননি মুশফিকের বাক্যবাণ থেকে।
কারণ ইনজুরির জন্য মুশফিক ওই ম্যাচে ছিলেন দর্শকের ভূমিকায়। এই আক্রমণাত্মক মেজাজের সঙ্গে নাইমুর রহমান দুর্জয়ের সঙ্গে কোথাও কোথাও দারুন মিলও আছে তার। যদিও দুজনেই দু গ্রহের বাসিন্দা প্রায়।
শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথম বাঙলাদেশী হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি, আশরাফুলের ফিরে আসা বা নাসিরের এ স্টার ইন মেকিং টাইটেল পাওয়া-কোনটাই হ্যাঁ কোনটাই দাগ কাটেনি অধিনায়কের মনে। দিন শেষে তার কাছে সবচেয়ে বড় চাওয়ার জায়গাতেই অপূর্ণতা।
ব্যাটসম্যানরা কখনো কখনো জ্বললেও, বোলাররা বারে বারে নিভেছেন। আত্মপোলব্ধির জায়গাটা মুশফিকের মত জ্বলতে থাকা অধিনায়কের মুখ থেকে শুনবার পর মনেই হয়- শ্রীলঙ্কা সফরের সবচেয়ে বড় পাওয়া এটাই। ফলাফল নয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।