Click This Link
পিজালক্ষ্মী। নামেই রেস্টুরেন্ট। ভেতরে সাতটি খুপরি। সেখানে টেবিল-চেয়ার পাতা। প্রতিটিতেই কপোত-কপোতী।
আলো-আঁধারির মাঝে ভালবাসায় ভাসছে তারা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে এ খেলা। এখানে প্রবেশ করতে হয় টিকেট নিয়ে। প্রতি ঘণ্টার জন্য টিকিটের দাম ৩০০ টাকা। ঘণ্টা পেরিয়ে ১ মিনিট বেশি হলেই দিতে হয় আরও ২০০ টাকা।
পিজালক্ষ্মীর এ ধরনের সময়-মাপা ভালবাসা কেনাবেচার কথা পুরনো ঢাকার বাসিন্দাদের সবার জানা। আর তাই পিজালক্ষ্মীকে এখন আর এ নামে ডাকে না কেউ। সবাই বলে ‘সেক্স হোম’। ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সবসময় চলে এ লেনদেনের বাণিজ্য। সেক্স বাণিজ্য।
পিজালক্ষ্মী’র বাইরে লেখা চাইনিজ রেস্টুরেন্ট কাম ফাস্টফুড। কিন্তু চাইনিজ খাবার বা ফাস্টফুডের কোন কিছুই মেলে না এখানে। তারপরও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এখানে ভিড় লেগেই থাকে। ভেতরে সিট ফাঁকা থাকে না এক মুহূর্তের জন্যও।
পিজালক্ষ্মী পুরনো ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের প্রধান সড়কের পাশেই অবস্থিত।
এ রেস্টুরেন্টের পাশে আছে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় খদ্দেরের অভাব হয় না সেখানে। অবশ্য পিজালক্ষ্মীতে ঢোকার প্রধান শর্ত, সঙ্গে নারী থাকতে হবে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ- সবকিছুই জানে সূত্রাপুর থানা পুলিশ। তাদেরকে মাসিক মাসোহারা দিয়েই অসামাজিক কার্যকলাপের এ ব্যবসা চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে।
গতকাল দুপুরে একজন তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে পিজালক্ষ্মী রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে ম্যানেজার জিয়া জানতে চান কয় ঘণ্টা থাকবেন। প্রতি ঘণ্টা ৩০০ টাকা করে দিতে হবে। ১ ঘণ্টার ১ মিনিট বেশি হলেই আরও ২০০ টাকা দিতে হবে। তার শর্তে রাজি হওয়ার পর ম্যানেজার একটি স্টিলের টোকেন ধরিয়ে দেন। ম্যানেজারের সহকারী দেখিয়ে দেন সরু একটি সিঁড়ি।
ওই সিঁড়ি চলে গেছে গোপন খুপরির দিকে। খুপরির ভেতরে সব কিছু আবছা। সেই আবছা আলোর মধ্যে টেবিল-চেয়ারে আলিঙ্গনাবদ্ধ অবস্থায় বসে আছে অনেক নর-নারী। গাখোলা পোশাক সকলেরই। কিন্তু কারও দিকে কারও তাকানোর সময় নেই।
টাকা উসুল করতেই ব্যস্ত সবাই। কিছুক্ষণ সেখানে থেকে নিচে নামতেই ম্যানেজারের প্রশ্ন, এত অল্পতেই হয়ে গেল? তিনি টাকা দাবি করলেন ৫০০। অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কারণ কি জানতে চাইলে পুলিশের ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দিলেন। বললেন, খারাপ কাজ করবেন আর টাকা দেবেন না? কোথা থেকে এসেছেন? বেশি কথা বললে পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেবো। ৫০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে রেস্টুরেন্টের ছবি তোলার সময় সন্দেহ হয় ম্যানেজারের।
ভেতরে ডেকে নিয়ে প্রশ্ন করেন, আপনারা কারা? কেন ছবি তুলছেন? পরিচয় দেন। অনেক কষ্টে তাকে বোঝানো হলো এ রেস্টুরেন্টটি খুবই ভাল লেগেছে তাই ছবি তুলে রাখা হচ্ছে। এর আগে ম্যানেজার জিয়া বলেন, এটা খুবই নিরাপদ স্থান। এখানে কোন ভয় নেই। পিজালক্ষ্মীর মালিক কয়েকজন।
তারা থানা কিনে রেখেছেন। সূত্রাপুর থানার ওসিকে মাসে ১ লাখ টাকা করে দেয়া হয়। পিজালক্ষ্মীর আশপাশের কয়েকজন দোকান মালিক জানান, এখানে নানা ধরনের অপকর্ম হয়। ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা ও গয়না কেড়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে অনেকবার। এখানে এসে যেহেতু তারা অবৈধ কাজ করে তাই তারা কোন প্রতিবাদ করে না।
সূত্রাপুর থানার ওসি নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সেখানে এসব কাজ চলে সেটাই আমাদের জানা ছিল না। টাকা নেয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। তিনি বলেন, আমার এলাকায় যত আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ হতো তা সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পিজালক্ষ্মীতে আমরা শিগগিরই অভিযান চালাবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।