স্বপ্ন দেখুন, একদিন সত্যি হবেই...
বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ অনুযায়ী দেড় হাজার শ্রমিকের নিয়োগপত্র প্রদানসহ ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে গ্রামীণফোন লিমিটেডের শ্রমিকরা।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গ্রামীণফোন কার্যালয়ের সামনে সকাল ৮টা থেকে এ মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কর্মসূচিতে প্রায় নয় শতাধিক শ্রমিক অংশ নিয়েছে। তারা বিভিন্ন ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড নিয়ে অফিসের সামনের সিড়িতে অবস্থান করছে।
আন্দোলনরত গ্রামীণফোন লি. শ্রমিক ইউনিয়নের (প্রস্তাবিত) সাধারণ সম্পাদক মোসলেউদ্দিন বলেন, ‘নরওয়ে থেকে আসা টেলিনর গ্রুপের এমডি মি. বাকসাস বাংলাদেশে এসেছেন।
শ্রমিকদের দাবি নিয়ে সকালে গ্রামীণফোনের অফিসে স্মারকলিপি দিতে গেলে তাদের বের করে দেওয়া হয়। ’
টেলিনরের ওই কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে থাকবেন বলে জানান তিনি।
এদিন সারা দেশের বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের গ্রামীণফোন অফিসের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারি শ্রমিকরা জানান, ১০ থেকে ১৪ বছর ধরে তারা গ্রামীণফোনের বিভিন্ন অফিসে কর্মরত আছেন। গ্রামীণফোনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র ধরে তারা নির্ধারিত শর্ত পূরণ করে নিয়োগ পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ দিয়ে বিভিন্ন স্থায়ী পদে চাকরিতে যোগ দেন।
কিছু দিন পরে তাদেরকে একটি করে আইডি নম্বর এবং মোবাইল ফোন নম্বর দেওয়া হয়।
এর কিছু দিন পরে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়োগপত্র চাইলে তারা কার্ডের উপরে স্মার্ট ও জ্যামসন এবং নিচে গ্রামীণফোন লেখা একটি করে পরিচয়পত্র দেন। স্মার্ট ও জ্যামসন্স লেখা বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামীণফোন তাদের জানায়, তারা গ্রামীণফোনের স্টাফ। সরকারি রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয়ের অজুহাত দিয়ে এ বিষয়ে তাদের মন্তব্য করতে নিষেধ করা হয়।
কর্মচারীরা বলেন, ‘বেতন তোলার আগে স্মার্ট ও জ্যামসন্সের কাগজে তাদের স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়, না দিলে চাকরি চলে যায়।
এভাবে গ্রামীণফোন দাসত্ব প্রথা কায়েম করে চলেছে এবং শ্রমিকদের নির্যাতন করে আসছে।
কর্মচারীরা জানান, বেশ কয়েক বছর পর তারা জানতে পারে মি. পিটার পি সরকার এবং লতিফুস সামছ্ রিংকু গ্রামীণফোনের মধ্যস্বত্ত্বভোগী দালাল কোম্পানি। তারা শ্রমিকদের উপার্জিত অর্থের বিরাট অংশ কৌশলে গ্রামীণফোন থেকে গ্রহণ করে। এতে মোটা অংকের রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হয়।
গ্রামীণফোনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা তাদের দীর্ঘ দিন নির্যাতন করে আসছে।
তাদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হচ্ছে না- এমন অভিযোগ এনে তারা ২০০৮ সালের ২২ জুন প্রথম শ্রম আদালতে বেশকিছু মামলা করে।
চলতি বছরের ৩০ মার্চ আদালত শ্রমিকদের স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে নিয়োগপত্র প্রদান এবং আইন অনুযায়ী অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের রায় দেন। রায়ের বিপক্ষে গ্রামীণফোন ২৮ এপ্রিল আপীল করে। আপীলেও শ্রমিকদের ডিউটি, বেতন, মোবাইল ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের আদেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু গ্রামীণফোন আদেশ উপেক্ষা করেছে এবং শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছে।
এছাড়া তাদের উপর বাড়ানো হয়েছে নির্যাতনের মাত্রা।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, তাদের ডিউটি-বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা অমানবিক জীবন অতিবাহিত করছে। শ্রমিকরা যাদের ডিউটি-বেতন বন্ধ আছে তাদের বকেয়া প্রদানসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া, নির্যাতন বন্ধ করা, বকেয়াসহ গ্রেড প্রদান, হয়রানিমূলক মালা প্রত্যাহার এবং আউট সোর্সের কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি করেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।