আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ড্রাগস নিয়া ব্যাপুক গবেষনা.............. :-

© তন্ময় ফেরদৌস (আমার একটা রিসার্চের ফলাফল, অনেক তথ্য আছে, তাই পাঠকগন নিজ নিজ দায়িত্বে প্রবেশ করবেন। এই পোস্টের মুল উদ্দ্যেশ্য শুধুমাত্র আপনাদের জানার পরিধীকে বিস্তৃত করার মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি। ) প্রথম আলোতে কোন এক সময় একটা লেখা দেখেছিলাম। শিরনাম ছিল অনেকটা এই রকম-"দেশের কি উপকার করবেন ১৮০০ কোটি টাকা পেলে ?" এই ১৮০০ কোটি টাকার ব্যাপারটা কোথেকে আসলো ভাবছেন ? আমাদের দেশে প্রতি বছর ১৮০০ কোটি টাকার ড্রাগস ডিলিং হচ্ছে বর্তমানে। শুধুমাত্র লাইসেন্স প্রথার মাধ্যমেই দেশি মদ, ডিনেচারজ় মদ, রেক্টিফাইড স্পিরিট ও বিভিন্ন লাইসেন্স ফি থেকে ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে ৫০ কোটি টাকা যা ব্যাংক চালানের মাদ্ধমে গ্রিহিত হয় [তথ্যসূ্ত্রঃমাদকদ্রব্য নিয়ন্রন অধি.০৮-০৯]।

পরিসংখ্যানঃ আসুন একটু মাদক গ্রহনকারিদের পরিসংখ্যান দেখি। ২০০৪-০৫ সেশনে WHO[WORLD HEALTH ORG.] এর একটা জরীপে দেখা যায়, মোট জনসংখ্যার ০.৬% মা্নুষ মাদকাসক্ত। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ১৪৭.৮৬ মিলিওন(৯ লাখ), মোট পরিবারের সংখ্যা ছিল ৩.১১ মিলিয়ন। ৪.৬ মিলিয়ন ড্রাগ এডিক্ট যদি ৩.১১% এবং ১৫.৩% পরিবারকে রিপ্রেসেন্ট করে তাহলে প্রতিন ১০০ টি পরিবারের ১৫টি তে একজন করে মাদকাসক্ত পাওয়া যাবে। [তথ্যসূ্ত্রঃwho,survey 06-05,09]।

অন্য মেট্রপলিটন শহরগুলোর জরিপ পাশে রেখে ঢাকা শহরের দিকে একটু তাকাই। ঢাকার বেশ বড় একটা সংখ্যার মাদকসেবিরা আসে বস্তি, সেক্স ওয়ারকার এবং বিভিন্ন ধরনের ভাসমান মানুষ থেকে। ছাত্র সমাজে নতুন ড্রাগসগুলর প্রকোপও কম নয়। ঢাকার মোট জনগোষ্ঠির ১৩ মিলিয়ন যার মাঝে ২.৫ মিলিয়ন হচ্ছে ভাসমান মানুষ ও বস্তিবাসি। ধরে নেয়া হয় এদের মাঝে ৫০% ই মাদকাসক্ত।

প্রতি মাসে ঢাকার ৫টি লাইসেন্স করা দোকানে ৪০,০০০ লিটার মদ বিক্রি হয়। অবিশ্যাষ্য মনে হচ্ছে ! [তথ্যসূ্ত্রঃমাদকদ্রব্য নিয়ন্রন অধি.০৯], অন্য ড্রাগস প্রসঙ্গে পরে আসছি। মাদকসেবিদের প্রোফাইলঃ বয়স,শিক্ষা,পেশা ইত্তাদির ভিত্তিতে CTS (central treatment center) এর ৮০০ রোগির আ্যনালাইসিস করে দেখা গেছে ৬০% মাদকসেবির বয়স ১৬-৩০, তাদের মাঝে ৫৮.৩% কর্মহীন এবং ২৩% অশিক্ষিত,৫৭% ৫ম-১০ম শ্রেনির মাঝে ২০% হল এইচ.এস.সি. বা তার সমমানের। আপনি যদি মাদকসেবিদের দুভাগে ভাগ করেন তাহলে দেখবেন সমাজের উচ্চশ্রেনির মাদকসেবিদের চেয়ে নিম্নশ্রেনির মাদকসেবিরা অনেক বেশি অসামাজিক কর্মে লিপ্ত। প্রকারভেদঃ ১. চেতনানাশক বেদনা উপশমকারী মাদ্রকদ্রব্য : আফিম, মরফিন, হিরোইন এবং ফেন্সিডিল ইত্যাদি।

২. মনোউদ্দীপক বা উত্তেজক মাদকদ্রব্য : কোকেন, এম ফেটামিনস ইত্যাদি। ৩. অবসাদ সৃষ্টিকারী মাদকদ্রব্য : বারবিচ্যুরেটস ও মেথাকোয়ালোন ইত্যাদি। ৪. স্নায়ুবিক উত্তেজনা প্রশমনকারী মাদকদ্রব্য : জায়া জিপাম, নাইট্রাজিপাম ও ক্লোর ডায়াজিপোক্সাইড ইত্যাদি। ৫. বিভ্রম সৃষ্টিকারী মাদকদ্রব্য : ক্যানাবিস গাজা, হাশিশ, মারিজুয়ানা ও ভাং ইত্যাদি। ৬. নাসিকা রন্ধ্রে গ্রহণযোগ্য মাদকদ্রব্য : এরোসোল্স, লাইটার ফ্লুইড, বার্ণিল রিমোভার, নেলপালিশ রিমোভার, পেইন্ট থিনার, স্পট রিমোভার, ক্লিনিং সল্যুশনস্, গুল ইত্যাদি।

সবচেয়ে কমন ড্রাগসঃ ১.হেরইনঃ দাম ৫০-১৫০ টাকা পুরিয়া,৬০০-৮০০ টাকা গ্রাম। কেজি ৫০,০০,০০০-১ কোটি। ঢাকার কয়েকটা বড় স্পট (মাদক বিক্রির জায়গা) হল- আগারগাও বি.এন.পি. বস্তি, টঙ্গি ব্রিজ, সিটি পল্লি, চৌদ্দটুলি, মহাম্মদপুর টাউন হল। ২.ফেন্সিডিল দাম ৫০০-৮০০ টাকা। ঢাকার বড় বড় স্পট নাসির স্পট, কমলাপুর, মিরপুর স্টেডিয়াম।

তবে বেশিরভাগ সময়ে মোবাইলের মাধ্যমে বিক্রি হয়। ৩.পেথেডিনঃ দাম ১০০-৪০০ টাকা। সহায়ক হিসেবে সেডিল,এভিল ব্যবহার করা হয়। বিক্রয় স্থান বিভিন্ন ফা্রমেসি এবং চাঙ্খারপুল। ৪.গাজাঃ দাম ১০ টাকা পোটলা, ৫০-১০০ টাকা রোল, ১৫০০-২৫০০ টাকা কেজি।

বিক্রয় স্থান কাওরান বাজার,কমলাপুর রেল লাইন,এবং প্রায় সব বাজার ও রেল ক্রসিং এ। ৫.মদঃ দেশি মদের দাম,৫০০-১০০০ টাকা(কেরু),লোকাল-৮০-১০০ টাকা,বিদেশি-১৮০০-৪০০০ প্লাস, উপজাতি-২০০-৫০০ টাকা। বিক্রয় স্থান-ঢাকার বিভিন্ন লাইসেন্স করা দোকান যেমন-ওয়াইন ইম্পেরিয়াম,মগবাজার,ওজি করনার,গুলিস্তান ও বিভিন্ন বার এ। বনানি ও এয়ারপোর্ট এ কাস্টমস এর কর্মকর্তারাও বিক্রির সাথে জড়িত। ৬.ইয়াবাঃ দাম ২৫০-৫০০ টাকা।

আগে বিদেশ থেকে আস্লেও এখন দেশে তৈ্রি হয়। মুলত ফোনে বিক্রি হয়। ঢাকায় আসে সাধারনত টেকনাফ- কক্সবাজার হয়ে,বার্মা থেকে। ৭.বারবিচুরেটসঃ বিভিন্ন ঘুমের ওষুধ যেমন- সেডিল, ট্রিপ্টিন, ডরমিকপ, ইপাম ইত্তাদি। দাম-পাতা ৫-১০০ টাকা।

৮.এক্সটেসিঃ এর দাম অনেক। প্রতিটা ট্যাব্লেট প্রায় ১৫০০ টাকার উপরে। বানিজ্যিকভাবে এখনো চালু হয় নি। তবে অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর থেকে নিয়ে আসে। ৯.মরফিনঃ প্যাথেডিনের মত সিরঞ্জ দিয়ে পুশ করে নিতে হয়।

সাধারনত ডাক্তাররা লোকাল এনেস্থেশিয়া হিসেবে ব্যাবহার করে। খুব ধ্রুত নার্ভ সাপ্লাই শান্ত করে দিতে পারে। সাধারনত ইন্ডিয়া থেকে ইম্পোর্ট করা হয়। তবে গনস্বাস্থ হতে জি-মরফিন নামে একটা প্রোভাইড করা হয় সরকারি হাস্পাতাল্গুলাতে। দাম-১২০ টাকা।

এছাড়াও রয়েছে চরস, ভাং, আফিম, ড্রাগন বল, ডেন্ড্রাইট ইত্যাদি আরো হাজারো ড্রাগস। (এই অংশটুকু ব্লগার কবি রাজ আঙ্কেল সং্যোজন করেছেন। তাকে অনেক ধন্যবাদ) DRUG DEPENDENCE.অর্থাৎ মানুষ বার বার কেন নেশার দিকে ছুটে যায়?DRUG ADDICTIONকে আমরা সংজ্ঞায়িত করি এইভাবে,"recurring compulsion by an individual to engage in some specific activity, despite harmful consequences to that individual’s health, mental state or social life." এটা ২ প্রকার। ১. Physical Dependence(characterised by symptoms of withdrawal). ২. Psychological Dependence(simply addiction). অর্থাৎ DRUG DEPENDENCY তখনই develop করবে যখন অই ড্রাগের অনুপস্থিতিতে তার withdrawal symptoms থাকবে। withdrawal symptoms গুলো হল- Confusion Continuing to use drugs even when health, work, or family are being harmed Episodes of violence Hostility when confronted about drug dependence Lack of control over drug abuse - being unable to stop or reduce alcohol intake Making excuses to use drugs Missing work or school, or a decrease in performance Need for daily or regular drug use to function Neglecting to eat Not caring for physical appearance No longer taking part in activities because of drug abuse Secretive behavior to hide drug use Using drugs even when alone কারন ও প্রতিকারঃ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন হাতের কাছে খুব সহজেই বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাওয়া যায় বিধায় এটাও মাদকাসক্তের একটা বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত।

তাই দেশের অভ্যন্তরে মাদকদ্রব্যের অনুপ্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে পাশাপাশি মাদক সংক্রান্ত আইন যুগোপযোগী করা এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। প্রতিরোধঃ ১. সচেতনতা বাড়ানো: জীবনের যে কোনো ঘটনা বা সাইকো থেরাপির মাধ্যমে এই সচেতনতা আসতে পারে। ২. নিজেকে মূল্যায়ন করার চিন্তা ও আচরণের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তির কি কি দক্ষতা আছে এবং সে আরো কি অর্জন করতে পারে, সে সম্পর্কে নিজেকে মূল্যায়ন করতে পারেন। ৩. সামাজিক ও পরিবেশগত পুনর্মূল্যায়ন: ব্যক্তির সামাজিক ও পরিবেশগত কোন পরিস্থিতি মাদকাসক্তির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় তা পুনর্মূল্যায়ন করে অবশ্যই পরিহার করতে হবে। ৪. আত্মস্বাধীনতা: অল্প মাত্রায় আসক্ত আচরণ পরিবর্তনের পর ব্যক্তির মধ্যে স্বাধীন অনুভূতি ও আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে এবং ব্যক্তি পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য নিজেকে উপযুক্ত মনে করবে।

৫. সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি: ব্যক্তি সামাজিক দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে সামাজিক কার্যক্রম দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করবে। ৬. মাদকের চিন্তা প্রতিস্থাপন: মাদকদ্রব্য গ্রহণের পরিবর্তে অন্য যেসব জিনিস ব্যক্তির ভালো লাগে, যেমন বাগান করা, খেলাধুলা বা অন্যান্য কাজে নিজেকে নিযুক্ত করা। ৭. বাহ্যিক উপাদান নিয়ন্ত্রণ: যে সব জিনিসে বা দ্রব্যের উপস্থিতিতে ব্যক্তির মাদক নেয়ার চিন্তা আসে সে সব জিনিস পরিহার উপেক্ষা করা। ৮. নিজেকে উপহার দেয়া: ব্যক্তি যখনই মাদক গ্রহণ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে সক্ষম হচ্ছে তখনই নিজেকে নিজে কিছু উপহার দেয়া। ৯. সাইকোথেরাপির রাষ্ট্রীয় সাহায্যে নাটকীয় প্রশস্তি লাভ সাইকোথেরাপির মাধ্যমে অনেক সময় ব্যক্তির মধ্যে এক ধরনো নাটকীয় প্রশান্তি পেতে দেখা যায়।

১০. যারা দীর্ঘদিন মাদক ব্যবহার থেকে মুক্ত থাকতে পেরেছে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব্ব অটুট রাখা এবং যেসব মনোবিজ্ঞানী তাকে সাহায্য করতে পারেন তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা। প্রতিটি ড্রাগস স্পটের মালিকরা মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে থাকে কতৃপক্ষকে। আমাদের পরিচিত একজন মন্ত্রিকে ৬০ লক্ষ টাকা দামের গাড়ি কিনে দেয়া হয়েছে গত মাসে। নাম উল্লেখ করলাম না। আর পুলিস থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন ডিলারদের টাকায় কিনা এসি ছেড়ে।

বলতে পারেন আমাদের ভবিষ্যতকে আমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছি??  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।