আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুরঞ্জিতও দেশপেরমিক তাই এতিম স্কুলের বরাদ্দ থেকে তিন কোটি টাকা ঘুষ দাবি!

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ তিন কোটি টাকা ঘুষ না দেয়ায় নিজ সুপারিশ ও তদবিরে বরাদ্দ হওয়া অর্থ ফের বাতিলের চিঠি দিলেন ‘কালো বিড়াল খ্যাত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এ ঘুষ চাওয়া হয়েছে নিজ বাড়ির পাশের এতিমদের একটি স্কুলের কাজে। স্কুলটির নাম ‘বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমি, দিরাই’। এতিম ও অসহায় পরিবারের মেয়েদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে এখানে শিক্ষাদান ও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। চাঞ্চল্যকর ঘুষ কেলেঙ্কারির এ নালিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানিয়েছে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার। এতিমদের এ স্কুলের অর্থ বরাদ্দ ও স্থগিত রাখার ঘটনা জানতে গিয়ে দেখা যায়, শুরুতে অর্থ বরাদ্দের জন্য জোর সুপারিশ করেছেন দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। আবেদনপত্রে নিজ হাতে ‘বিশেষ বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা গেল’ লিখে পাঠিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, শিক্ষা সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে। লবিংও কম করেননি। এত চেষ্টার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের নানা ঘাট পেরিয়ে ১০ কোটি টাকার কর্মসূচি প্রস্তাব অনুমোদন হয়।

সুখবরটি জানাতে সুরঞ্জিতের বাসায় ছুটে যান বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমির সভাপতি জামিল চৌধুরী। খবরটি জানানোর সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রী বললেন, ‘এত টাকা দিয়ে কি করবে, আমাকে তিন কোটি টাকা দিয়ে দাও। অন্যান্য স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাকে যেতে হয়, তাদের অনুদান দিতে হয়। ’ অভিযোগে বললেন একাডেমির সভাপতি জামিল চৌধুরী। তিনি জানান, আমি প্রথমে মনে করেছি মন্ত্রী ফান করছেন, পরে দেখি তিনি সিরিয়াসলি টাকা চাচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে দ্বিতীয়বার তার বাসায় বৈঠক করি। তখনও তিনি একই কথা বলেন। সর্বশেষ বৈঠকে মন্ত্রীর স্ত্রী, ছেলে ও ছেলের বউও ছিলেন। সবাই মিলে মন্ত্রীকে অনুরোধ করলেন এতিমদের স্কুলটির জন্য সহযোগিতা করতে। সুরঞ্জিতের সাফ কথা—তিন কোটি টাকা না দিলে তিনি বরাদ্দ বাতিল করে দেবেন।

তখন এতিমদের স্কুলের টাকা থেকে তিন কোটি টাকা দেয়ার বিষয়ে আমরা একমত হতে পারলাম না। আর ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় সমুদয় অর্থ বরাদ্দের আদেশ বাতিলের জন্য গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর শিক্ষামন্ত্রীকে ডিও লেটার পাঠান মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ওই ডিও লেটারের ওপর ভিত্তি করে আটকে যায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলাধীন বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমির ভবন ও হোস্টেল নির্মাণ কর্মসূচি। সুরঞ্জিতের ডিও লেটারে যা আছে : গত ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে একটি ডিও পাঠান। এর শিরোনাম দেয়া হয়—আমার নির্বাচনী এলাকা- ২২৫, সুনামগঞ্জ-২’র দিরাই উপজেলার ফিমেল একাডেমির অনুকূলে বরাদ্দ করা অর্থ উক্ত প্রতিষ্ঠানের বদলে এলাকায় বিদ্যমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের অনুকূলে সমতার ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ, অন্যথায় উক্ত সমুদয় অর্থ বরাদ্দের আদেশ বাতিলকরণ প্রসঙ্গে।

ডিওতে বলা হয়েছে, আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, আমার নির্বাচনী এলাকাটি (২২৫-সুনামগঞ্জ-২) দিরাই-শাল্লা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি ভাটি এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখানে চারটি কলেজ, প্রায় ২৭-২৮টি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ৭-৮টি মাদরাসা রয়েছে। কিছু পুরাতন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উনবিংশ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে প্রচুরসংখ্যক ছাত্রছাত্রী এসব প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে।

সরকারের বিশেষ আনুকূল্যে এ অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে, এলাকায় বিদ্যুতায়নও হয়েছে। বস্তুত সম্পূর্ণ স্থানীয় উদ্যোগ ও শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীদের ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত উল্লিখিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত সুনামের সঙ্গেই শিক্ষাদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি একটি বৈষম্যমূলক আর্থিক অনুদান/সহায়তা এক্ষেত্রে কুঠারাঘাত হেনেছে। এতে বলা হয়েছে, আমি জেনেছি যে, সম্প্রতি দিরাই উপজেলার ‘ফিমেল একাডেমি’ প্রতিষ্ঠানটির নামে সরকারি-বিদেশি বিভিন্ন খাত থেকে প্রায় ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ নেয়া হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে এলাকাবাসী বা জনপ্রতিনিধিরা কিছু জানেন না বিধায় সেটির বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহও নেই।

এটির কার্যক্রমও রহস্যময় কুয়াশায় ঘেরা। উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে এত বিপুল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি স্থানীয় বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দারুণ বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা আর স্থানীয় জনগণের পরিশ্রম এবং অনুদানে প্রতিষ্ঠিত এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের বিল্ডিং ছাড়া অদ্যাবধি উল্লেখযোগ্য কোনো সরকারি সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়নি। সেখানে হঠাত্ করে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে এত বিপুল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি সবাই বৈষম্যমূলক বলে মনে করছে। এ অবস্থায় বিবেচ্য বরাদ্দ করা অর্থ এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে সমতার ভিত্তিতে বরাদ্দ দেয়া হলে সৃষ্ট বিক্ষোভ প্রশমনের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আমি মনে করি।

এটি সম্ভব না হলে সম্পূর্ণ বরাদ্দ বাতিল করাই শ্রেয় হবে। জনস্বার্থে বিষয়টি বিবেচনার দাবি রাখে। এ বিষয়ে আপনার ও শিক্ষা সচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং ওই আলোকেই এ পত্রটি পাঠিয়েছি। এমতাবস্থায় উপযুক্ত বর্ণনার আলোকে জনস্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে আমার নির্বাচনী এলাকা ২২২-সুনামগঞ্জ-২’র দিরাই উপজেলার ‘ফিমেল একাডেমি’র অনুকূলে সরকারি-বিদেশি বিভিন্ন খাত থেকে বরাদ্দ করা অর্থ ওই প্রতিষ্ঠানের বদলে এলাকায় বিদ্যমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে সমতার ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রদান, অন্যথায় সমুদয় অর্থ বরাদ্দের আদেশ বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ডিও লেটারের আলোকে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলাধীন ‘বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমির ১৫০ আসনবিশিষ্ট শ্রেণীকক্ষ ভবন ও ১৫০ শয্যার ছাত্রীনিবাস নির্মাণ’ শীর্ষক কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

গত ৯ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখার সহকারী প্রধান মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে বলা হয়, এ কর্মসূচির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। বরাদ্দের জন্য দেয়া ৪টি আবেদনেই সুপারিশ ছিল সুরঞ্জিতের : ২০১০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বিশেষ বিবেচনায় দেশের একমাত্র ফ্রি এতিম আবাসিক বিদ্যালয় বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমির ছাত্রীদের জন্য ৩০০ আসনের হোস্টেল ও ক্লাস কক্ষ নির্মাণের আবেদন জানানো হয়। এরই মধ্যে সাবেক কেবিনেট সেক্রেটারি এম আবদুল আজিজ ওই স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে মুগ্ধ হন। স্থানীয় জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমির ছাত্রীদের জন্য ১৫০ সিটের হোস্টেল এবং ১৫০ সিটের ক্লাসরুম নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে শিক্ষা সচিবকে চিঠি দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। চিঠিতে জানানো হয়, জামিল চৌধুরীর পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টায় দেশের গরিব, এতিম ও গৃহহীন মেয়েদের জন্য বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমি নামে একটি অবৈতনিক আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

২০০৬ সাল থেকে চার একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটিতে প্রথম শ্রেণী থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ১৬০ জন ছাত্রছাত্রী, ২০ জন শিক্ষিকা ও কর্মচারী রয়েছেন। দরিদ্র, এতিম ও অসহায় মেয়েদের শিক্ষদানে প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার পাশাপাশি অন্য কর্মসূচিতেও সুনাম অর্জন করেছে। ২০১০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি কেবিনেট সেক্রেটারি ওই প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমি একটি আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলেও পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রেণীকক্ষ ও ছাত্রবাসের অভাবে এ প্রতিষ্ঠানের দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। এমন অবস্থায় ১৫০ আসনের ছাত্রাবাস এবং ১৫০ আসনের শ্রেণীকক্ষ নির্মাণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। এর আগে ২০০৯ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমির প্যাডে প্রতিষ্ঠানটির জন্য হোস্টেল নির্মাণের অর্থ চেয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়। তাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তার সুপারিশে ‘মহোদয়ের বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা গেল’ শিরোনামের একটি কথা লিখে সুপারিশ করে দেন। এরপর ২০১১ সালের ৯ মে অর্থমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিব এবং ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেন্টের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে আলাদাভাবে চিঠি দেন ফিমেল একাডেমির সভাপতি জামিল চৌধুরী, যাতে লেখেন ‘বিশেষ বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা গেল’।

এরপর থেকে এ কর্মসূচিটি নতুন মাত্রা পায়। বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমির প্রস্তাবটি কর্মসূচি আকারে গ্রহণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখা থেকে ১১ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে এ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। ওই শাখার সহকারী প্রধান মোহাম্মদ মেহেদী হাসান স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমি দেশের গরিব, এতিম, গৃহহীন মেয়েদের প্রথম শ্রেণী থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষাসেবা দিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

অতিদরিদ্র-অসহায় মেয়েদের আবাসিক সঙ্কট দূরীকরণসহ মানসম্পন্ন শিক্ষাদানের উদ্দেশে ওই প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ছাত্রাবাস এবং শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ প্রয়োজন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে। এর আলোকে এ কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। জানুয়ারি ২০১২ থেকে জুন ২০১৩ মেয়াদে কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ পর্যায়ে কর্মসূচিটি অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের জন্য নির্দেশক্রমে এতদসঙ্গে প্রেরণ করা হলো।

’ অর্থ বিভাগের সচিবের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ২০১১ সালের ২৮ ডিসেম্বর অর্থ বিভাগের রাজস্ব বাজেট থেকে কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এক নম্বর এজেন্ডায় ‘সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলাধীন বাংলাদেশ ফিমেল একাডেমি (বিএফএ) ১৫০ আসনবিশিষ্ট শ্রেণীকক্ষ ভবন ও ১৫০ শয্যার ছাত্রীনিবাসের নির্মাণ কাজ’ শীর্ষক কর্মসূচিটি ছিল। ওই সভায় এটি অনুমোদন পায়। এরপর অর্থ ছাড়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়।

এরই মধ্যে লেনদেনের বিষয়ে সুরাহা না হওয়ায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ডিও দিয়ে কর্মসূচিটি বন্ধ করে দেয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বারের নালিশ : এ ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর চিঠি লেখেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মুকিম আহমেদ, ডিরেক্টর জেনারেল এম আর চৌধুরী ও ফিন্যান্স ডিরেক্টর মুহিব ইউ চৌধুরী। এর আগে ২০১২ সালের ২৮ জুলাই লন্ডনে চেম্বার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হলে তিনি দেশে ফিরে গিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে তাদের প্রতিশ্রুতি দেন। বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হয, ‘The delegation from british chamber of commerce met you on 28th of july in London and presented the necessary papers regarding the project, when you assured that you will see the matter personally.’ চিঠিতে সুরঞ্জিত সেনের ঘুষ দাবির কথা তুলে ধরে বলা হয়, Firstly the Budget Management Committee (BMC) of Education Ministry has approved the BFA Building project on 20/10/2011, Then the Money Release Committee of Finance Ministry approved on 28/11/2011 to release money for the said project and start the building work for the academy, but an influential cabinet member of the Government of the People’s Republic of Bangladesh, is trying to obstruct the project work because he wants a share to the grant money. Initially he was supporting the project work and gave his support to the Education Ministry. Unfortunately, now he is desperately trying to obstruct the release of the grant. The Education Ministry has already recorded his objection. শুধু প্রধামন্ত্রীকেই নয়, অনুরূপ চিঠি দেয়া হয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের লেবার দলীয় এমপি রুশনারা আলী, বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, শিক্ষা সচিব, ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশন বরাবর। এ বিষয়ে ফিমেল একাডেমির সভাপতি জামিল চৌধুরী আমার দেশ-কে বলেন, আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম এতিম শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম ও ছাত্রীনিবাসের জন্য।

এখান থেকেও ঘুষ চাইলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। কত টাকা ঘুষ চেয়েছেন—জানতে চাইলে জনাব চৌধুরী বলেন, তিন কোটি টাকা। মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাকে অনেক টাকা অনুদান দিতে হয়। তাই বরাদ্দের টাকা থেকে তাকে তিন কোটি টাকা দিতে হবে। দাদার সঙ্গে আমরা পাঁচবার দেখা করেছি।

এতিম বাচ্চাদেরও নিয়ে গেছি, তারপরও তার মনে একটু দয়ার সঞ্চার হয়নি। বৌদি (মন্ত্রীর স্ত্রী), উনার ছেলে ও ছেলের বউও অনেক অনুরোধ করেছেন, কিন্তু তিনি কোনো কথাই শুনতে রাজি হননি। জামিল চৌধুরী বলেন, স্কুলটি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের গ্রামের বাড়ি থেকে মাত্র এক মাইল দূরে। তিনি একাধিকবার এ স্কুলে প্রধান অতিথি হয়ে গেছেন। আমরা দাদাকে এ-ও বলেছি, ছাত্রীনিবাসটি আপনার নামে নামকরণ করব।

তারপরও টাকাটা পাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি কিছুই শুনলেন না। চিঠি দিয়ে এতিমদের স্কুলের টাকা বন্ধ করে দিলেন। এ প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে এলাকাবাসী বা জনপ্রতিনিধিরা কিছু জানেন না এবং এটির কার্যক্রমও রহস্যময় কুয়াশায় ঘেরা বলে মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আবেদনপত্রে নিজ হাতে ‘বিশেষ বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা গেল’ লিখে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পাঠিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, শিক্ষা সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে। টাকা পাওয়ার জন্য অনেক লবিংও তিনি করেছেন, আবার বরাদ্দ পাওয়ার পর তিনিই বাতিলের জন্য চিঠি লিখেছেন।

এটির কার্যক্রম রহস্যময় কুয়াশায় ঘেরা হলে তিনি অনুদানের জন্য সুপারিশ করলেন কেন? সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বক্তব্য : এ ব্যাপারে দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মুঠোফোনে আমার দেশ-কে বলেন, তিন কোটি টাকা ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি সর্বৈব মিথ্যা। আমার এলাকায় ৩৬-৩৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। অথচ একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এত বিপুল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় বিবেচ্য বরাদ্দ করা অর্থ এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে সমতার ভিত্তিতে বরাদ্দ দিয়ে সৃষ্ট বিক্ষোভের প্রশমনের সুযোগ সৃষ্টি করতে বলেছি আমি। Click This Link *********** আবুল হোসেন যদি পদ্মা সেতুর জন্য কানাডিয়ান কন্সালটেন্সি কোম্পানি এসএনসি লাভালিন হতে শত কোটি টাকা ঘুষ চেয়ে হাসিনার কাছে দেশপ্রেমিক হন, তখন সুরুঞ্জিত বাবু কেন তা হবেন না? অবশ্যই সুরুঞ্জিত সেনগুপ্তও একজন দেশপ্রেমিক....কারও এই বিষয়ে সন্দেহ আছে কি!  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।