নতুনদিনের মিছিলে,একজন বেয়নেটধারী সৈনিক আনিতার সাদামাটা জীবনে এতোদিন একমাত্র উপদ্রব ছিলো, ছোড়দার খুনসুটি। ছোড়দাও এখন আর অতবেশী জ্বালায়না। কয়েকদিনপর দেশের বাইরে চলে যাবে। তাই মন খারাপ করে বসে আছে। যেনো অগ্যস্ত যাত্রা! সবাই সারাদিন বোঝাচ্ছে, "আরে বাপু, এখনতো আর চিঠির যুগ না।
টেলিমিডিয়ার এই যুগে দূরে গেলেও কি দূরে থাকা যায়? বাটন টিপলেই কথা হয়ে গেলো। কম্পিউটারের মনিটরের সামনে বসলেই দেখা হয়ে যাচ্ছে। একেবারে সকালের আয়না দেখার মতো করে। " ছোড়দার মন তবু ভালো হয়না। মুখ কালো করে মায়ের কোলে মাথা রেখে বলে, "দেখবো ঠিকই, কিন্তু তোমাকে ছুঁতে পারবোনা।
" মা মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। আনিতা ছোড়দার এই বিষন্ন ভাবের আরেকটা কারন আবিস্কার করেছে। মৌমিতাদি। পাশের বাসার দিদি। ছোড়দার সাথে তার প্রেম।
বাসার কেউ জানেনা। অথচ আনিতা জানে। সেদিন সুমীর সাথে কলাভবনের পাশে দাঁড়িয়ে চটপটি খাচ্ছিলো আনিতা। হঠাৎ দেখে, ছোড়দা আর মৌমিতাদি। রিকশায় করে কোথাও যাচ্ছিল।
মৌমিতাদি বউদি হলে বেশ হয়। মৌমিতাদিকে বড় ভালো লাগে আনিতার। কত আদর করেন। আর কি সুন্দর হাসেন।
এই কদিন স্কুল বন্ধ।
বন্ধ মানে আর সব বছরের মত বন্ধ নয়। সামনে এস.এস.সি ফাইনাল। তার প্রস্তুতি চলছে। আনিতা এইবার এস.এস.সি দেবে। পড়াশুনা কিচ্ছু হচ্ছেনা।
নির্ঘাত ফেল মারবে। তার মাথা ছোড়দার মত তুখোড় নয়। ছোড়দা কি সুন্দর স্কলারশিপ বাগিয়ে নিয়েছে। আজীবন ফার্ষ্ট বয় ছিলো। তার দ্বারা ওসব হবেনা।
মা বলেন, ইন্টার পাস করলেই বিয়ে দিয়ে দিবেন। সেটা হলেই ভালো। আর পড়তে হবেনা। দুৎ! আনমনে লজ্জা পেলো আনিতা। এসব কি ভাবছে! ওই ছেলেটাই যত নষ্টের গোড়া।
বাসা থেকে বেরুলেই পিছু নেয়। কোন জ্বালাতন করেনা। অনেক দূর থেকে শুধু তাকিয়ে থাকে। স্কুলের গেট পর্যন্ত গিয়ে আনিতা বহুবার পেছনে তাকিয়েছে। নাহ, কোনদিন দেখা যায়নি।
পিছু নিয়ে আবার কোনফাঁকে যে পালিয়ে যায়, টের পাওয়া যায়না। পাগল একটা। ভুতের মতো করে আসে, আবার ভুতের মত করে ভ্যানিস হয়ে যায়।
ছোড়দা চলে গেলে বড্ড একা হয়ে যাবে,আনিতা। (চলবে.....................) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।