সম্পর্কের শিরোনামহীন………………
নামক গতকাল এনটিভিতে প্রচারিত একটি নাটক বা টেলিফিল্ম দেখলাম। গল্পটি ছিল একটি ছেলে ও একটি মেয়ের ৫-৬ বছর সম্পর্কে পর তারা পালিয়ে বিয়ে করবে।
যেদিন তারা বিয়ে করবে সেদিন খবর আসল ছেলেটির বাবা অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। এদিকে মেয়েটিও বাড়ি ছেড়ে চলে আসছে, সে বান্ধবিদের কাছেও থাকতে রাজি না। কোন উপায় না দেখে ছেলেটি মেয়েটিকে তার এক বন্ধুর বাসায় দুই দিনের জন্য রেখে তার বাবাকে দেখতে গেল।
দুই দিন পর খবর এল ছেলেটির বাবা মারা গেল।
মেয়েটি আর কয়েকদিন ছেলেটির বাসায় রয়ে গেল। এই কয়েকদিনে মেয়েটি তার প্রেমিকের বন্ধুর প্রেমে পড়ে গেল। মেয়েটি একদিন তার প্রেমিকের বন্ধুকে বলল ছেলেটির জন্য তার কোন মায়া কাজ করেন না।
তারপর ছয়দিন পর ছেলেটি ফিরে আসলে মেয়েটি তাকে ফিরিয়ে দিল।
তারপর মেয়েটি যে বন্ধুর বাসায় ছিল তার সাথে তার সম্পর্ক হল।
এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে ৫-৬ বছরের একটি ভালবাসার সম্পর্ক কিভাবে ৫/৬ দিনে বদলে যায়। যদি প্রেম, ভালবাসা, মায়া, বিশ্বাস না থাকে তাহলে কিভাবে ৫/৬ বছর একটি ছেলে ও মেয়ের মাঝে সম্পর্ক থাকে। বুঝতে পারি নাই এখানে পরিচালক কি বুঝাতে চেয়েছেন। আর এসব নাটক থেকে আমরা যুব সমাজও কি শিখছি।
যেখানে একটি ছেলে তার বন্ধুকে বিশ্বাস করে তার হবু স্ত্রীকে তার কাছে রেখে গেলেন। যেখানে ছেলেটি তার হবু স্ত্রীকে তার নিজের থেকে বেশি বিশ্বাস করে রেখে গেল, সেখানে মেয়েটি কি ভাবে তার বিশ্বাসের অসম্মান করল।
এসব গল্প গুলো কি আমাদের অবিশ্বাসী, ধোঁকাবাজ, প্রতারক হতে শিখাচ্ছে না ? আমাদের অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও বাস্তব জীবনে আমরা এসব দেখতেছি। কেউ কেউ কিছু দিন তার সাথে সংসার করে তাকে আর ভাল লাগে না। অন্য একজনের প্রেমের হাবুডুবু খেয়ে, কয়েক বছরের পবিত্র স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ছিন্ন করছেন।
এই নাটকে একটি মেসেস প্রচার করা হয়েছে। তা হচ্ছে “নিজের প্রয়োজনে যা কিছু করা তা পুর্ণ্য” । নিজের প্রয়োজনে বিশ্বাসঘাতকতা করা, মানুষ খুন করা, পরকিয়া করা, প্রতারনা করাও কি পূর্ণ্য ? মানুষ তো সব কাজ নিজের প্রয়োজনে করে, তাই বলে কি খারাপ কাজ গুলোও কি পূর্ণ্য হয়ে যায়?
আমাদের বতর্মান সমাজে এমনিতে ধষর্ণ, ইভটিজিং, পরকিয়া, বিবাহ-বিচ্ছেদ, বেড়ে যাচ্ছে। ছেলে মেয়েদের মাঝে বয় ফ্রেন্ড, গার্ল ফ্রেন্ড পরিবর্তনের প্রবনতাও দিন দিন বেড়ে চলছে।
নির্মাতাদের কাছে একটা অনুরোধ এমন কিছু নির্মান করবেন না, যেগুলো আমাদের সমাজের অবক্ষয়ের কারণ হয়ে দাড়ায়।
বরং এমন কিছু নির্মাণ করেন যা দেখে আমাদের সমাজ অবক্ষয় থেকে মুক্ত হতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।