আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিরবেই কেটে গেল ঐতিহাসিক ২৩শে মার্চ, ১৯৭১ এ ২৩শে মার্চ কি ঘটেছিল? সত্যি আমরা বড়ই অকৃতজ্ঞ

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, ধর্মান্ধতা ও দলান্ধতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। ঐতিহাসিক ২৩শে মার্চ ১৯৭১, স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক পতাকা দিবস পালন করা করা হয়, জয় বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ ও গান ফায়ারের মাধ্যমে স্বশ্রদ্ব সম্মান জানিয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। ছবিতে পেছনে দন্ডায়মান ছাত্রলীগের চার খলিফা খ্যাত স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা আ স ম আবদূর দর, আবদুল কুদ্দুস মাখন, নুরে আলম সিদ্দিকি, শাহজাহান সিরাজ, গান ফায়ার করছেন কামরুল আলম খান খসরু, পতাকা উত্তোলন করছেন হাসানুল হক ইনু, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হয়, কথাটা আমরা প্রায় বলি অথচ আমরা কি আদৌ তা মেনে ইতিহাসের ভুল থেকে কোন শিক্ষা আজও নিয়েছি? ছোট্ট এই বিষয়ের উপর তর্ক-বিতর্ক করে পার করে দেয়া যাবে রাতের পর রাত, তবুও শেষ হবে না আলোচনা। গতকাল থেকে আজ সারাদিন এই আশায় ব্লগে চোখ রেখেছি যে কেউ হয়তো “২৩শে মার্চ ১৯৭১” নিয়ে কোন লেখা দিবে। কিন্তু হতাশ হতে হলো, আমরা দাবী করি নিজেদেরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক বলে।

স্লোগান দেই নিজেদের দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা বলে অথচ “২৩শে মার্চ ১৯৭১” নিয়ে ছোট্ট একটা লেখাও দিতে কাউকে দেখলাম না। চেতনা ব্যবসায়ীরা আজ কোথায়? ১৯৭১ এ ২৩শে মার্চ সারা বাংলাদেশে পাকিস্তান দিবসের পরিবর্তে প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়। পাকিস্তানী পতাকার পরিবর্তে সর্বত্র বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এখানে ১৯৭১ এর ২৩শে মার্চ নিয়ে করা ২৪শে মার্চ ইত্তেফাক পত্রিকার একটি রিটপার্ট তুলে দিলাম। দৈনিক ইত্তেফাক, ২৪ মার্চ ১৯৭১ আমরা শুনেছি ঐ, মাভৈঃ মাভৈঃ মাভৈঃ ৭১-এর তেইশে মার্চের সুরঃ (স্টাফ রিপোর্টার) বিক্ষুব্ধ বাংলার বুকে অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের উত্তাল তরঙ্গের আঘাতে আঘাতে ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব গ্রহণের স্মারক দিবস ২৩শে মার্চ গতকাল (মঙ্গলবার, ২৩ মার্চ) চিরাচরিত আনুষ্ঠানিকতায় আর পালিত হয় নাই।

বাংলার মুক্তি ও স্বাধিকার আন্দোলনের রক্তঝরা পটভূমিকায় ‘স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকে গতকালের (২৩ মার্চ) দিন বাংলাদেশব্যাপী ‘প্রতিরোধ দিবস' হিসাবে পালিত হইয়াছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় সরকারি-বেসরকারি ভবনসমূহে, বাড়ি-ঘরে, যানবাহনে কালো পতাকার পাশাপাশি গতকাল সংগ্রাম পরিষদ পরিকল্পিত স্বাধীন বাংলার পতাকা উড্ডীন করা হয়। ঢাকা শহর সামরিক কড়া বেস্টনির ছত্রছায়ায় বিমানবন্দর ভবনটিতে পাকিস্তানের পতাকা উড়িতে দেখা যায়। সংরক্ষিত এলাকা প্রেসিডেন্ট ভবন ও ল্যাটভবনে পাকিস্তানের পতাকা ছিল। এছাড়া রাজধানীর সকল সরকারি ভবন-বাংলা পরিষদ ভবন, সুপ্রিমকোর্ট, হাইকোর্ট, সেক্রেটারিয়েট শেখ সাহেবের বাসভবন, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল, ঢাকা বেতার কেন্দ্র, টেলিভিশন কেন্দ্র প্রভৃতি স্থানে কালো পতাকার পাশাপাশি ‘স্বাধীন বাংলা' পতাকা উড্ডীন করা হয়।

গতকাল প্রতিরোধ দিবস পালন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার গণজীবনে গণআন্দোলনের সাগরে ভরাকাঁঠালের জোয়ার দেখা দেয়। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যবস্থাপনায় আউটার স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক ছাত্রছাত্রীর যে বীরোচিত কুচকাওয়াজ পরিবেশন করেন, স্বাধিকার পিপাসু হাজার হাজার নর-নারী আনন্দ উদ্বেল কিন্তু বজ্রকঠোর শপথের দ্যুতিতে দীপ্ত এক অপূর্ব পরিবেশে তাহা অবলোকন করেন। বাংলার তরুণদের এই কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়া গতকাল (২৩ মার্চ) বাংলার আকাশে-বাতাসে বাঙালিরা মানুষের মতো মরিবার ও বাঁচিবার আত্মপ্রত্যয়ের যে অনির্বাণ স্বাক্ষর রচনা করিয়াছে তাহা অতুলনীয়, অদৃশ্যপূর্ব, অশ্রুতপূর্ব। সকাল হইতে রাত পর্যন্ত ঢাকার রাস্তার বীর বাঙালির অগণিত মিছিল শুধু কামনা-বাসনা ও আকাঙ্ক্ষার ধ্বনিতে প্রতিধ্বনিত করিয়া গিয়াছে অবিশ্রান্ত জলধারার মতো। মিছিলে মিছিলে সভা-সমিতিতে জনতার কণ্ঠ যেন কেবলি বলিতে চাহিয়াছে ঃ ‘শুকনো গাঙ্গে আসুক জীবনের বন্যা উদ্দাম কৌতুক ভাঙ্গনের জয়গান গাও জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক' আমরা শুনেছি ঐ মাভৈঃ মাভৈঃ মাভৈঃ গতকাল ছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সরকারি ছুটির দিন।

স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক এই দিবস উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল ভোরে প্রভাত ফেরি, শহীদানের মাজার জেয়ারত, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বাসভবন এবং প্রতিষ্ঠানে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন, আউটার স্টেডিয়ামে জয় বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান এবং স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে জনসভা অনুষ্ঠান করা হয়। এবার চেতনা ব্যবসায়ীদের নিকট প্রশ্ন কি কারনে ঐতিহাসিক ২৩শে মার্চ নিয়ে তারা মুখে কুলুপ এঁটেছে?  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।