পঁচা মানুষ বিউটি পার্লার পারসোনার ভিডিও কেলেঙ্কারির ঘটনায় পুলিশের গাফলতিতে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যেতে বসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে পারসোনার কিছু অপতৎপরতার কথাও উঠে আসছে বিভিন্ন মহল থেকে।
এ কাজে একটি সংবাদপত্রকে ব্যবহার করছে পারসোনা এটি মঙ্গলবার সকাল থেকেই হয়ে উঠেছে টক অব দ্য টাউন।
সংবাদপত্রটি তার মঙ্গলবারের সংখ্যায় পারসোনার একটি বড় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে এবং পাশাপাশি পারসোনার পক্ষ নিয়ে একটি খবরও প্রকাশ করেছে। যাতে পারসোনার একটি বিবৃতির বরাত দিয়ে বলার চেষ্টা করা হয়েছে সিসি ক্যামেরায় ধারন করা ভিডিও চিত্রের তথ্য মিথ্যা।
বিষয়টি বিভিন্নমহলে সমালোচনার ঝড় তুলেছে। তাদের বক্তব্য পারসোনার বনানী কার্যালয়ে ঘটে যাওয়া ভিডিও কেলেঙ্কারিকে নিয়ে সোমবার পুলিশ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তগুলো কোনোভাবেই খবরে প্রাধান্য না দিয়ে কেবল পারসোনার বিবৃতিভিত্তিক একটি প্রতিবেদন বিষ্ময়কর।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ পারসোনার বিষয়টি সংবেদনশীল মনে করে সোমবার একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং তার আগে পারসোনার শাখাটিতে অভিযান চালিয়ে যে হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয় তা থেকে ভিডিও ফুটেজ গায়েব করা হয়েছে এমন অভিযোগে ক্লোজ করে গুলশান থানার এসআইকে।
এদিকে, পারসোনার যে কক্ষটিতে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা পাওয়া গেছে সে কক্ষে এটি থাকার কথা নয় বলে জানিয়েছেন বিউটি পার্লার ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা।
তারা মনে করছেন পারসোনা যে কাজটি করেছে তা গোটা বিউটি পার্লারের জন্যই ক্ষতিকর।
এ অবস্থায় পুরো ব্যবসাটিকে একটি সমন্বয়ের মধ্যে আনার কথা ভাবছেন তারা।
অন্যদিকে, পারসোনার ভিডিওফুটেজ কেলেঙ্কারি ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে উঠে আসছে আরো নানা অভিযোগ। গ্রাহকরা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটি গলাকাটা দাম নিলেও কাজের ব্যাপারে মান বজায় রাখেনা। কমদামি প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার এবং বিভিন্ন সার্ভিসের নাম করে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
পারসোনার ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ সাইট-ফেসবুক টুইটারের আসতে থাকে হরেক রকমের অভিযোগের কথা।
অনেকেই এর একটি সুরাহাও চাইছেন। ব্লগগুলোতে পোস্ট দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তভিত্তিক খবর।
ঘটনা ঘটার দুইদিন পর কেন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। চলছে নানা-গুঞ্জন, মুখরোচক আলোচনাও। পারসোনার সত্ত্বাধিকারী কানিজ আলমাসের হাত অনেক লম্বা এবং তাকে কোনো কিছুতেই আটকানো যাবে না, এমন কথাও বলা হচ্ছে।
ঘটনার পরদিন অভিযোগকারী নারী চিকিৎসকের গুলশান থানায় আসার কথা থাকলেও তিনি না আসায় এ আলোচনা নতুন রং পায়। অনেকেই বলতে শুরু করেন কানিজ আলমাস বড় অংকের টাকা খরচ করে বিষয়টি সুরাহা করে ফেলেছেন। ১৫ লাখ টাকা লেনদেনের খবরও চাউর হয়।
তবে আলোচনা ঘুরে যায় গুলশান থানার এসআই মাসুদ রায়হানকে ক্লোজড করার ঘটনায়। সূত্র মতে, পারসোনা থেকে তারই জব্দ করা কম্পিউটার হার্ডডিস্ক ও সিসিক্যামেরা থেকে কনটেন্ট গায়েব হয়ে যাওয়াতেই ক্লোজড হয়েছেন মাসুদ।
সোমবার গঠন করা হয়েছে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটিও। বলা হচ্ছে বিষয়টি সংবেদনশীল বিবেচনায় এ তদন্তের উদ্যোগ।
উল্লেখ্য ওই নারী চিকিৎসকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে পারসোনার বনানী ১১ নম্বর সড়কের শাখায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ও হার্ডডিস্ক ও ক্যামেরা জব্দ করে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ও পরবর্তীতে ক্লোজ হওয়া গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রায়হান ঘটনার পরদিন শনিবার জানিয়েছিলেন অভিযোগকারী থানায় এসে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করবেন।
কিন্তু সন্ধ্যা সাতটার দিকে একই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহআলম জানান, জব্দ করা হার্ডডিস্কে কোন আপত্তিকর জিনিস পাওয়া যায়নি।
তাই অভিযোগকারী থানায় আসবেননা এবং এ ব্যাপারে তাঁর (অভিযোগকারি) কোন অভিযোগও নেই ।
কিন্তু ঘটনার দুইদিন পর সোমবার পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের পর বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি হার্ডডিস্কে কোন কিছু না-ই পাওয়া যায় তাহলে এ তদন্ত কমিটি কেন?
তারা মনে করছেন পুলিশের এ ঢিমেতালে চলার কারনে অভিযুক্ত পারসোনা কর্তৃপক্ষ পার পেয়ে যেতে বসেছে।
এদিকে বিউটি পার্লারের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্তাব্যক্তি বলেন, এ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অতিসংবেদনশীল। তাই এখানে সিসি ক্যামেরা যেমন অত্যন্ত জরুরি তেমনি তা কোথায় বসানো হবে তাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তারা বলেন, সাধারণত অভ্যর্থনা, হিসাব শাখা ও যেখানে ক্লায়েন্টের গহনাসহ মূল্যেবান জিনিসপত্র রাখা হয় সেসব স্থানে এ সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। কিন্তু পারসোনার যে কক্ষটিতে সিসি ক্যামেরা পাওয়া গেছে সেখানে এটি থাকার কথা নয়। তাই এর উদ্দেশ্যে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। একই সাথে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তও দাবি করেন এ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা।
অপরদিকে পারসোনায় নিয়মিত রূপচর্চা করতেন এমন অনেকেই এখন সন্দেহের দোলাচলে পড়েছেন।
তারা সঠিক ঘটনা দ্রুত জানতে চান। এজন্য তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান তারা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।