আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার অনামিকা-সন্ধি দিবসে

I like to hear complain from my readers about my lacks.............................................আমি এক পরী যার ডানাও নেই, আকর্ষনও নেই আজ আমার অনামিকা সন্ধি দিবস। কি বুঝতে পারলেন না? ভাবুন। কি হতে পারে? অনামিকা শব্দটির একটি বিশেষ অর্থ আছে। সেই বিশেষ শব্দটি কিন্তু আজকের এই দিনকে ঘিরে আমার জন্য স্মরনীয় হয়ে আছে। আমার জীবনে কিন্তু এমন দিন একবারই আসে বছর ঘুরে।

সবার, অন্তত বিবাহিতদের জীবনে এ দিন প্রতিবছর একবার আসে। বিবাহিতরা, কি ? অনামিকা সন্ধি দিবস মানে আমার বিবাহ বার্ষিকী(marriage anniversary)। এক দশক পার করলাম আমার হৃদয়ের সহচরের সাথে, আর আমার সহচরের নাম নির্ঝর। তার সাথে প্রথম দেখা হয় আমার নানার বাড়ির পাশের মেঘনা নদীর পারে। নদী একবারে বাড়ির পাশের রাস্তার ওপারে।

শুধু রাস্তা আর নদী মাঝে ব্যবধান করেছে একটা মাঠ, সেটাকে দেয়াল তুলে পার্ক বানানো হয়েছিলো পরে। স্বভাবতই নদীর পারে বসে থাকতাম, বোধহয় সমবয়সীর অভাবে। আর আমার প্রতিবেশিরা ছিল ক্রিকেট বলতে অজ্ঞান, তাদের ক্রিকেট খেলার চেয়ে ব্যাট নিয়ে বাহাদুরি আর বল নিয়ে জানালা ভাঙ্গাই বেশি চলত। আর তার চেয়ে বেশি বড় ত্বত্ত হল, এক কিশোরী মন যখন নদীর শীতলতা ছুয়ে অবাক করা বিস্ময়ে ঢেউ গুনছি, তখন ক্রিকেট খেলার দাম্ভিকতা আমার কাছে মুল্যহীন। আমার সে ছিল এক অনন্যসাধারন, যাকে অনেকের মাঝেও সম্পুর্নতার স্পর্শে দেখা যায়।

ছেলেরা সবাই যখন ক্রিকেট বল খুজতে খুজতে হতাশ হয়ে আরেকটি কেনার ব্যবস্থা করছে, তখন সে আমার পাশে এসে দাড়িয়েছিল। বলেছিল যদি ভীত হই, তবে যেন কেউ পাশে আছে ভুলে না যাই। ভুলিনি, ভুলিনি সে আশ্বাস বানী, আর তার ভালবাসাকে সঞ্চয় করেই আজ এতদুর, জীবনের আরও বিশটা বছর কাটিয়ে আমি এখন পয়ত্রিশ বছর বয়সী রমনী। আমাদের তিনটি সন্তান, সুর্য, সে সবার প্রথম। আর তারপর আমার দুই জমজ সন্তান, তূর্য আর অর্থী।

ওরা প্রায়ই তর্ক করে, কে বড় আর কে ছোট, নির্ঝর আর আমি হাসি! আমার কলেজ জীবনের একটা কথা মনে পড়ল, একবার আমার এক সহপাঠী আমার নাম জানতে চেয়েছিলো, আমি উত্তর দেয়ার আগেই নির্ঝর বলেছিলো ''নির্ঝরিনী''। আমি হাসতে পারিনি বরং যখন ওরা নির্ঝরের নাম জানতে চাইল, তখন আমার মুখে রক্ত জমেছিলো, আর নির্ঝরের উত্তর দেখে ওরা মুখ টিপে হাসছিলো। আজ সকালে নির্ঝর আর আমার পিচ্চিগুলো মিলে আমার জন্য জন্মানো ফুল গাছ গুলোর উপরের ছাদ সরিয়ে দিলো, ঠিক ছাদ নয়, অনেকটা আড়াল করার জন্য পর্দা ছিল এতদিন। আর সেই গাছগুলোর ফুল জড় করে লেখা ''তুমি কি আমাকে আবার বিয়ে করবে পাহারিয়া?''তারপর বুঝলাম আমাকে এতদিন বাগানে আসতে দেয়নি কেনো! তার নিচে লেখা, ''হ্যা অথবা না'' আজ অনেকদিন পর রাগ ভাঙল, আমাকে বাগানে যেতে দিতোনা বলেই বোধহয় রাগের উৎপত্তি হয়েছিলো। আর আমার পিচ্চিগুলোও দুষ্টু হয়ে গেছে ওদের বাবার মত, আমাকে কিছুই বলেনি।

ছাদের নিচে দাড়িয়েছিল আমার পিচ্চিগুলো, আর আমার পাশে নির্ঝর। নির্ঝর আমার বাম হাতটা ধরতেই আমার হাতে হৃদয় আকৃতির আংটিটার দিকে চোখ গেলো, অনেক দিন আগে ও আমাকে ওটা পরিয়ে দিয়ে বলেছিলো ''আজ থেকে আমাদের মাঝে শুধু হৃদয় সন্ধিই নয়, অনামিকা সন্ধিও রইল'' হ্যা বললাম, আবারো আমাদের চিরঅটুট সন্ধির উৎসব চলতে লাগল! (সমাপ্ত) এটা আমার জীবন কাহিনি নয়, এ শুধুই গল্প। প্রমান, আমার বয়স ৩৫ নয়, ১০ থেকে ১০০ এর মধ্যে অন্য কোনো বয়স। এই গল্পের একটাই সত্য বিষয় আছে, আর তা হল গল্পের প্রধান চরিত্রের নাম পাহারিয়া, আর সেটা আমার নামের আঞ্চলিক ভার্সন, তাছাড়া পুরোটাই গল্প! যারা মিলনাত্মক গল্প ভালোবাসে, তাদের জন্য উৎসর্গ করা হল! ''ভালো থাকুন'' ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।