বাকেরগঞ্জে গণধর্ষণের পরও আসামিদের অব্যাহত হুমকিতে ক্ষোভে-অপমানে আত্মহনন করল দশম শ্রেণীর ছাত্রী সেঁজুতি ওরফে কমলা (১৬)। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নিজ ঘরে আত্মহনন করে সে। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার চৈতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী কমলা পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা সৌদি আরবপ্রবাসী সাদেক মৃধার মেয়ে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাঁঠালতলি পুলিশফাঁড়ি ও সড়ক অবরোধ করে।
স্থানীয়রা জানান, ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় মায়ের অসুস্থতার কথা বলে চাচাত ভাই ফারুক মৃধার ছেলে নয়ন মৃধা কমলাকে ঘর থেকে ডেকে নেয়।
পরে আজিজ আকনের ছেলে নাসির, নুরু আকনের ছেলে শামিম, মোজাম্মেল মিয়ার ছেলে সবুজ, নাসিরউদ্দিনের ছেলে রাজীব ও মতলেব প্যাদার ছেলে সাইফুল তাকে পাশের বাগানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। কমলার ডাকচিৎকারে তার মা স্থানীয়দের নিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মা হাফিজা বেগম ছয়জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু ওসি সৈয়দ রবিউল ইসলাম ঘটনার মীমাংসার জন্য চাপ দেন। রাজি না হওয়ায় ধর্ষণের ঘটনা এড়িয়ে 'অপহরণ-চেষ্টা'র মামলা নেয় পুলিশ।
হাফিজা বেগম অভিযোগ করেন, আসামিদের গ্রেফতারের কোনো চেষ্টা না করে ওসি ঘটনা মীমাংসার জন্য চাপ দেন। পরে আসামিরা তার অপর দুই মেয়েকে অপহরণের হুমকি দেয়। আসামিদের অভিভাবকরা সৌদি আরবপ্রবাসী স্বামীর কাছে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে সংসার ভেঙে দেওয়ারও হুমকি দেন। এসব কারণে তিনি (হাফিজা) অসুস্থ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
এতে রাগে, ক্ষোভে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় কমলা। মৃত্যুর পর চৈতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ পাশের পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে বাকেরগঞ্জ-বরগুনা সড়ক ও কাঁঠালতলি পুলিশফাঁড়ি অবরোধ করে। পরে ওসি এসে তাদের শান্ত করলে আধ ঘণ্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয় শিক্ষার্থীরা। ওসি সৈয়দ রবিউল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সেঁজুতি ধর্ষিত হয়নি। অপহরণের অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।