আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্প : ঢাকা যেদিন নিউইয়র্ক হয়ে গিয়েছিলো

দুই সপ্তাহের ছুটি নিচ্ছো? -হুম কই যাবা? -ফ্লোরিডা সেটা আবার কোন দিকে? কতদুর? কতদুর বলে ছেলেটা ভাবনায় পড়ে যায়। সে অনেক দুর চলে যায়। অনেক দুর। ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম পেরিয়ে কক্সবাজার। না,তারও বেশি।

টেকনাফ। এই ভাবনার পথ যেতেও ছেলেটার অনেক সময় লাগছে। মেয়েটি জবাব দেয়,নিউ ইয়র্ক থেকে ৩০ ঘন্টা লাগে ড্রাইভ করে গেলে। ছেলেটার ভাবনা ভেঙ্গে যায়। ছেদ পড়ে।

সে টেকনাফ থেকে ফিরে আসে। কক্সবাজার চট্রগ্রাম পেরিয়ে ফিরে আসে যে পথ দিয়ে গিয়েছিলো সে পথ ধরেই। সে ভাবতে চায়। ৩০ ঘন্টার পথ কতদুর? সে কখনো এতদূরে যায় নি। ৩০ ঘন্টার পথ পাড়ি দেয় নি।

তাই বোঝে না ৩০ ঘন্টা পার হতে হলে ঠিক কোথায় যেতে হয়? কোন শহরে শেষে পৌঁছতে হয়? ২. মেয়েটা যাবে ফ্লোরিডায়। মেয়েটার আবেগ উচ্ছাস ছেলেটারও ভিতরেও সক্রমিত হলো। সে ডিজনিল্যাণ্ডে যাবে। ইউনিভার্সাল ষ্টুডিও দেখবে, মায়ামি বীচে যাবে। ছেলেটা সবই দেখার চেষ্টা করে।

ডিজনিল্যাণ্ড ভাবতে চায়। তার সামনে শিশু পার্ক চলে আসে। ইউনিভার্সাল ভাবতে চায়। তার সামনে বাংলাদেশের এফডিসি নামক একটা জায়গার প্রধান ফটক চলে আসে। মায়ামী বীচ অনুভব করতে চায়।

সে আবারো ফিরে যায় কক্সবাজার। মেয়েটার সাথে সংযোগ ঘটে এমন কোনো ভাবনা আসে না ছেলেটার। তার ভাবনার জগৎ আটকে যায় পাসপোর্ট ভিসা আর না দেখা পৃথিবীর বেড়াজালে। ৩. মেয়েটা আজ চলে যাবে। ছেলেটা ফোনে শেষ খবর পেয়েছে।

সে রেডি হচ্ছে। ছেলেটা বিছানায় বসে আছে। তার বসে থাকার ভঙ্গিটা অদ্ভুত। বাংলাদেশের নাটকে দেখা যায় এমন দৃশ্য। সে কোন অসহায় স্বামীর মত বসে আছে।

তার পাশে যেন কোনো মেয়ে বাবার বাড়ি চলে যাবার জন্য ব্যাগ গোছাচ্ছে। এতে ছেলেটার মন খারাপ সেটা দেখে। ছেলেটা বোধহয় শক্তিহীন হয়ে পড়ছে। মানুষের খুব বেশি মন খারাপ থাকলে শরীর অসাড় হয়ে পড়ে। ছেলেটার তাই হচ্ছে।

সে শুয়ে পড়েছে। হঠাৎ ফোন। ছেলেটা ধরছে না। ফোন বাজছে। রিংটোন হিসেবে গান বাজছে।

ছেলেটা ধরছে না। হঠাৎ ধরলো। রিংটোন হিসেবে গান থাকায় ছেলেটা রিং শেষ হবার আগেই ধরে ফেললো। ও পাশ থেকে কি যেন বলছে। ছেলেটা এপাশ থেকে বললো, বের হচ্ছো? আবার ওপাশ থেকে কিছু একটা বললো।

ছেলেটা এপাশ থেকে বললো, ঠিক আছে যাও। ভালো থেকো। ছেলেটা আর কিছু বলতে পারলো না। হয়তো বলারও কিছু নেই। ছেলেটার মন খারাপ।

আগের চেয়ে একটু বেশি হয়েছে। চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে। ছেলেটা বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় গিযে দাঁড়ায়। তার সামনে ঢাকা শহর। অনেক কোলাহলের ঢাকাকে কেন জানি আজ ফাঁকা ফাঁকা মনে হচ্ছে।

খালি খালি মনে হচ্ছে। তার ভাবনায় আসলে তার সামনের এই বিস্তৃত শহরটা ঢাকা হয়ে ধরা দিচ্ছে না। তার কাছে এটা নিউইয়র্ক হয়ে গেছে। যে শহরে মেয়েটা নেই। সে সামনে তার চেনা ধানমণ্ডি, শাহবাগ দেখতে পাচ্ছে না।

তার সামনে এখন নিউইয়র্ক...ম্যানহাটন। তার সামনে এখন জ্যাকসন হাইটস। এই নামগুলো সে মেয়েটার কাছ থেকে শুনেছিলো। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.