[ বহুদিন ব্লগে থেকেও আমার পোস্টের সংখ্যা হাতেগোনা। আমার যে কোনো বিষয়ে না-জানা এবং কুঁড়েমেই এর প্রধান কারন। এর জন্য মাফ চাই।
খুব অল্পসংখ্যক সিনেমা সংগ্রহ করে ও তার চেয়েও অল্পসংখ্যক সিনেমা দেখে রিভিউ - কার হওয়ার সাধ জাগল।
আর যা-খুশী-তাই লেখার সাধ পূর্ন করার জন্য এই পোস্ট]
সব সিনেমারই একটা করে ৩ ডি ভার্সন বেরোচ্ছে আজকাল।
তবে তার মধ্যে কিছু সিনেমার ট্রেলার দেখলে মনে হয় - "এটা ৩ ডি তেই দেখা উচিত!" সে রকম একটা ট্রেলার দেখি "তুমি নল" - এ নভেম্বর মাস নাগাদ।
সিনেমাটার নাম ছিলো - "The Adventures of Tintin"।
IMDB তে দেখলাম Spielberg এর ডিরেকশন। তার ওপরে "Motion capture technology" ব্যবহার হয়েছে।
[Motion capture এর মাধ্যমে আসল অভিনেতাদের দিয়ে অভিনয় করিয়ে তার ফুটেজ নিয়ে সেটাকে ২ ডি বা ৩ ডি মডেলে ম্যাপ করা হয়।
যাতে গোটা ফুটেজটা Animation এর Look and feel পেয়ে যায়। ]
আগ্রহ আরো বাড়ল। সিনেমাটা USA এর ৬ হপ্তা আগে ভারতে মুক্তি পায়।
আনন্দ পাবলিসার্শ কে অনেক ধন্যবাদ ছোট্টবেলা থেকে টিনটিন আর তার অন্যান্য চরিত্রগুলোর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ায়। সময় বের করে একদিন গেলাম বাড়ির কাছের এক মাল্টিপ্লেক্সে যেখানে ৩ ডি তে সিনেমাটি চলছিল।
বাংলায় প্রকাশিত "বোম্বেটে জাহাজ" আর "লাল বোম্বেটের গুপ্তধন" এর গল্প জুড়ে এর স্ক্রিপ্ট লেখা হয়েছে। হ্যাডক ছাড়া টিনটিন অনেকটাই ম্যাড়ম্যাড়ে। তাই টিনটিনের সাথে হ্যাডকের পরিচয় পর্ব দেখানোর জন্য "কাঁকড়া রহস্যের" কিছুটাও দেখানো হয়েছে।
জনসন - রনসন এর অতি ব্যবহারে স্ক্রিপ্ট ক্লিশে হয়ে যাওয়ার একটা ভয় ছিলো যেটা Moffat - Wright এর পরিমিতি বোধ কাটিয়ে দেয়।
হ্যাডকের পুর্বপুরুষ তার কিছু অর্জিত সম্পদ লাল বোম্বেটের খপ্পর থেকে বাঁচিয়ে লুকিয়ে রাখেন।
তার সুত্র গোপন থাকে তিনটি খেলনা জাহাজের মাস্তুলে যার হদিশ পেয়ে যায় লাল বোম্বেটের এক উত্তরসূরী (সাখারিন)। টিনটিন হ্যাডকের সাথে মিলে সাখারিনের কবল থেকে গুপ্তধন দুরে রাখতে উঠেপড়ে লাগে। আ্যাডভেন্চারের গাড়ি তড়তড়িয়ে এগিয়ে চলে। নিয়ে চলে ক্যাপ্টেন, টিনটিন আর কুট্টুশ কে দেশ থেকে দেশে। টিনটিনের সাথে দৌড়তে থাকি আমরাও।
রুপকথার রাজ্যের ক্যামেরার কাজ আমাদেরকে নিয়ে চলে বাজ পড়া কালো মেঘের মাঝে, সমুদ্রের নীল ঢেউয়ের মাথায়, ধুধু মরূভূমির বুকে। আসল অভিনেতা আর আ্যানিমেশনের মাঝের সীমানা কখন মিলে মিশে যায় তা বোঝার সময় পাওয়া যায় না। মনে হয় হার্জের তুলিই যেনো ছবি এঁকে চলেছে রূপোলী পর্দায়, সাদা কাগজের বদলে।
সিনেমার শেষে কোথায় যেনো মনের মধ্যে হার্জে আর স্পিলবার্গ এক হয়ে যায়। একজন নিজের সৃষ্টির মাধ্যমে অমর হয়ে গেছেন।
বিশ্বব্যাপী টিনটিনকে দৌড় করিয়েও তার সৃষ্টি অনেক দেশের (পড়ুন আমেরিকা) কাছে আজও অচেনা। আর দ্বিতীয় জন যেনো তার স্বপ্নটাকেই বাঁচিয়ে দিলেন নতুন ভাবে। দিলেন পরিচিতি এক নতুন দুনিয়ার যেখানে সিনেমা শুধু ব্যবসার মাধ্যম নয়, যেখানে সিনেমা অনেকের শিশুবেলাকে নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়া, ফিরিয়ে দেওয়া তাদেরকে জিবনের সবচেয়ে নির্মল সময়গুলো আরেকবার - হোকনা সেটা ২ ঘন্টার জন্য!!
[পুনশ্চ - এই ব্লগের অনেক স্বনামধন্য মুভি - খোরের পোস্ট আমার অনুপ্রেরনা। তাদের নাম আমি নিতে চাই না কারন হীরে সব সময় নিজের দ্যুতিতেই উজ্জ্বল। আমি আমার মুভি রিভিউ পোস্টের কিছু বিশ্লেষন তাদের কাছ থেকেও কমেন্টাকারে পেলে গর্বিত হব।
] ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।