তামাক সেবন কবে কোথায় প্রথম শুরু হয়েছিল আমার জানা নেই। তবে জানা যায় আতি প্রাচীন কাল থেকেই এর প্রচলন শুরু হয়েছিল। "হুক্কা" তামাক সেবনের আদি একটি সৌখিন মাধ্যম। বয়ষ্কদের কাছ থেকে জেনেছি আগেকার দিনে কারো ঘরে "হুক্কা" ছিল না এটা ভাবা যেত না। কোন সামাজিক বা সংষ্কৃতিক আচার অনুষ্ঠানে "হুক্কা" ছিল অন্যতম একটি উপাদান।
খাবার শেষে বা আলাপ চারিতার ফাঁকে আয়েশি ভঙ্গিমায় বসে "হুক্কা" সেবন ছিল বাঙ্গালী সংষ্কৃতির একটি অন্যতম অংশ। তবে তখনও এটা শুধুমাত্র বয়োজেষ্ঠরাই সেবন করত। বয়সে নবীনরা অবশ্য যে সেবন করত না তাও নয়। কৃষক হাল চাষ করতে মাঠে যাবার বেলা লাঙল, জোয়ালের সাথে "হুক্কা" ও তামুকের ডিবিটা সাথে নিতে একটু্ও ভুল করত না। এমনকি আগেকার রাজা বাদশাদের মধ্যেও আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে "হুক্কা" সেবন করার প্রচলন ছিল বলে জানা যায়।
আমার বাবাও "হুক্কা" সেবন করতেন। বাড়িতে মা গোলপাতা, গুড় দিয়ে তামাক বানাতেন। ঐ তামাক জ্বালানোর টিকিটাও মা তৈরি করতেন। আমি তাকে প্রায়ই এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতাম। বাবার ছিল দুটি "হুক্কা"।
একটি হাতে নিয়ে সহজেই বহন করা যেত। যখন তিনি বাড়ির বাহিরে ক্ষেত দেখতে যেতেন তখন এটা ব্যবহৃত হত। আর একটি ছিল হাতলওয়ালা প্লাষ্টিকের লম্বা নল লাগানো। ঘরে বসে তিনি এটা ব্যবহার করতেন। তামার তামাক সেজে দেয়া ছিল আমাদের অন্যতম একটি কাজ।
খাবার শেষে বা বাড়িতে কোন পঞ্চায়েতি বিচার বৈঠক বসলে এ দায়িত্বটা আমার আরেকটু বেড়ে যেত। বাবা যখন গুড় গুড় শব্দে তামাক সেবন করতেন তখন অন্যরকম এক ভাল লাগার অনুভুতি জন্মাতো। আজ প্রায় ১৫ বছর বাবা তামাক সেবন ছেড়ে দিয়েছেন। হুক্কা গুলোও এখন আর ঘরে নেই। সারা গ্রাম ঘুরে একজন হুক্কাসেবী পাইনি।
কিছুদিন আগে হঠাৎ একটি গ্রাম্য বাজারে হুক্কা সেবন করতে দেখে মনে পড়ে গেল সে ফেলে আসা দিনগুলোর কথা। শখের ক্যামেরাটা সঙ্গেই ছিল। তাদের অনুমতি নিয়ে ঝ্টপট কয়েকটি ছবি তুললাম। প্রিয় বন্ধুরা ছবিগুলোর একটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আপনাদের অনুভুতি জানাবেন কিন্তু।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।