আগাগোড়া ভদ্র ছেলে। অন্যায় কর্মকাণ্ড একদমই পছন্দ করি না। সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখি
ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেখানে কয়েক ঘণ্টায় ফলাফল দেয়া সম্ভব, সেখানে পিএসসি দীর্ঘ দিন সময়ক্ষেপণ করে গতকাল ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফলাফল প্রকাশ করেছে। ফলাফল ঘোষণায় কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অকৃতকার্য প্রার্থীরা। তারা বলেন, ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭০ থেকে ৭৫ নম্বর পেলেও সাধারণ প্রার্থীদের পাস করানো হয়নি।
কিন্তু কোটাধারীদের ৫৪ থেকে ৬০ নম্বরের মধ্যেই পাস করানো হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, অনেকে ভালো পরীক্ষা দিয়ে পাস না করা এবং তুলনামূলক কম ভালো পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ পরীক্ষায় শুধু যাদের মুক্তিযোদ্ধা কোটা আছে তাদেরকেই উত্তীর্ণ করা হয়েছে। পাশাপাশি পদধারী ছাত্রলীগ প্রার্থীদের পাস করিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
প্রাথমিক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এরকম নজিরবিহীন অনিয়ম ও বৈষম্যের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ ও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে তরুণ প্রজন্ম।
ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় বইছে।
সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ৩৪তম বিসিএসের ফলাফল নিয়ে কিছু প্রতিক্রিয়া
ফেসবুকে Syed Tarik Hossain লিখেছেন, প্রিলিতে আমাদের অনেকে ৮০+ কারেক্ট করে টিকে নাই, আর এদিকে নাকি ৬২ তে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় টিকাইছে!! এ এক আজব জাতি, কিভাবে কাউকে সম্মান দিতে হয় এরা জানেনা। মুক্তিযোদ্ধারা কি এসব সুবিধা নিতে দেশ স্বাধীন করেছিল???
Alam বলেছেন, ৩৪তম বিসিএসের প্রিলির ফলাফল সুস্পষ্টভাবে সংবিধান ও মানবতাবিরোধী। মামলা করলেই তা বাতিল হয়ে যাবে।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, জীবনের শেষ বিসিএস-এ প্রথমবারের মতো প্রিলিতে ফেল করলাম।
কোথাও কোনো সমস্যা করেছি হয়তো। ৭৭ পেয়ে ফেল করব একবারও ভাবিনি। চাকরির বয়স আর কয়েক মাস থাকলেও এসময়ে আর বিসিএস পাবার আশা নেই। আগ্রহটাও কেন জানি আগের মতো নেই। সামনের মাসে শেষ বারের মতো বিসিএস ভাইভা দিয়ে হয়তো নিজেকেই বলব-
‘না পাওয়ার সব হিসেব করে
জীবন কি আর চলে?
বিসিএস তোমায় দিলাম ছুটি,
কাব্য চর্চা ছেড়ে বিদেশের পানে ছুটি’
Zinia Tabassum Epshita লিখেছেন, বিসিএস প্রহসন : আওয়ামীগের পতনের অন্যতম কারণ হবে:::
Pranab Chowdhury লিখেছেন, বৈষম্যের তোপানলে পুড়ে আমি অঙ্গার।
কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। পাস করে বের হতে হতে বয়স শেষ। এবারই ছিল শেষ বিসিএস। মা বাবা বিসিএস বলতে অজ্ঞান। মা বাবা ফোন দিয়েই বলে “বাবা এবার কিন্তু বিসিএস হতেই হবে, ভালো করে পড়াশুনা কর।
” পড়াশুনা তো কম করিনি। মা বাবাকে কথা দিয়েছিলাম মা তোমরা টেনশন করোনা, এবার আমার বিসিএস হবে। আমি কথা রাখতে পারিনি। মা বাবাকে কি বলবো তার ভাষাও খুজে পাচ্ছিনা। তাদেরকে আমি কিভাবে বুঝাব- মা এখানে অনেক বৈষম্য, আমাকে ক্ষমা করে দাও।
Zakir লিখেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা কেন দেশ স্বাধীন করেছিল? প্রধান কারণ ছিল পাকিস্তানি শাসকদের বৈষম্যের হাত থেকে জাতিকে মুক্তি দেওয়া। কিন্তু আজ স্বাধীন বাংলাদেশর এই তীব্র বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি পাকিস্তানি আমলের বৈষম্যকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে….। । উল্লেখ্য- আমি ৩৪ প্রিলিতে chance পেয়েছি।
নাসির লিখেছেন, মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন?
জীবিত ২ লাখ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-পুতিদের জন্য চাকরিতে কোটা থাকলে ৩০ লাখ শহীদ পরিবারের সন্তান ও নাতি-পুতিদের জন্য নেই কেন?
সেক্ষেত্রে সার্টিফিকেট ৩২ লাখ না হয়ে মাত্র ২ লাখ কেন? (সম্ভবত এখানেই কবি নিরব!)
Mahbub লিখেছেন, সংবিধান তথা স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী দেশ ও মেধাবিনাশী অনিয়ম আর কতকাল চলবে?
চাকরিতে পাকিস্তান আমলেও এতটা বৈষম্য ছিল না! মেধাবীরা এতটা বঞ্চিত হতোনা।
তখন সংখ্যাগরিষ্ট হওয়ার পরেও সিভিল সার্ভিসে আমাদেরকে কম নেওয়া হতো। তবে বৈষম্য থাকলেও ড. আকবর আলী কিংবা আসাফউদ্দোল্লাহর মতো মেধাবীরা বঞ্চিত না হওয়ায় জাতি অনেক জাঁদরেল ও পেশাদার আমলা পেত। কিন্তু পাকিস্তানিদের বৈষম্য থেকে বাঁচার জন্য তৈরি হওয়া স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা ১০০% চাকরি বাংলাদেশিরা পেলেও তার সবই হয় সংবিধান তথা স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী কোটা কিংবা দুর্নীতির মাধ্যমে। কম-বেশি ঘুষ ছাড়া আজ একজন মেধাবীরও চাকরি হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের শাসনামলে ঘুষ না দেওয়ার কারণে বিসিএসসহ সব চাকরিতেই মেধা তালিকার শীর্ষে থাকার পরেও তাদের নিয়োগ আটকে রাখা হয়েছে।
নিউজইভেন্ট ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।