আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ফাঁসি চাই, কুয়েত থেকে

কখনো ভাবিনি আমি যে এত খারাপ, এই কথা গুলো সবাইকে বলবো । ** প্রতি সপ্তাহে একবার আমাকে মেয়ের কাছে যেতে হয়, তা না হলে নিজেকে সামলাতে পারি না । হাজারো হলেও সব সময় ফাষ্টফুট খাওয়াই এর মূল কারণ । ** রাস্তা ঘাটে পরে না থাকলেও নিজের রুমে পরে থাকি দু/একগ্লাস সেবন করে, এই অভ্যাসটি মূলতো তৈরী হয়েছে, যখন থেকে আমি পানির বোতলে দেশী ডাইল বিক্রি করতাম তখন থেকে, মাঝে মাঝে ভাবতাম নিজেই বিক্রি করছি কিন্তু পরখ করে দেখলাম না এর সাধ কত ! তা কি করে হয় । ** ডাইল বিক্রি করে যখন দৈনিক কাঁচা কাঁচা টাকা আমার পকেটে আসতে শুরু করলো ভাবলাম বাপ ভাই তো কাছে নেই কে আর বাধা দিবে, পাশে একটা বিদেশী মেয়ে রাখলে মন্দ হয় না ।

দেশে গিয়ে বন্ধুদের সাথে গল্প করতে পারবো আমার কাছে ফিলিপিনি ও ইন্দোনেশিয়ান মেয়ে ছিল । যাক সে কথা, শ্রীলংকান মেয়েরা এমনিতেই স্বামী ভক্ত কিন্তু পাবে কোথায় ছেলেরা বিয়ে করে বউকে পাঠিয়েছে বাইরে কাজ করার জন্য আর ছেলেরা আড্ডা দিচ্ছে অন্য মেয়েকে নিয়ে । তাই আমাদের তাসলিমা আপার মত শ্রীলংকান মেয়েরা বলে, আমার টাকায় আমার স্বামী অন্য মেয়েকে নিয়ে মজা করছে, তো আমি করলে দোষ কোথায় । তাই আমি মাঝে মাঝে তার অভাব পূরনে সহায়তা করেছি মাত্র । ( যদি কেই প্রশ্ন করে, তারা স্বামীকে ডির্ভোস করে না কেন ? সাবধান এই প্রশ্নটি করবেন না তাদের মধ্যে ডির্ভোস নাই মা বাবা যে পাম গাছের সাথে বিয়ে দিয়েছে তাকেই স্বামী বলে মানতে হবে ।

স্বামীকে বাদ দিতে হলে আগে ধর্মান্তর তারপর, কথা গুলো গরীবদের বেলায় )। ** দুনিয়ার সবাই বড় লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখে তেমনটি আমিও দেখতে শুরু করলাম, কিন্তু কেমনে, তাই সরকারি অফিসে যখন পরিস্কারের এবং চা কফি বানানোর কাজ করতাম সেখানকার বস আমাকে খুব ভালবাসতো ,যেমন আমি মুসলিম কিন্তু গরীব, এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে আমি ষ্ট্যাম্প বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলাম । ষ্ট্যাম্প বিক্রিতে অনেক লাভ, ডলার কিংবা টাকা জাল করতে এত রিকস্ কিন্তু এখানে এত ঝামেলা নাই এই দেশে ১,৫,১০,ও ২০ দিনারের ষ্ট্যাম্প পাওয়া যায় তাই বসের পুরাতন ফাইল গুলি খুজে খুজে ষ্ট্যাম্প বের করে বাইরে বিক্রি করতাম । বাপরে বিশ্বের সব চেয়ে দামী টাকা হল এই কুয়েতি দিনার ১ দিনারে ২৬০ টাকা সপ্তাহে দুই চারটি বিক্রি করতে পারলে চান্দের দেশে বাড়ি কিনতে পারবো ইনশা আল্লাহ । এই ভাবে বছর খানেক করলাম কিন্তু কথায় আছে না, চোরের ১০ দিন গৃস্হের ১ দিন তাই মাস ছয়েক চৌদ্দ শিকের দরজা দেখে মাথার কামাইয়া দেশে আসলাম ।

দেশের মানুষ অনেকে বলে, তুই মাথা কামাইছস কেন ?, আমি বলি কি ঊমরা করে আইছি । যাক নারী পোতা যে দেশ সেখানে আর ভাল লাগে না কারণ একটাই, টেহা নাই । তাই ভাবলাম কি করি আসার পথে তো পাঁচ আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে আইছি, তাই এবার গলা কাটা ভিসায় যাব বলে ভাবলাম, । যেমন আশা তেমন ভরসা কুয়েতের এ্যায়ারপোটে তো সমস্যা নাই সমস্যা আমাদের দেশে । যাক টাকা হলে নাকি কাঠের পুতুল হাঁ করে, ৬০ হাজার টাকায় এক কাষ্টম অফিসারকে ঠিক করা হল সে বাংলাদেশ এ্যায়ারপোর্ট পার করে দিবে ।

। সে এক মজার কাহিনি, বাইরে থেকে দালালে ফোন করে দিছিলো লাল শার্ট জিন্সের প্যান্ট । আমি তো ভয়ে কাপছি, জেলে যাব এই ভয়ে না শুনলাম রেপিট ব্যাটেলিয়ান নাকি ক্রোস ফায়ার দেয় তাই, হঠাৎ করে পিছন দিক হতে ডাক পরলো এই তুমি ? আমি বললাম জীঁ স্যার, আমার কাগজ পত্র নিয়ে উনি নিজেই ঠিক করিয়ে সাথে করে প্ল্রেনে উঠিয়ে দিয়ে আসলো, রাস্তায় দু একজন বলেছে স্যার উনি কে ? স্যারে জবাব দিল আমার আত্নীয় । যাক এমনি করে আবার এই দেশে ডুকে গেলাম, এ্যায়ারপোট পার হয়েই হাফ ছেড়ে বাঁচলাম রাত্রে, ২০ হাজার টাকায় আবার পাসপোট বিক্রি করে দিলাম । অনেক টাকা খরচ করে আসলাম ভাবছি কি করবো কাগজ পাতি ছাড়া এই দেশে কাজ তো পাওয়া যাবে না তাই ধান্দা করবো বলে ঠিক করলাম ।

যখন যা পাই তাই করি, সময় পেলে ডাষ্টবিন টোকাই সেখান থেকে পেপসি ক্যান, লোহার খন্ড ,পুরাতন কাপড় ইত্যাদি ইত্যাদি । এই সব কাজে পোষায় না তাই ভাবলাম নতুন কিছু করব এখানে আমাদের দেশের লোক যারা টেক্সি চালায় ওদের কাছে মেয়ে পাওয়া যায়, ৩০০ দিনারে শ্রীলংকান, ৪০০/৫০০ টাকায় ফিলিপিনি ও। ইন্দোনেশিয়ান মেয়ে , একটা রুম ভাড়া নিয়ে পতিতা ব্যবসা শুরু করলাম, ** এখানে যদি কেউ বলে টেক্সি চালায় যারা তারা মেয়ে কোথায় পায়, কথায় আছে না জাত যায়না মলে খাচ্চৎ যাইনা ধুলে । মেয়েরা টেক্সি চালকের গাড়িতে বসলে ফোনের মাধ্যমে বেচাকেনা করে আমাদের দেশের কোন কোন । টেক্সি চালক ।

মাঝে মাঝে বাড়িতে ফোন করলে বাবা জিঙ্গাসা করে,বাবা তুমি এখন কি কর ? আমি বলি আপাদত ব্যবসা করছি । মিথ্যা বলতে বলতে নিজের কাছে সব কিছুই হালাল মনে হয় । উপরের কথা গুলো আমাদের দেশের যারা কুয়েত প্রবাসি তাদের ২% লোক জরিত তাদের জন্য সমস্ত বাংলাদেশীদের বদনাম গত চার বছর পূর্বে আমাদের দেশের দুইজনকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয় তার পরেও আমাদের কোন পরিবর্তন হয়নি । তবে ইরাক কুয়েত যুদ্ধের পর আমাদের দেশের সৈনিকেরা কঠোর পরিশ্রম করার কারণে তারা চুপ রয়েছে কিন্তু আজ প্রায় ১৩ বছর যাবৎ ভিসা বন্ধ রেখেছে মাঝ খানে তিন মাসের জন্য খুলেছিল মাত্র । তবে দু একটি পারিবারিক ভিসা হয় যারা আর্মিতে আছে জাতি সংঘের আওতায় ।

তবে এখনও আমাদের দেশের মানুষ আসছে তবে আপনারা জানেন কি তিন পাসপোট দিয়ে, বলেন কেমনে ? ১টা নেপালি তারপর দুবাই তারপর কুয়েত । মাঝ খানে ভারতের ভিসা নিয়ে একবার এসেছিলাম তা আপনাদের বলা হয়নি । এখানে প্রকাশ থাকে যে সৌদিতে যে ঘটনা ঘটেছে তার পরিসমাপ্তি করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি । কারণ কেউ যদি অপরাধ করেন তার সাজা প্রয়োজন এখানে যারা সৌদি প্রবাসি সবাই জানে এদেশের আইন তা হলে তারা জেনে শুনে যদি অপরাধ করে ,আপনার আর আমার কিছুই আসবে কি !! লেবাননও লিবিয়ায় থেকে মাত্র ৫০/৬০ হাজার লোক আমাদের দেশে ফেরত গিয়েছে, তারই ধাক্কা সইতে আমাদের সরকার হিমসিম খাচ্ছে । তাই ঝামেলা আগে না বাড়িয়ে চুপ থাকাই ভাল ।

সবাইকে একটি কথা স্বরণ করিয়ে দিতে চাই সৌদিতে প্রায় ২০ লহ্ম বাঙালী রয়েছে । **আর আমোদের দেশের সব চেয়ে বেশী রেমিটেন্স আসে সেই সৌদি থেকে** বর্তমানে শুনছি আরও পাঁচজন লোক রয়েছে যাদের গর্দান কাটা হবে বলে আলোচনা হচ্ছে আমাদের দেশের সরকারের কাছে অনুরোধ করবো তাদের ব্লাডম্যানি দিয়ে মুক্ত করে আনার জন্য । দেশের সম্মান রহ্মার্থে । গত তিন মাসে তিন জন ব্যাক্তির ব্লাডম্যানি নিয়ে মুক্তি দেয়া হয়েছে একজন ইংল্যান্ডের নাগরিক সে একজন সৌদি নাগরিক কে হত্যা করেছিল, একজন ইন্দোনেশিয়ান কাজের মেয়ে তার গৃহ কর্ত্যার শিশুকে হত্যা করেছিল অপরজন ছিল মালেশিয়ান তাদের নিজ নিজ দেশের সরকার ব্লাডম্যানি দিয়ে তাদের প্রাণ রহ্মা করেছেন কিন্তু আমাদের দেশের জনগণের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, আমরা সবাই যেন সৎ পথে চলি এবং যে দেশে যখনি বাস করি সে দেশের আইন অমান্য না করি সবাইকে দেশ প্রেমি হওয়া প্রয়োজন, আপনি জানেন কি আপনার জন্য আমাদের দেশের কতটুকু বদনাম হচ্ছে তাই যদি বিবেচনা করেন ,তবে দেখুন আট ভাইকে হারিয়েছি সত্য কিন্তু দেশের বদনামকে সারাতে পারিনি । সারা বিশ্বে আলোচিত আমাদের এই বদনাম, গর্দান কাটা বন্ধ করূণ এর চেয়ে কার গর্দান কেটেছে, কেন কেটেছে কোন দেশের পাসপোর্ট এটাই যেন মূখ্য বিষয় ।

। প্রবাসি সবাইকে সৎ পথে চলার আহ্বান রইলো । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.