আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরলোকে উপমহাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকা

উপমহাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকা আর নেই। ৫ নভেম্বর শনিবার বিকাল ৫ টা বেজে ৭ মিনিটে ভারতের মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর। বুকে সংক্রমণ জনিত অসুস্থতা নিয়ে তিনি ২০১১, জুন মাসে মুম্বাইয়ের কোকিলা বেন ধীরুভাই আম্বানী হাসপাতালে ভর্তি হোন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।

পরে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। গত কয়েকদিন তিনি কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সাহায্যে বেচে ছিলেন। এ অবস্থায় তাঁর দেহের দুটি কিডনি বিকল হলে ডায়ালিসিসের মাধ্যমে তা সচল রাখা হয়। নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হলে গত ২৩ অক্টোবর থেকে গুণী এই শিল্পীর শারীর খারাপের দিকে মোড় নেয়। এই অবনতি তারা শারীরের বিভিন্ন অঙ্গকে একে একে বিকল করে ফেলে।

এজন্য মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিকিৎসকগণ মাল্টি অর্গান ফেইলুরের কথা বলেছেন। সঙ্গীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকা শুধু একজন কণ্ঠ শিল্পীই ছিলেন না। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভাধর। তিনি একজন কবি,সাংবাদিক,চিত্র নির্মাতা,কণ্ঠ শিল্পী,সুরকার,গান রচয়িতা। তিনি হিন্দি, বাংলা, আসামী ভাষায় বহু গান গেয়েছেন ও লিখেছেন।

উপমহাদেশে তার গানের বিশাল ভক্ত রয়েছে। ঢাকা ও গোহাটির মানুষের কাছে তিনি অতি প্রিয়। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া সহ দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ। শিল্প সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের জন্য ভারত সরকার চলতি বছর জুনে তাকে পদ্ম ভূষণ খেতাবে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে তিনি জাতীয় ভাবে শ্রেষ্ঠ সুরকার খেতাব পান।

তারও আগে ১৯৬০ সালে শকুন্তলা ছবির জন্য , ১৯৬৪ সালে প্রতিধ্বনি ছবির জন্য, ১৯৬৭ সালে লটিঘটি ছবি জন্য সর্বমোট তিনবার রাষ্ট্রপতি পদক পান। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত তিনি আসাম রাজ্যে সরকারের একজন সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি পদ্মশ্রী খেতাব পান। ১৯৮৭ সালে তিনি সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কার পান। ১৯৯৯-২০০৪ পর্যন্ত তিনি সঙ্গীত নাটক একাডেমীর চেয়ারম্যান পদে ছিলেন।

২০০৩ সালে তাকে প্রসার ভারতীর একজন বোর্ড সদস্য নির্বাচিত করা হয়। ভূপেন হাজারিকার শিক্ষাজীবন অত্যন্ত সমৃদ্ধ। ১৯২৬ সালে আসামের সাদিয়াতে এক শিক্ষক পরিবারে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। ১৯৪২ সালে তিনি গোহাটি থেকে স্কুল ও কলেজ জীবন সমাপ্ত করেন, ১৯৪৪ সালে ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করেন, ১৯৪৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর চলে যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ।

যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি মাশ কমিউনিকেশনে পিএইচডি করেন। তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিসলি ফেলোশিপ পান। যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালে তিনি জনপ্রিয় কালো গায়ক পল রবসনের সাথে কাজ করেন। খবরের লিংক  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।