"বিশ্ব জোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র" ঘটনা ১
গতবার রমজান এর সময়কার কথা। প্রথম রমজানের দিন ইফতারের দিন বাকি সব জিনিসপত্রের সাথে ১০ টাকার কাচা মরিচ কেনার জন্য জিগাতলা কাচা বাজারে গেছি। বাজার করে বাসায় আসলাম। মোটামুটি তিন দিনের মধ্যে আর কাচা মরিচ কিনতে হয় নি।
রমজানে সাধারনত দিনে বের হতাম না।
বের হলে একসাথে ইফতারি করে বের হতাম। অনেক ছোটভাই এবং বন্ধুরা একসাথে মিলে চা-সিগারেট খেয়ে বাসায় ফিরতাম। ৪-৫ রোজার ঘটনা হবে। এক ক্লোজ ছোটভাই এর সাথ নতুন একটি মেয়ে সার্কেলে দেখে কিছুটা অবাক হয়ে যাই। রমজানের মধ্যেও তার পোশাক আশাক কে আর যাই হোক শালীণ বলা চলে না।
বাসায় ফিরে রাতে ফোন দিলাম সেই ছোট ভাইকে। জিজ্ঞেস করলাম। "এই রমজানের মধ্যে তুই এই উশৃঙ্খল মাইয়্যা কইত্যা নিয়া আইলি?" তার সোজা সাপ্টা উত্তর - " ভাই, ফেসবুকে পরিচয়। সেইখান থিকাই প্রেম। আইজই প্রথম দেখা হৈছে।
বাসায় আব্বু-আম্মু কেউ আছিলো না। তাই বাসায় লইয়া আইছিলাম। ......" এরপর দুই তিন দিন মেয়েটিকে আমাদের আড্ডায় আমি দেখেছি। এরপর তাকে আর দেখতে পেলাম না। সেই ছোট ভাইটিকে জিজ্ঞেস করলাম - "কিরে, তুই একা কেন?"।
সে বলল - "কেন ভাই?"। তোর লগের "পাইটু" কই? সে বলল- "কি যে কন ভাই। যেই মাইয়্যা প্রথম দিন দেহা কইর্যাই বিছনায় আহে ওর লগে আর কয়দিন সময় কাটামু?"
কিছুক্ষন ভাবলাম যে কি হচ্ছে এসব। ১০ টাকার মরিচ কিনলেও শেষ হতে তিন দিন লাগে। আর যৌনতা এত সস্তা? প্রেম এর আয়ুষ্কাল এত কম?
ঘটনা ২
এক বন্ধুর সাথে গত কয়েকদিন ধরে এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ের ফেসবুকে মন দেয়া নেয়া চলছে।
ঘটনার ব্যপ্তিকাল সর্বোচ্চ ২০ দিন। মেয়েটিও আবার আমাদেরই আরেক বন্ধুর জিএফ এর বান্ধবী। আজ (২২.৩.১৩) প্রথম দিন তারা দেখা করবে। রাতে জার্নি করে এসেছে তাই সে কিছুটা বিধ্বস্ত এবং ক্লান্ত। বন্ধু দেখা করতে যেতে চাইল বসুন্ধরা সিটিতে।
মেয়ে খুব কেয়ারিং! তার বিদ্রোহী উত্তর - "না জান তুমি এত কষ্ট করে জার্নি করে এসেছ। তুমি তো অনেক টায়ার্ড তাই না। তার চেয়ে আমিই তোমার বাসায় আসি। " বোঝা গেল বন্ধুর ও সায় আছে ব্যাপারটিতে। যেই কথা সেই কাজ।
মেয়ে বন্ধুর বাসায়, কিছুক্ষন "একান্ত ব্যক্তিগত" সময় কাটানো। তারপর বিদায়।
সন্ধ্যায় বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম - "আচ্ছা তুই কি এই মাইয়্যাটার ব্যাপারে সিরিয়াস?" তার উত্তর ছিল - "দোস্ত, সারাদিনে আর ফোন টোন দেই নাই। " আমি বললাম - "তাইলে?" তার উত্তর - "আমি কি করমু ক, ও ই তো বাসায় আইতে চাইল"।
বলে রাখা ভাল যে মেয়েটা এসেছিল সুদুর নারায়ণগঞ্জ থেকে।
মনে প্রশ্ন জাগে, এতটা অসেচেন একটা মেয়ে কি করে হয়? অন্য কোন বিপদ ও তো ঘটতে পারত। চেনা নেই জানা নেই শুধুমাত্র ভার্চুয়াল পরিচয় থেকেই প্রথম দিনে সাক্ষাতে বিছানায় গিয়ে শেষ হয় যে সম্পর্ক সেটা কি আদৌ ভালবাসার সম্পর্ক অথবা স্রেফ জৈবিক চাহিদা মেটানোর তাড়না থেকে গড়া সম্পর্ক?
আমাদের অবিভাবকদের (মা-বাবা-বড় ভাই-বড় বোন)আরো সচেতন হওয়া উচিত। আদরের সন্তান/ভাই-বোন কোথায় যায় কি করে নিয়মিত সে সব খোজ খবর রাখা উচিত। ক্লাশের নাম দিয়ে বের হয়ে সে কি আদৌ ক্লাশ করছে কিনা জানা উচিত। আর অবশ্যই যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে চাতূর্যতার পরিচয় দেয়া উচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।