মুভি ক্রিটিক ব্লগ (প্রথম বাংলা মুভি ব্লগ) ★★★★★ © ২০০৭ - ২০১৩ ওয়েবসাইট: www.saifsamir.com
মুভি গাইড: কি দেখবেন, কি দেখবেন না
সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেখা মুভিগুলোকে রেটিং দিলাম, সঙ্গে রিভিউ। যা আপনাকে মুভি নির্বাচনে সহায়তা করবে। ইংলিশ মুভি তো আছেই, হিন্দি ও বাংলা মুভিও থাকছে। নতুন মুভির পাশাপাশি কিছু পুরনো মুভিও আছে, কয়েকটি আবার পুনরায় দেখা।
প্রথমেই রেটিং ভাষাটা একটু জেনে নিন:
৫/৫- মাস্টারপিস/মাস্ট সি
৪/৫- অসাধারন/খুব ভালো
৩/৫- ভালো/এভারেজ
২/৫- হতাশাজনক/দূর্বল
১/৫- বাজে/না দেখলেও চলবে
এবার দেখা যাক কোন মুভির কি অবস্থান:
::সেপ্টেম্বর::
ইংলিশ-------
জাম্পার: ২/৫
অহেতুক লাফালাফি।
গল্পের কি ছিরি!
জুনো: ৫/৫
অসাধারণ চিত্রনাট্য। এলেন পেজের অসাধারণ অভিনয়। অসাধারণ মিউজিক। অসাধারণ পরিচালনা। এক কথায় 'অ-সা-ধা-র-ণ' মুভি!
হ্যারি পটার অ্যান্ড দি চেম্বার অফ সিক্রেটস: ৫/৫
হ্যারি পটার অ্যান্ড দি গবলেট অফ ফায়ার: ৪.৫/৫
হিন্দি-------
গো: ২/৫
সাধারণ কিছু ফর্মূলা জুড়ে দিয়ে মুভি বানানোর প্রচেষ্টা।
শুধু নিশা কোটারির অ্যাপিয়ারেন্স দিয়ে তো আর দর্শকদের মন জয় করা যাবে না, ভালো গল্পও চাই।
আমির: ৪.৫/৫
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা। মুসলিম হওয়ার যন্ত্রণা। চমৎকার মুভি।
নতুন ডিরেক্টর রাজ কুমার গুপ্ত এক কড়া বাস্তব জগৎ তুলে এনেছেন।
আর নতুন অভিনেতা রাজীব খান্দেলওয়াল সেই জগতের আতঙ্কিত চরিত্র।
বাংলা-------
মেড ইন বাংলাদেশ: ২.৫/৫
মুভির শুরুটা হচ্ছিল ভালোই। জাহিদ-রোজীর চমৎকার কেমেস্ট্রি। কিন্তু প্রথম ২৫ মিনিট প্লটকে সংহত করতে সাহায্য করেনি। হঠাৎ করেই যেন শুরু হয় আরেক কাহিনী।
স্টোর-কিপারের সদ্য চাকরি নিয়ে মানিকগঞ্জে যাচ্ছে যে জাহিদ হাসান সে হঠাৎ রতনপুর এসে মঞ্চস্থ করলো জিম্মি নাটক। ভয়ংকর চেচামেচি- কান ঝালপালা! শহীদুজ্জামান সেলিমের অভিনয় ভালো হয়েছে। কিন্তু পুরো মুভিটাই হয়েছে দারণ অগোছালো, ঘটনাস্থল-লোকেশনে গরমিল, বাজে সাউন্ড, দূর্বল এডিটিং, কাহিনীর হঠাৎ উত্থান- হঠাৎ পতন! ফারুকীর সস্তা বিনোদন পণ্য! (জানি অনেকে গোস্বা করবেন!)
রানী কুঠির বাকী ইতিহাস: ২/৫
সাবেক নিউজ প্রেজেন্টার সামিয়া জামানের প্রচেষ্টা। দৃশ্যায়ন-চিত্রগ্রহণ ভালোই, আরো ভালো হতো যদি কাহিনী বিন্যাসে ভিন্নতা থাকতো। এই মুভির শেষ দৃশ্যটা সামিয়ার কাছে গর্বের হলেও আমার কাছে যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ।
ফেরদৌস তার বৌকে চিৎকার দিয়ে ডাকছে কিন্তু বৌ তার খুব দূরে না হয়েও শুনতে পারছে না! আবার ফেরদৌস একই কক্ষের একটার পর একটা দরজা খুলে বৌকে খুঁজছে- যা হাস্যকর!
অন্তর্যাত্রা: ৩/৫
ঠিক ফিচার মুভি বলা যায়? গতিহীন, পরিণতিহীন, সাসপেন্সবিহীন গল্পটা মুভির ছলে কেবল ম্যাসেজ দিতে ইচ্ছুক। উওম ডকুমেন্টারির বৈশিষ্ট্য।
::অক্টোবর::
ইংলিশ-------
সাইলেন্ট হিল: ৩/৫
হরর ফিল্ম। গেম থেকে মুভি। রহস্যের সমাধান করতে হবে এখানেও।
পি.এস. আই লাভ ইউ: ৩.৫/৫
পোস্ট-লাইফ রোমান্টিক ড্রামা। ইমোশনাল। অনেকেরই ভালো লাগবে।
দি লাস্ট লিয়ার: ৪/৫
ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত ইংরেজি ভাষায় বলিউড মুভি। গুড স্টাফ।
হিন্দি-------
জানে তু ইয়া জানে না: ৪/৫
পুরনো প্লট। কিন্তু উপস্থাপনায় নতুনত্ব। আর আছে এ.আর.রাহমানের জাদুকরী মিউজিক। ভালোলাগায় ভরপুর। মুভির শেষ দৃশ্যে অদিতির (জেনেলিয়া) গেটআপ-মেকআপের অতোটা পরিবর্তন না হলেই ভালো হতো।
মিশন ইস্তানবুল: ২/৫
গতানুগতিক হিন্দি অ্যাকশন মুভি। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে একটি টিভি চ্যানেলকে দেখানো হয়েছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের হেডকোয়ার্টার হিসেবে!
বাংলা-------
আলো (ইন্ডিয়ান বাংলা): ৪/৫
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে নির্মিত হৃদয় ছোঁয়া ছবি।
ব্যাচেলর: ২.৫/৫
আমার দেখা সবচেয়ে অপরিকল্পিত, অগোছালো ডিরেক্টর মোস্তাফা সরয়ার ফারুকীর প্রথম দিকের কীর্তি। যার মুভি দেখতে গিয়ে এক পর্যায়ে অসহিষ্ণু হয়ে উঠতে হয়। কিন্তু তিনি যদি আরেকটু মনোযোগী হয়ে আরেকটু গোছালো, পরিচ্ছন্ন, পরিকল্পিত হতেন হয়তো আমার কমেন্টও ভিন্ন হতো।
দারুচিনি দ্বীপ: ৩.৫/৫
চমৎকার। অবশ্য কয়েকটি ত্রুটি চোখে পড়েছে ঠিকই। যেমন আনুশকার বাবার ছবি আনুশকার বেডরুমে এমনকি তারা যে ড্রইং রুমে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলো সেখানে থাকলেও আনুশকার বাবাকে চিনতে পারেনি আনুশকার বান্ধবীরা- যা অযৌক্তিক! আরেকটি দেখুন, বল্টু যে চার লাইনের গানটি লিখেছিল সেটি তার বান্ধবীরা আগে না শুনলেও দেখা যায় শেষ দুই লাইন তারা বল্টুর আগেই গেয়ে ফেলেছে! রিটেকের ফসল আরকি! তারপরেও একটি উপন্যাসের উন্নত চিত্ররূপের জন্য তৌকির আহমেদকে থ্যাঙ্কস।
রূপকথার গল্প: ৩.৫/৫
ভিন্ন ধাঁচের বাংলা মুভি। পরিচালনায় সাহসিকতার ছাপ।
কিন্তু টাইটেলটা কি অন্য কিছু হতে পারতো না? দৃশ্য মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধানে আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিল, যেন বেখাপ্পা না লাগে। যা হোক, একজন তুখোড় অভিনেতা তৌকির আহমেদ একজন ভালো পরিচালক হয়ে উঠছেন। তার কাছে আমাদের প্রত্যাশা বাড়ছে। কিন্তু লজিকাল ভুলগুলো যেন তৌকিরের পিছু ছাড়ছে না। রাতে বাস স্ট্যান্ডে যখন চঞ্চল বাচ্চা কোলে বসে আছে তখন পুলিশের গাড়ী তার এমন দূরত্বে এসে থামলো যেন চঞ্চল একটা বাচ্চা চুরি করে এখানে বসে আছে তা তারা আগে থেকেই জানতো! আসলে তা নয়।
আবার চঞ্চল যখন বাচ্চাটাকে ভ্যান গাড়ীর ওপর রেখে লেকে গোসল করতে নামল তখন ভ্যান গাড়ী চালক তার গাড়ীটি টেনে নিয়ে যাবার আগে নিশ্চিতভাবেই বাচ্চাটিকে চোখে পড়ার কথা কিন্তু তা হয়নি! তার কি দোষ বলুন ডিরেক্টর শিখিয়ে দিয়েছিলেন যে! বড় অস্বাভাবিকতা এই যে, জুয়ায় সর্বস্ব খুইয়ে মাতাল ট্রাক ড্রাইভার যখন তার হেলপার মেয়েটিকেও তার জুয়ার সাথীদের কাছে বির্সজন(?) দিলো তখন মেয়েটি কেন নিজেকে বিনা প্রতিবাদে সমর্পণ করলো? পরিচালক কি বলবেন-'অভিমান করে'? কিন্তু একজন মদে বেহুঁশ মানুষের উপর অভিমানের মূল্য কিসে! তাছাড়া অভিমান করে নারী তার জীবন দিতে পারে (যেমন রবীন্দ্রনাথের 'শাস্তি' গল্পে) কিন্তু কখনো তার সম্ভ্রমকে সজ্ঞানে লুণ্ঠিত হতে দিতে পারে কি? এমনকি কারো প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেও কি পারে?
হ্যাপি মুভি টাইম!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।