আমার আমি......
কিছুদিন যাবত অস্থিরতায় ভুগতেছি। কেনো ভুগতেছি জানি না তবে মাঝে মাঝেই এ সমস্যায় পড়ি। হয়তো সমস্যাটা আমাকে খুব একটা সমস্যা করতে পারে না তবুও অস্বস্তি গ্রাস করে ফেলে যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়াটাও কখনো কখনো সৌভাগ্য মনে হয়। আজকের বিকালটা আমাকে একটু বেশিই অস্থির করে তুলেছিলো। আসলে এটা অস্থিরতা নাকি অন্য কিছু জানি না।
যেকোনো সৌন্দর্য দেখলে অন্যরকম একটা অনুভুতি কাজ করে সেই অনুভুতির নাম জানা নেই তবে পরিচয় আছে। আমি আর সে প্রায়শই, একসাথে অনেকটা সময় কাটায় একান্তে। সে আমার ভালো লাগা মন্দ লাগাকে ভ্রুক্ষেপ করলেও আমি তাকে উপেক্ষা করতে পারি না।
নাহ!! হচ্ছে না হবে না। আমি একটা আশার গল্প লিখতে চেয়েছিলাম, লিখতে চেয়েছিলাম ভালোবাসার গল্প।
কিন্তু আমার কলম বারংবার হতাশার দিকে চলে যাই। রাজ্যের নৈরাশ ভর করে গল্পটিতে। এভাবে আশার গল্প প্রেমের গল্প লেখা যাই না। কষ্টের কথা যত সুন্দরভাবে উপাস্থাপন করা যায়, বিষন্নতাকে যত সুন্দরভাবে বর্ণনা করা যায়, আনন্দ হাসি খুশিকে সেইভাবে যায় কিনা জানি না। গেলেও আমি পারি না।
আমার জীবনের গল্পে হতাশা অল্পই তবে গল্প লিখতে গেলে কেনো সেটা গ্রাস করে বুঝতে পারি না।
বিষন্নতার উদ্ভব সৌন্দর্যে, হোক সেটা কুৎসিত কিংবা আলোকজ্জল আনন্দে। আমি আনন্দ খুঁজে ফিরছি, যদিও সেটা আমার কাছে ধরা দিয়ে আছে তবুও। আমি আসলে কি খুঁজছি হয়তো নিজেও জানিনা। শুন্যতার কাছে ধরা দিয়ে বসে আছি তাকে পাশ কাটাতে যেয়ে।
তবে কি আমি ব্যর্থ! আসলে সফলতা কিংবা ব্যর্থতা কি? আমি কি সেটা জানি? অনেক চিন্তা করেও বের করতে পারলাম না, আমি আসলে জানি কিনা। ব্যর্থতা তো তাকে বলা যায় যদি কেউ সফলতার জন্য উন্মুখ থাকে, আমি সফলতা কিংবা ব্যর্থতা কোনোটির জন্যই উন্মুখ নই। নিজেকে সপে দিয়েছি সমান্তরাল জীবনের পথে, যাক না সে তার ইচ্ছামতো।
আচ্ছা আমি গল্প লিখতে যেয়ে হাবিজাবি লিখছি কেনো? আমিতো একটা প্রেমের গল্প লিখতে বসেছিলাম, লিখতে বসেছিলাম একটি স্বপ্নের গল্প, আশার গল্প কিংবা প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া কোনো ভালোবাসার গল্প। যেখানে একজন স্বপ্নভুক তরুন কিংবা তরুনী থাকবে, তাদের স্বপ্নের উপসংহার মিলিত হবে অন্য একটা স্বপ্নে।
আমি জানিনা পারবো কিনা কারন স্বপ্ন দেখা সহজ, কিন্তু দেখানো কঠিন।
আমি একজন স্বপ্নভুক তরুনের গল্প লিখতে পারি। আদৌ তার স্বপ্ন আছে কিনা আমার সন্দেহ আছে তবুও গল্প লেখার প্রয়োজনিয়তা তাকে আমার কলমের ডগাই এনে দিয়েছে। বেচারা!! তাকে নিয়ে সন্দেহ করার বহু কারন আছে। সে আশাবাদি কিংবা হতাশাবাদি কোনো দলেই পড়ে না।
তবে তাকে আমরা হঠাৎবাদী দলে ফেলতে পারি নিশ্চিন্তে। কারন সে হঠাৎ হঠাৎ অনেক বেশি আশাবাদী হয়ে উঠে আবার পরক্ষনেই হয়তো হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। কখনো কখনো তুমুল উৎসাহে তাকে দেখা যেতে পারে আনন্দ উৎসবে আবার কিছুক্ষন পরে তাকে শোকে ব্যুহমান একজন ক্লান্ত পথিক মনে হতে পারে। কখনোবা বন্ধুদের আড্ডার মধ্যমনি সে আবার কখনোবা একাকি নিরালায় স্তব্ধতা ছড়ানো একমাত্র ব্যক্তিও সে হতে পারে। তাই তাকে আমাদের কোনো দলে না ফেলায় যুক্তিসঙ্গত হবে।
কারন প্রতিটা ব্যক্তিই জন্ম থেকেই সতন্ত্র, চিন্তার মিল কিংবা অমিল ছাড়া।
এবার তাকে একটা প্রেমে ফেলানো যায়। যদিও এর আগে সে প্রেমে পড়েছে কিনা আমি জানি না তবে এতটুকু বলতে পারি সে প্রতিনিয়ত প্রেমে পড়ে। যখন সে স্কুল কিংবা কলেজে তখনো তার অনেকগুলা প্রেয়সী ছিলো, পাঠকেরা আমাদের তরুনকে ভুল বুঝবেন না তার প্রেম ছিলো একতরফা। সুন্দর কোনো চোখে চোখ পড়লে সে আশ্রয় খোঁজায় লিপ্ত হতো।
কখনো সে সফল ছিলো কখনোবা ব্যর্থ তবে এটা প্রচলিত সফলতা কিংবা ব্যর্থতা নয়। তার সফলতা কিংবা ব্যর্থতা ছিলো এক পাক্ষিক। কিংবা দ্বিপাক্ষিক ও হতে পারে তবে সেটা ঐ চোখের আশ্রয়েই সীমাবদ্ধ ছিলো। এই সীমাবদ্ধতা কাটাতে যে তার ইচ্ছা কখনোই ছিলোনা সেটা নয়, আমাদের তরুনটি ভালো মানুষ হলেও মানুষ। তারো কাম আছে, লোভ আছে, জিঘাংসা আছে।
তবে সেগুলো ক্ষনজন্মা বিধায়, প্রচলিত সফল সে কখনোই হয়নি বা হওয়ার চেষ্টাও সেভাবে করেনি। কিংবা তার চেষ্টাগুলো ছিলো তার কাম, লোভ, একাকিত্ত থেকে বাঁচার আকুলতার মত ক্ষনজন্মা। যা ঝরে পড়ে জন্মানোর কিছুক্ষন পরেই। মাঝে মাঝে সে এটা উপভোগ করত মাঝে এতে বিদ্ধ হয়ে তার কামের, লোভের মৃত্যু হত। কিংবা এখনো হয়।
ইদানিং, যৌবনের সায়াহ্নে এসে আমাদের তরুনটির পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য। তরুনটির পরিবর্তিত জীবন রুটিন আমাকে ভাবতে বাধ্য করছে কোনো ঘটনা আসছে। হতে পারে সেটা মঙ্গলজনক কিংবা অমঙ্গলময় বা হতে পারে পূর্বের ন্যায় ক্ষনজন্মা। যেখানে আগে তার দিন শুরু হত রাত্রি ১২টার পরে ইদানিং সেখানে তার রাত্রি শুরু হয়। আর দিন শুরু হয় সেই ভোরে যা তার কাছে অচেনা ছিলো।
আমার বিশ্বস্ত পর্যবেক্ষন শক্তি প্রথম দিনেই সতর্ক করে দিয়েছিলো, আমাদের তরুনটি নতুন কোনো চোখ খুঁজে পেয়েছে। যাতে সে আশ্রয় নিতে পারে অনায়াসে। তবে এবার তাকে অন্যন্যবারের মত ভাবলেশহীন মনে না হয়ে বরং বেশি আগ্রাসী মনে হচ্ছিল যেটা আমাকে একটু চিন্তিত করেছিলো কারন এটা আমাদের চিরপরিচিত তরুনটির সাথে যায় না। সে যেন এবার দৃড়প্রতিজ্ঞ আশ্রিত চোখযুগলকে হারাতে না দেওয়ায়।
ধুর!! এইটা কোনো গল্প লিখলাম অনেক কষ্টে।
এর মাঝে প্রেম কোথায়? ভালোবাসা কোথায়? এটাতো একটি তরুনের জীবনের পোষ্টমর্টেম হিসাবে চালিয়ে দেওয়া যায় অনায়াসে। নাহ, গল্প লেখা আমার দ্বারা হবে না। বিশেষ করে আশার গল্প ভালোবাসার গল্প, স্বপ্ন আঁকিয়ে সবুজ ঘাসের ঘ্রাণ নেওয়ার গল্প। তবে আবার কেনো জানি মনে হচ্ছে এটা হইতোবা ভালোবাসার গল্প হয়ে গেছে, হয়ে গেছে কোনো প্রেমের গল্প। এর পিছনে অদ্ভুত যুক্তি দাঁড় করাতে হচ্ছে, আবার আমার কাছে সেটা অদ্ভুত ও ঠেকছে না।
মনে হচ্ছে এটাই তো প্রেম। না পাওয়ার তীব্রতা, আশ্রয় খোঁজার আকুলতা এটার নামই তো ভালোবাসা। আশ্রয় পেয়ে গেলে কি প্রেম থাকে? জানি না জানতেও ইচ্ছা করে না। এতো জেনে হবে কি। তার থেকে বরঞ্চ তরুনটির জন্য শুভকামনা থাকতে পারে, সে যেন শেষ পর্যন্ত খুঁজে পায় তার পরম আরাধ্য আলোকজ্জল তারাময় সেই চোখ যার মাঝে নিজেকে সপে দিয়ে সে নিশ্চিন্তে বহুরূপী স্বপ্ন আঁকতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।