আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনু-দর্শন/এম আমির হোসেন

এইতো! **নির্বোধ বিতর্কের চেয়ে মৌনতা সম্মানজনক। বোধ কখনো শিরাপথে প্রবেশ করানো যায় না, বিতর্কেতো নয়ই। ইহা সহজাত। **আপনি কালকের জন্য এত বিচলিত! আজকের কথা কিছু ভেবেছেন কি? **আমাদের দেশে ‘কম খারাপ’ মানেই ‘ভাল’। আমি কম খারাপের অপেক্ষায় থাকি।

**সমগ্র বাংলাদেশ একটি ঘুমের বিছানা। আমি প্রতি দুপূরে অনেক ঘুমন্ত মানুষকে হাটতে ও হাসতে দেখি শাহবাগের মোড়ে, ফার্মগেটে…। তবে বাঙ্গালির ঘুম একবা্রের মত ভেঙ্গেছিল নয় মাসের জন্য, একাত্তরে। তারপর আবার ঘুম। **আমি অনেক ভেবে দেখলাম যে, এত ভাবনার কিছু নেই! **ভুলতে পারা একটি গুণ।

যে যত ভুলতে পারে সে তত সুখী হয়। **মূলধারা দর্শণ থেকে বের হয়ে একজন সক্রেটিস তৈরী হয়, কিন্তু মূলধারা রাজনীতি থেকে বের হয়ে একজন রাজনীতিবিদ ডক্টর কামাল হোসেনে পরিনত হয়! **প্রচলিত ধারনাকে সন্দেহ করার মাধ্যমেই প্রকৃত জ্ঞান অর্জন সম্ভব। অবোধ বাঙ্গালী পুরুষ শুধু বউকেই সন্দেহ করতে শিখল, হায়! **গণতন্ত্র মানে সকল মানুষের এক চিন্তা নয়, বরং সকল চিন্তার এক সহনীয় সহাবস্থান। **সম্পর্ক একটি জটিল রসায়ন যার জন্য স্বতঃস্ফূর্ততা ও চর্চা থাকা লাগে। শুধু ঔচিত্যবোধ ও নৈতিকতার উপর ভিত্তি করে সম্পর্ক টিকে থাকে না।

**সব মানুষের বুক পকেটে একটি আকাশ থাকা দরকার। উড়ার জন্য পাখাও থাকা চাই। **কোন কোন সুখের চেয়ে কোন কোন দুঃক্ষ বেশী সুখকর! **আপনি আজ যা নিয়ে বিচলিত পাঁচ বছর পরে তা’ মনে নাও থাকতে পারে। **সুখই সত্য, তবে শাশ্বত সুখ বলে কিছু নেই। পৃথিবীতে ‘শাশ্বত’ শব্দটি ছাড়া আর কোন কিছুই শাশ্বত নয়! তবুও আমাদের সুখের পিছনেই ছোটা উচিত।

**কূপমন্ডুক বন্ধু থাকার চেয়ে চতুষ্পদী বন্ধু থাকা ভাল। **মানুষের সম্ভাবনা ক্রমশ সংকুচিত হয়। জন্মের পর আমার ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, দারোয়ান কিংবা উকিল হবার সমান সম্ভাবনা ছিল। এখন শুধুমাত্র ডাক্তারি ছাড়া আর অন্য কিছু করা অসম্ভব আমার জন্যে। তাই সুখী হতে হলে বর্তমানকে ভালবাসুন।

কি হলে কি হতে পারতাম তা’ ভাবা বিরাট বোকামি। এটা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে বিয়ে করার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। **প্রেম হচ্ছে কামের শিল্পিত প্রকাশ। আজকাল অনেক ‘সম্পর্ক’ দেখি, শিল্পিত প্রেম দেখি কই? **‘মহৎ মৃত্যু’ নির্বোধ তারুন্যকে উস্কানি দেয়ার দর্শণ। এর মধ্যে মতান্ধতা ও হীন রাজনীতি রয়েছে।

মহৎ মৃত্যুর কথা কিছু স্বার্থবাদী মানুষের প্রচার। আমি মনে করি, যৌবন হওয়া উচিত নির্মল আনন্দের ও জীবনবাদী। আমি ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে। **অর্থনৈতিক কারনে সকল প্যারাডক্সের সৃষ্টি। আমরা ডিভি লটারিতে মনোনীত হতে চাই, পাশাপাশি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরোধীতা করি।

**গরুর চেয়ে গরুর মাংস বেশি উপাদেয়। **নারী ও গাড়ি’র মধ্যে ছন্দ মিল ছাড়াও আরো মিল রয়েছে। আপনি সঠিক ভাবে চালালে তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন, উলটাপালটা চালালে একসিডেন্ট নিশ্চিত। দু’টোর জন্যই ব্যাপক তেল প্রয়োজন। **এমবিবিএস পাশ দিলেই ছাত্রজীবন শেষ হয়না।

প্রকৃত জ্ঞানী মানুষ আজীবন ছাত্র থাকে। **আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়, বিবেক তার অধ্যাপক। **পুরুষ আসলে রজঃশ্রাববিহীন শক্ত নারী। **বাঙ্গালি মূলতঃ অলস জাতি। শারিরীক ভাবে যতটা অলস তারচে’ বেশি অলস মানসিকভাবে।

বাঙ্গালি চিন্তাশীল জাতি নয়, উল্টো চিন্তা-বিদ্বেষী। চিন্তার জগতে দীনতা দেখে আমার প্রায়শঃই বাঙ্গালি জাতির ভবিষ্যত নিয়ে দুঃচিন্তা হয়। **এই মাটিতে নিরেট দর্শন নির্ভর রাজনীতি অসম্ভব। আমি অনেক যুবককে দেখেছি, দর্শন ও রাজনীতিকে এক করতে যেয়ে পংকিলতায় নিজের সম্ভাবনাসহ পিছলে পড়তে। স্বপ্নের প্রতিমাকে তাঁরা আবেগে ও অজ্ঞানে বিসর্জন দিচ্ছে দেখে আমি হতাশ হয়েছি।

তাঁদের সৎ আবেগ ও দেশপ্রেমকে আমি শ্রদ্ধা করি। তবুও বলি, নির্ভেজাল দর্শন ও আবেগ দিয়ে রাজনীতি হয় না, বাংলাদেশেতো নয়ই! **আমরা মাঝে মাঝে আনন্দের জীবন কাটাই, মাঝে মাঝে বেদনার। তবে আমরা মূলতঃ অভ্যস্ত জীবন কাটাই। **আমি বাঙ্গালি, আমি বাংলাদেশি। আমি ‘বাংলাদেশি বাঙ্গালি’।

গতকাল আমি আমার এক বাংলাদেশি চাকমা বন্ধুর সাথে অনেক গল্প করলাম। আমাদের পরিচয় নিয়ে সংকট নেই। **পৃথিবীতে কোন কাংখিত গতির রিকশা নেই। আপনি তাড়াতাড়ি চাইলে আস্তে চলে, ধীরে চাইলে জোড়ে চলে। আমাদের আকাঙ্ক্ষার সাথে গতির মিল নেই! **সমাজতান্ত্রিক দর্শন একটি বস্তুবাদী দর্শন।

কিন্তু আমাদের অধিকাংশ সমাজতন্ত্রী মূলতঃ ভাববাদী। এখানেই বড় প্যারাডক্স! তবে এটা সত্য যে, আমাদের দেশ ও সমাজ নির্মাণে এই দর্শন ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। সমাজতন্ত্রের প্রভাব না থাকলে ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’ কখনোই ‘আওয়ামী লীগ’ হতো না, শুধু ‘মুসলিম লীগ’এ পরিনত হতো আর ‘মুসলিম পাকিস্থান’ ভেঙ্গে ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ হতো না। বঙ্গবন্ধু এটা ভালই বুঝতেন। তাই তিনি বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতিতে জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্রের পাশাপাশি সমাজতন্ত্রকেও রেখেছিলেন।

**নারী মানসিকতার বাঙ্গালি জাতির একমাত্র পুরুষোচিত অর্জন একাত্তর। **নারী মাত্রই কিঞ্চিত উৎপাতকারী, নখরামীপূর্ণ এবং হেঁয়ালি। তারপরও মনে করি নারীই আমাদের সবচে’ ভাল বন্ধু। নারী মমতাময়, সরল, মাতৃভাবাপন্ন এবং প্রেমময়। নারীহীন পৃথিবীর রাজা হওয়ার চেয়ে নারীময় পৃথিবীর সামান্য প্রেমিক প্রজা হওয়াও ঢের ভাল।

**পৃথিবীর সব স্ত্রীই মনে করে, তাঁর স্বামী বোকা কিন্তু ভাল! এবং শুধুমাত্র তাঁকে স্ত্রী হিসাবে পেয়েছে বলেই রক্ষা, না হলে এতদূর আসা সম্ভব হত না! আমি স্ত্রী’দের এই নিষ্পাপ আত্মতৃপ্তিতে দোষের কিছু দেখি না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।