*****
আত্মীয়তা খুঁজি দূরগাঁয়ে, দূরদেশে
আর যাদের সঙ্গে আদর্শিক ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক দাবি করি,
তারা তাদের পরিবারের সঙ্গে না-ই বা নিলো জড়িয়ে,
অচেনা অতিথি হিসেবেও যদি মর্যাদা দিতো !!--
শ্রম, মেধা, অর্থ, এতকাল যত দিয়েছি এবং আজও দিচ্ছি,
তার চেয়েও মূল্যবান সম্পদ, আনন্দঘন সময়,-
উপভোগ্য কর্মময় জীবন থেকে সরিয়ে নেওয়া সুবর্ণ সময়,
উজার করে ঢেলে দিতে কার্পণ্য করিনি।
এমনকী, জীবনের ঝুঁকি নিয়েও, চূড়ান্ত ভক্তিভরে
ব্যভিচারী অকৃতজ্ঞদের বিলাসবহুল জীবনধারায় রসদ জুগিয়ে এসেছি।
স্বেচ্ছায় বুঝে যেমন দিয়েছি, স্বেচ্ছায় না-বুঝেও দিয়েছি,
বড় মাপের সুনিশ্চিত লাভকে নিশানায় রেখে, অনেক কিছুই দিয়ে এসেছি।
দেওয়ার বিনিময়ে যা’ কিছু পেয়েছি, ভিখারিরা যেভাবে যেমন পায়,
তাদের চৌহদ্দির বাইরে ঘৃণিতভাবে দাঁড়িয়ে নগদে যা’ পেয়েছি দূরদেশে,
--কোনো অংশে কোনো অপদস্থ ভিখারির প্রাপ্তির চেয়ে বেশি নয়।
ব্যয়ের পূরোটাই ভবিষ্যতে বহুগুণে ফিরে পাবার বিশ্বাসেও দৃঢ়বিশ্বাসী নই,
বরং, এখানে স্বগোষ্ঠীর সামনে ফষ্টি দেখানোটাই ছিল আমার উদ্দেশ্য।
নিষ্ঠাবানের চেষ্টা এ জগতে যায় না বিফলে, যদিও এমন ধার্মিক বিশ্বাসে
কখনোই বিশ্বাসী নই, তবুও সফলতা পেয়েছি, একনিষ্ঠ চেষ্টায় আমি ঠকিনি।
বিচ্ছিন্নভাবে অনেকেই আছে, আমাকে জানে, তবে সমন্বিত নয় আমার ঐ শত্রুরা,
কোনো একজন আমার ধ্বংস চাইলেই, ওদের অন্য সকলে তার বিপক্ষে দাঁড়ায়,
শোনো হে বিশ্বাসীরা, তোমাদের মাধ্যমে ওরা যেন জ্ঞাতিহিংসামুক্ত না-হয়,
প্রতিবেশীদের সাথে তোমাদের কারো ওঠাবসা এখানে চরম ঝুঁকিময়।
পূণ্যভূমি সফরের খেতাবটা সগর্বে জুড়ে নিয়েছি আমার নামের শুরুতে,
মঞ্চের প্রধান আসনটা সসম্মানে দখলে পেতে যতটুকু ব্যয়, তোমাদের মাধ্যমে,
তোমরাই সাথে থেকে দেখেছো, বাণিজ্যিক বাস্তবতায় ঠকিনি আমি।
ওহে আমার বিশ্বাসী ভক্তরা, তোমাদের দৃঢ় দলবদ্ধতার মূল্য তোমরা পাবে,
তবে তোমাদের কারো মধ্যে প্রতিবেশীপ্রীতি আমার জন্যে মহাঝুঁকিময়।
তোমাদের প্রতিবেশীরা প্রকাশ্যে সমাজবদ্ধ, আড়ালে তারা আত্মকোন্দলিত।
প্রতারণা আর প্রবঞ্চনার ভোগান্তি বরাদ্দে নিয়ে ওরা বিচ্ছিন্ন থাকবে যতক্ষণ,
মঞ্চের প্রধানের আসনটা ততক্ষণই আমার জন্যে সংরক্ষিত থাকবে, এবং
আগের মতোই চালু থাকবে আমাদের গোপন কারবার, আড়ালে অন্ধকারে,
আর তোমরাও থাকবে সুরক্ষিত, গণরোষ থেকে নিরাপদে, দিনের আলোতেও।
ওহে আমার দলবল, নিত্য স্মরণে রেখো,
কেবল অস্ত্রধারীর সাথেই পেরে ওঠা যায়,
ভুলেও নিরস্ত্রকে আঘাতের ঝুঁকি নিয়ো না,
ওরা ক্ষমতাবান, তাই নিরস্ত্র, ওদেরকে তোমরা যখন দেখবে সমন্বিত,
--ভুলেও দয়ায় পাওয়া তোমাদের ঐ শক্তি প্রদর্শনের ঝুঁকি নেবে না।
তোমরা ধ্বংস হতে না-চাইলে ভুলে যেয়ো না,--
সীমিত তোমাদের সকল শক্তিবল, নিত্যাধুনিক সমস্ত কৌশল, মারাত্মক দুর্বল,
সমন্বিতদের সামনে ওগুলো বিক্ষিপ্ত উড়ন্ত তুলোর মতোই, মনে থাকে যেন।
যদি যথর্থেই আমার অনুসারী হতে চাও তো প্রতারক হওয়ার বিকল্প নেই,--
জেনে রেখো, আত্মসম্মান আর লজ্জাবোধ পুষলে কেউ মুনাফিক হতে পারে না।
চোরাকারবারি যদি চালিয়ে যেতে না-পারি, তোমরাও তো টিকবে না হে,
এমনিতেই দু’হাজার কুড়ি পর্যন্ত টিকবো কি-না, ঘন গণসংযোগে!!--
হয়তোবা ষোলোতেই চূড়ান্ত সংকটে পড়তে যাচ্ছি, সম্ভাব্য শুরু যার তেরোতে,
প্রতিবেশীদের সঙ্গে তোমাদের কারো মেলামেশা আমি সহ্য করবো না।
নিকট-প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখাতে আমার তীব্র আপত্তি, অথচ,
নিজেকে সমাজের একজন বলে বলে কীভাবে চিৎকার চেঁচামেচি করি,
তাতেই শেষ নয়, সুন্দরতম আদর্শের অনুসারী হিসেবে অজ্ঞদের সামনে
নিজেকে কীভাবে প্রদর্শন করিয়ে সফলতা পেয়েছি তোমাদের মাধ্যমে,
তোমাদেরকে দেখিয়ে দিতে পেরে আমি গর্বিত।
কীভাবে তোমাদের প্রতিবেশীরা নিজেরাই ঠকে, তোমরা নিশ্চয়ই দেখেছো।
তোমাদের মূর্খ মহল্লাবাসীগণ নির্দ্বিধায় আমার বসনভূষণেই আকৃষ্ট হয়ে
সহজেই তারা পেতে দেয় আমাকে মহামান্য মহাজনের সর্ব্বোচ্চ আসন।
যথার্থেই আমি সার্থক সফল মুনাফিক, তোমাদের সহযোগিতা পেয়ে ধন্য,
এখানে আমার হাতিয়ার, তোমাদেরকে আমি ধন্যবাদ দিতে পেরে আনন্দিত।
তোমরাই নিকটতম সাক্ষী, তোমরাই আমার অনুসারী, সফলতা পেতে চাইলে,
নিত্য স্মরণে রেখো, --আত্মসম্মান আর লজ্জাবোধকে প্রশ্রয় দিলে
কেউ কখনোই প্রতারক হতে পারে না।
রঙ্গপুর : ২৯/১১/২০১১
করণিক : আখতার ২৩৯
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।