"অ্যাবসার্ড" মাহবুব আলীর পাশের রুমে বাস করিত এক ভয়ানক ছাত্রনেতা।
সে যে ভয়ানক ইহা অবশ্য তাহার নিজের দাবী।
তাহার রুম মেট ছিল আগের পর্বের রমণী মোহন রাজেশ বাবু। আমাদের আজকের পর্বের নায়ক সেই দুর্ধর্ষ ছাত্রনেতা।
তো রাজেশ এর মোবাইলে যথারীতি বিভিন্ন মেয়ে ফোন করিত।
তাহাদের মধ্যে একজন ছিল আমাদেরই এক শিক্ষকের মেয়ে। নাম তাহার দীপিকা। রাজেশের জন্য এত পাগল মেয়ে বোধ করি আর কেহ নাই। মেয়েটি যথেষ্ট সুন্দরী
কিন্তুক হায়, কোন এক অজানা কারনে রাজেশ মেয়েটিকে পছন্দ করিত না।
মেয়েটি রাজেশ কে ফোন করিত, প্রায় সারাটা দিন
তাহাদের আলাপচারিতা ছিল এই রূপ,
হ্যালো
হ্যালো, কে?? [রাজেশ চিনিলেও জিজ্ঞেস করিত]
আমি দীপিকা
ও ও ও দীপিকা? আপু কেমন আছ?
আমি আপনার আপু হইলাম কবে?? আমি আপনার আপু না
তুমি রাগ করিতেস কেন আপু?? তোমার পড়ালেখা কেমন চলিতেছে??
আপনি পড়ালেখার কথা জিজ্ঞেস করিতেছেন কেন?? আপনার সহিত কি পড়ালেখার আলাপ করিতে ফোন করিয়াছি??
তাহাদের ঝগড়া আরও বিকট আকার ধারন করে এবং তাহা প্রতিটা দিন।
এক পর্যায়ে রাজেশ তাহাকে বেয়াদব, উল্লুক আরও নানাবিধ গালি দিয়া ফোন রাখিয়া দেয়। এবং মাহবুব আলী অবাক হইয়া লক্ষ্য করে যে মেয়েটি
সাথে সাথে আবার ফোন দেয়। মাহবুব আলী কিঞ্চিৎ ঈর্ষা অনুভব করিতে থাকে।
একদা পরীক্ষা চলিতেছে। মাহবুব আলী, রাজেশ এবং সেই ছাত্রনেতা ৩জন তুমুল পরালেখায় ব্যাস্ত।
সারা বছর পড়ালেখা না করিলে যাহা হয় আর কি রাজেশের আরেক রুম মেট তখন ঘুমাইতেছে।
রাজেশের মোবাইল বাজিয়া উঠিল। রাজেশের মুখ বাংলা পাঁচের ন্যায় হইয়া গেল।
মাহবুব আলীকে বলিল, দোস্ত তুই ফোন ধর, বলিয়া দে আমি ঘুমাইতেসি।
মাহবুব আলী ফোন ধরিলে, অবাক হইয়া লক্ষ্য করিল যে মেয়েটি মাহবুব আলীকে রাজেশ মনে করিয়া প্রেমালাপ চালাইয়া যাইতেছে।
।
সে রাজেশের প্রেমে এতই মজিয়া রহিয়াছে যে কে কথা বলিতেছে তাহা খেয়াল ও করে নাই। ।
ঘটনা লক্ষ্য করিয়া ছাত্রনেতার প্রেমালাপ করিবার সখ জাগিল, সে মাহবুব আলীর নিকট হইতে মোবাইল ছিনাইয়া লইয়া গেল।
অদ্ভুত ব্যাপার হইল, এবারও দীপিকা বুজিতে পারিল না যে তাহার প্রেমিক বদল হইয়াছে।
আলাপচারিতার এক পর্যায়ে নেতা ক্লান্ত হইয়া গেলেন কিন্তুক দীপিকার থামার কোন নাম গন্ধ নাই শেষে নেতা বাধ্য হইয়া বলিলেন,
"শোন মেয়ে, এভাবে রাতের বেলা ফোন করিয়া আমাদিগকে বিরক্ত করিবে না। সামনে পরীক্ষা, পড়ালেখা করিতে হইবেক। আর সবচে বড় কথা হইল, আমার রুম মেট ঘুমাইতেছে। তোমার সহিত আর কথা বলিতে পারিব না। সে জাগিয়া গেলে আমাদের সবার বিরাট সমস্যা হইবে"
কে তোমার রুম মেট?? তাকে এত ভয় পাইতেছ কেন??
তখন নেতা তাহার নিজের নাম বলিল এই ক্যাম্পাসের দুর্ধর্ষ ছাত্রনেতা "ঘুটলু"
তখন দীপিকা বলিল, ওইটা আবার কে?? কোনদিন তো নাম ও শুনি নাই।
এই কথা শুনিয়া নেতা তেলে বেগুনে জলিয়া উঠিল,
কিহ???? তুমি ঘুটলু কে চেন নাহ?????
এই ক্যাম্পাসের ত্রাস -----
সবাই তাহাকে যমের ন্যায় ভয় পায়-----
সবাই সেলাম করে তাহাকে--------
ইত্যাদি ইত্যাদি
এই কথা শুনিয়া সম্ভবত জীবনে প্রথম বারের মতো মেয়েটি রাজেশের উপর বিরক্ত হইয়া ফোন রাখিয়া দেয় এবং ফোন রাখিবার পূর্বে বলে যে ,
"এইসব পাগল ছাগলের সাথে থাক বলেই আমাকে তোমার ভালো লাগে না। "
মাহবুব আলী এবং রাজেশ তখন হাসিতে হাসিতে মাটিতে গড়াগড়ি খাইতেছে, এমন সময় ঘুমন্ত রুম মেট ঘুম জড়ানো কণ্ঠে নেতাকে জিজ্ঞাসিল, দোস্ত কি হইয়াছে?? সবাই হাসিতেছে কেন??
আগের পর্বের লিংক
Click This Link
চলবে কিনা জানি না ----------------- মনে হয় চলবে। ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।