আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
হিথ্রোতে বাংলাদেশীদের সঙ্গে ভারতীয়-বংশোদ্ভূতদের অসদাচরণ অব্যাহত
লন্ডনের হিথ্রো এয়ারপোর্টে আমেরিকান পাসপোর্টধারী বাংলাদেশীদের হয়রানী ও নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা ফেরার পথে এই এয়ারপোর্টে ভারতীয়-বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন অফিসারের হাতে চরম নাজেহালের শিকার হয়েছেন আরেকজন আমেরিকান-বাংলাদেশী। বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্ক ফেরার পথে লন্ডনে এক সপ্তাহের স্টপ-ওভার নিতে আগ্রহী আমেরিকান পাসপোর্টধারী এই প্রবাসী বাংলাদেশীকে লন্ডন এয়ারপোর্টে ১৭ ঘন্টা আটকে রাখা হয়। আর এই হয়রানী ও নির্যাতনের মূলে ছিলেন ভারতীয়-বংশোদ্ভূত কয়েকজন ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন অফিসার। ১৭ ঘন্টা পরে এই বাংলাদেশী আমেরিকান মুক্তি পেয়ে ৭৫০ পাউন্ড বাড়তি দিয়ে নতুন টিকেট কেটে তাকে নিউইয়র্কে ফিরে আসতে হয়।
দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকান পাসপোর্টধারী বাংলাদেশীরা অভিযোগ করে আসছেন যে, হিথ্রো বিমান বন্দরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন অফিসাররা তাদের সাথে নানা ধরনের দুর্ব্যবহার করছেন। ভিসা দেওয়ার পর তাকে বসিয়ে রেখে সময় ক্ষেপন, নানারকম কটু মšত্মব্য, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশীদের আচার ব্যবহার নিয়ে ব্যঙ্গ করা ইত্যাদি এই ইমিগ্রেশন অফিসারদের নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছুদিন আগে এই ইমিগ্রেশন অফিসারদের একজন এক আমেরিকান পাসপোর্টধারী প্রবাসী বাংলাদেশীর আমেরিকান পাসপোর্টটি হাতে নিয়েই মšত্মব্য করেন, আমেরিকানরা আজকাল গরু-ছাগল সবাইকেই পাসপোর্ট দিচ্ছে!
তবে এর চেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গত ২৯ জুন। এই দিন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন অফিসারদের খপ্পরে পড়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন সিটির উডসাইড প্রবাসী বাংলাদেশী আমেরিকান মাহবুব আলম। এই ইমিগ্রেশন অফিসারের খামখেয়ালী ও দুর্ব্যবহারের কারণে একদিকে যেমন তিনি হিথ্রো এয়ারপোর্ট ও তৎসংলগ্ন ডিটেইনশন সেন্টারে ১৭ ঘন্টা অমানবিক মানসিক নির্যাতনের শিকার হন, অন্যদিকে তার এই ঘটনায় সময়মতো এয়ারলাইন্সকে অবগত না করতে পারায় তাকে পরে ৭৫০ পাউন্ড দন্ডি দিয়ে ডেল্টা এয়ারলাইন্সের টিকেট কিনে নিউইয়র্কে ফিরতে হয়।
মঙ্গলবার আজকাল অফিসে এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে মাহবুব আলম জানান, বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্ক ফেরার পথে লন্ডনে আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা করার জন্য এক সপ্তাহের স্টপ-ওভার নিতে গিয়েই তিনি এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন অফিসারদেও হাতে চরম হয়রানীর শিকার হন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত কয়েকজন ইমিগ্রেশন অফিসারের বাড়াবাড়ি ও দুর্ব্যবহার ও মানসিক নির্যাতনের করুণ কাহিনী বর্ণনা করে মাহবুব আলম দাবী করেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশী মুসলিম হওয়ার কারণেই ঐসব ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন অফিসাররা তাকে এই অমানবিক হয়রানী করেছে।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, মে মাসে তিনি নিউইয়র্ক থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে হিথরো বিমান বন্দরে ৬ ঘণ্টা স্টপ ওভার থাকাকালিন সেখানে বিমান বন্দরে থেকে ভিসা নিয়ে লন্ডনে আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা করেন। ঐ সময় ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত একজন ইমিগ্রেশন অফিসার কোনো প্রশ্ন ছাড়াই তাকে বিমান বন্দরে ভিসা প্রদান করেন।
কিন্তু গত ২৯ জুন তিনি ঢাকা থেকে বিমানে লন্ডন হয়ে নিউইয়র্ক আসার পথে সেখানে ৭ দিনের স্টেওভারের জন্য ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে ভিসার আবেদন করেন।
এ সময় ডেস্কে দায়িত্বে ছিলেন কয়েকজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন অফিসার। তারা তাকে আমেরিকান পাসপোর্টে ভিসাও দেন। কিন্তু তারপর এই পাসপোর্ট হতে ফিরিয়ে না দিয়ে বাংলাদেশীদের সম্পর্কে নানারকম কটুক্তি করতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে আরেকজন তদজাত ইমিগ্রেশন অফিসার সেখানে হাজির হয়ে মাহাবুবকে নানা প্রশ্ন করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে ঐ ইমিগ্রেশন অফিসার তার দু’জন সহকর্মীকে নিয়ে তার লাগেজের কাছে নিয়ে যান।
মাহবুবকে বলেন লাগেজ খুলে দেখাতে। একের পর এক লাগেজ পরীক্ষার সময় তারা বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশীদের নিয়ে নানা অসভ্য মšত্মব্য করতে থাকেন। লাগেজে জিনিসপত্র দেখে এমন মšত্মব্যও করে যে এই বাঙালীরা আসলে কিছুই শিখে না। এরা আজেবাজে জিনিস লাগেজে ভরে দেশ থেকে নিয়ে আসে।
এভাবে ঘন্টা খানেক লাগেজ চেক করার পর মাহবুব আলমকে নানা ধরনের অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন শুরু করে।
এক সময় এই ইমিগ্রেশন অফিসাররা মাহবুবকে বলে তার লাগেজ স্ক্যানিং করতে হবে। ডায়বেটিসের রোগী মাহবুব আলমকে দিয়ে সবগুলো লাগেজ আবারও কোনো মতো আটকে তারা স্ক্যানিং করতে নিয়ে যায়। কিন্তু স্ক্যানিং এ তেমন কিছু না পেয়ে আবার মাহবুব আলমকে আক্রমণাত্মক নানা ব্যক্তিগত প্রশ্ন শুরু করে। প্রায় ৪ ঘন্টা এভাবে পার করার পর মাহবুব আলমকে তারা জানায় তাকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে।
এ সময় মবহবুব বারবার নিজেকে ডায়াবিটিসের রোগী এবং অসুস্থ ও ক্ষুধার্ত জানানোর পরও তাকে ঐ ইমিগ্রেশন অফিসাররা কোনো সহানুভূতি দেখাননি।
এক পর্যায়ে একজন কালো মহিলা এয়ারপোর্ট নিরাপত্তাকর্মী মাহবুবের অনুরোধে তাকে এক কাপ কফি এনে দেন। পরে তাকে ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থানরত আরো কয়েকজন বাংলাদেশী তাকে সাধ্যমত সহায়তা প্রদান করেন।
মাহবুব আলম, জানান,হিথ্রো বিমানবন্দরে তার সাথে আরেক বাংলাদেশীকেও এই ইমিগ্রেশন অফিসারদের তিনি হয়রানী করতে দেখেন। বাংলাদেশীদের প্রতি নানারকম অসভ্যতাপূর্ণ মšত্মব্যসহ ‘বাংলাদেশীরা ভদ্রতা জানে না’ ইত্যাদি মšত্মব্য করতেও তিনি শোনেন।
ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশী কয়েকজন ব্যক্তিও তাকে জানান, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইমিগ্রেশন অফিসাররা লন্ডনের ভিসা থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে লন্ডনে ঢুকতে না দিয়ে ডিটেনশন সেন্টারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠিয়েছেন।
ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানোর আগে এই ইমিগ্রেশন অফিসাররা তাকে দেওয়া ভিসা বাতিল করেন। রাতে তাকে ডিটেনশন কেন্দ্রেই আটকে রাখা হয়। সকালে সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এজেন্টরা তাকে সামান্য জিজ্ঞাসাবাদ করার পর নিরাপদ ঘোষণা করে নিউইয়র্কে চলে যাওয়ার কথা অনুমতি দেন।
সিটির উডসাইডের অধিবাসী দীর্ঘ ১৫ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মাহবুব আলম বলেন, লন্ডন হিথ্রো বিমান বন্দরে বিনা কারণে তাকে যে হয়রানী করা হয়েছে সে ব্যাপারে তিনি তার এলাকার কংগ্রেসম্যানসহ অন্যান্য আইন-প্রণেতাদের অবহিত করবেন।
তিনি বলেন, আমি চাই না আমার মতো আর কেউ এমন দুর্ব্যবহারে শিকার হোক। একজন আমেরিকান হিসাবে আমেরিকার পাসপোর্ট নিয়ে কেউ কটু মšত্মব্য করবে এর বিহিত হওয়া জরুরী।
সাপ্তাহিক আজকাল
স্থানীয় সময় : ২২১৬ ঘণ্টা, ৫ জুলাই ২০১৩
Click This Link
*****************
২০১০ সালের জানুয়ারী মাসে হাসিনা দিল্লী গিয়ে কি কি শর্তে চুক্তি করছে তা দেশবাসীতো দুর দেশের সংসসদকেও জানানোর বিন্দুমাত্র গ্রাহ্য করেনি। তাই কমুদিনীর মত বেসরকারী সংস্থা আগ বাড়িয়ে ভারতের সাথে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের দুঃসাহস দেখায়। এই দেশের মধ্যে দিয়ে ভারত কি করবে না করবে তাও বাংলাদেশীদের কোন পরোয়াই করেনা ভারত।
ভাবখানা এমন আমরা ভারতের কোন অঙ্গরাজ্য। তাই আমাদের কথায় কি আসে যায়। এর আগে বাংলাদেশের এক মন্ত্রী ভারতীয় মন্ত্রীর সাথে দেখা করতে গেলে তাকে মদের বারে নিয়ে কূটনৈতিক আলাপের চেষ্টা করা হয়। অথচ এটা অসম্মানজনক। কিন্তু কোন বারই বাংলাদেশ তথা হাসিনার সরকারের তরফ থেকে তেমন কিছু বলা হয়েছে কিনা জানা নেই।
নিজেদের মর্যাদা ও স্বার্থ বিকিয়ে ভারতকে সুবিধা দেক না কেন ভারত আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এই কারণেই যুক্তরাজ্য সহ বিশ্বের বহু জায়গায় ভারতীয়রা বাংলাদেশের মানুষদের অবজ্ঞা করে। হিথ্রোর ভারতীয় বংশোদ্ভুত অসভ্য-বর্বর ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের কত বড় দুঃসাহস যে মার্কিন পাসপোর্ট ধারী বাংলাদেশীদের গরু ছাগল বলে। তারপরেও আমাদের তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ভারতের পা ধুয়ে পানি পান করতে পারলে নিজেদের জীবনকে ধন্য মনে করবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।