আর্থিক এবং শারীরিক ভাবে সামর্থ থাকলে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য পবিত্র হজ্ব পালন করা একটি ফরয কাজ। আমাদের দেশে দেখা যায় বৃদ্ধকালে হজ্ব পালনের হিড়িক পড়ে বেশী (হজ্বের পর দুনিয়ার মজা ছেড়ে দিতে হবে এই জন্য দেরী?) অথচ পৃথিবীর কোন দেশেই এত বৃদ্ধ বয়সে হজ্ব পালন করতে দেখা যায় না। হজ্ব পালনের উপযুক্ত বয়স (শারীরিক ভাবে) ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। কেননা পবিত্র হজ্বে প্রচুর শারীরিক শ্রম হয়। প্রতিদিনই প্রচুর হাঁটাহাঁটি করতে হয়।
এইজন্য পবিত্র হাজী গণের জ্ঞাতার্থে হজ্বে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে কিছু জানানো প্রয়োজন বোধ করছি :
১। টিকাদান ও হেলথ কার্ড সংগ্রহ
পবিত্র হাজী গণের যার যার জেলার সিভিল সার্জন অফিসে প্রয়োজনীয় টিকা দিয়ে ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হেলথ কার্ড সংগ্রহ করা জরুরি। কেননা এটা ছাড়া হজ্বে যেতে দেয়া হয় না। সৌদি আরবের প্রচন্ড রৌদ্র তাপে ও লক্ষ লক্ষ লোকের ভিড়ে মেনিনজাইটিজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে- যা মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এইজন্য মেনিনজাইটিজ এর টিকা (মেনসি-ভ্যাক্স) চামড়ার নিচে দিতে হয়।
সা¤প্রতিককালে ইনফ্লুয়েঞ্জাতে অনেকে আক্রান্ত হয়ে হজ্বের কার্যক্রম চালাতে দারুন সমস্যার সম্মুখীন হন। এইজন্য ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা (ভ্যাক্সি-গ্রিপ) মাংসে দিতে হয়। এই টিকা ২টি সরকারী ভাবে বিনামূল্যে দেওয়া হয়। এছাড়া রোগীর ইসিজি, বুকের এক্স-রে, ব্লাড গ্র“প, প্রস্রাব পরীক্ষা, রক্তের সুগার পরীক্ষা ও রক্তচাপ মাপা হয়। বিভিন্ন সিভিল সার্জন অফিসের অদূরে ক্লিনিক প্যাথলজির বাহারী ব্যানারে বিভ্রান্ত না হয়ে সরকারি ঐ হাসপাতাল থেকেই সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্নমূল্যে নির্ভুল পরীক্ষাদি করিয়ে নেওয়া উচিত।
২। শারীরিক ফিটনেস দেখুন
উপরোক্ত পরীক্ষা গুলো করে কোন সমস্যা পেলে দেশে থাকতেই ডাক্তার দেখিয়ে তার দ্রুত ব্যবস্থা নিন ও ডাক্তারী পরামর্শ মেনে চলুন। হাটুর সমস্যা, কোমড়ের সমস্যা থাকলে পবিত্র হজ্বে চলাফেরা ও হাঁটাহাঁটিতে দারুন সমস্যা হবে। দীর্ঘদিনের জ্বর,কাশি, শরীরে রক্তপাত, নাড়ির গতি কম-বেশী, রক্তচাপ কম-বেশী, রক্ত শূন্যতা, জন্ডিস, মানসিক অসুস্থ্যতা, দৃষ্টি শক্তির সমস্যা, শ্রবণ শক্তির সমস্যা, হার্নিয়া-হাইড্রোসিল, মারাত্মক হৃদরোগ, অনিয়মিত ডায়াবেটিস, পেটের অনিয়ন্ত্রিত পীড়া- এই সব কিছু ঠিক-ঠাক করে কয়েকদিন বিশ্রাম নিয়ে শরীরকে ফিট করে নিন।
৩।
ডাক্তারী প্রেসক্রিপশন সহ জরুরী ঔষধ সাথে নিন
যারা দীর্ঘদিন ধরে ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা অন্যকোন রোগের জন্য আমরণ ওষুধ খেয়ে চলেছেন তারা সেই সব ওষুধগুলো অবশ্যই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন সহ সাথে নিয়ে যাবেন-(মনে রাখবেন অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে যে, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোন ওষুধ নিতে দেয়া হয় না)।
৪। মন ভালো তো দেহ ভালো
আমাদের চিকিৎসা শাস্ত্রে একটি কথা আছে- ‘ম্যান সানা ইন করপোর সানো’ (মন ভালো থাকলে দেহ ভালো থাকে)। পবিত্র হজ্বে গমন ইচ্ছুক হাজীদের মনে তিনটি আনন্দ থাকে- (১) বিমান থেকে নেমেই পবিত্র সৌদি আরবের পবিত্র মাটিতে পা রাখা (২) নিজ চোখে আল্লাহর ঘর ‘কাবা শরীফ’ দেখা (আল্লাহকে দেখা যায় না, অথচ তার ঘরকে নিজের চোখে দেখে ঈমান শতভাগ মজবুত হয়)। (৩) পবিত্র মদিনায় আমাদের ইহকাল ও পরকালের অনন্ত আপনজন বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ (সা এর রওজা শরীফের সামনে গিয়ে সালাম দেওয়া (সারাজীবন হাজার হাজার মাইল দূরে থেকে মিলাদ পড়েছি- ‘ইয়া নবী সালাম আলাইকা, ইয়া রাসূল সালাম আলাইকা, ইয়া হাবীব সালাম আলাইকা, সালাওয়া তুল্লা আলাইকা), আজ সেই সালাম দিচ্ছি- সেই মহামানবের, অনন্ত আপনজনের কাছে এসে (সোবহান আল্লাহ)।
পবিত্র হাজীগণ এখন থেকেই এই তিনটি আনন্দে বিভোর থাকেন, দেখবেন জীবনের শ্রেষ্ঠ আনন্দের অপেক্ষায় আপনার মন ভরে গেছে। আর ‘মন’ যার ভালো তার ‘দেহ’ ভালো থাকে ৭০%। অর্থাৎ আপনার ৭০% ডাক্তারী আপনার নিয়ন্ত্রনে চলে আসছে, আপনি ইনশাল্লাহ সৌদি আরবে মনের পবিত্রতায় সুস্থ্য থাকবেন।
৫। হঠাৎ ঠান্ডা পরিহার করবেন
সৌদি আরবে প্রচন্ড গরম।
এই গরম থেকে হঠাৎ এসেই অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি বা এসি পরিবেশে ঢুকবেন না। প্রচন্ড গরম বা প্রচন্ড ঠান্ডার হঠাৎ পালাবদলে আপনার শরীর খারাপ হয়ে যেতে পারে। গলা ব্যাথা, মাথা ব্যাথা, দাঁত ব্যাথা, কান ব্যাথা, সাইনোসাইটিজ, টনসিলাইটিজ, ব্রংকাইটিজ, হাঁপানী, সর্দি-কাশি, প্রচন্ড শরীর ব্যথা, এমনকি ভাইরাস জ্বর-এ
আক্রান্ত হতে পারেন। তাই সাবধান। সাথে করে বাংলাদেশ থেকে ফুল হাতা জামপার, সেলাই বিহীন সাদা ভারী চাদর, গলার মাপলার সঙ্গে নিয়ে নিবেন, যাতে প্রয়োজনে অতি ঠান্ডায় ব্যবহার করতে পারেন।
খেয়াল রাখবেন, সাফা-মারওয়ায় সাই করার সময় অনেকে ঠান্ডা পরিবেশের জন্য মাটির নিচে এসি পথে দৌড়া-দৌড়ি করেন, পড়ে সেখান থেকে এসে অনেকেই ঠান্ডা লাগার জটিলতায় ভুগেন। এইজন্য মাটির উপরে সাই করাই সঠিক।
৬। বিমানে কানের সমস্যা
সৌদি আরবে যেতে অনেক উচু দিয়ে কয়েক ঘন্টা ধরে বিমানে যেতে অনেকের কানে সমস্যা হয়, বায়ূমন্ডলের চাপ কমে যাওয়ার কারণে। কান ব্যথা করে, মাথা শোঁ-শোঁ করে, কানে শব্দ শুনে নাঃএই জন্য হেড ফোন বা কানে এয়ার ফোন দিয়ে রাখুন বা কানের প্যাক ব্যবহার করুন, মুখে চুুইংগাম চিবুতে থাকুন,অনেকটা ভালো থাকবেন ।
নাক ও কানের সমস্যা থাকলে বিমানে ওঠার আগেই জাইলোমেটাজলিন, আফরিন অথবা নোকন নাকের ড্রপ চার ফোটা করে দুই নাকে দিয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে নিন।
৭। খাদ্য গ্রহণে সাবধান
সৌদি আরবে হালাল খাবারে ভরপুর কিন্তু আমাদের বাঙ্গালীদের কাছে সেখানের অনেক খাবারই অচেনা, নতুন এবং অনভ্যস্ততার জন্য পেট ফাপা, বমি, পাতলা পায়খানা, ক্ষুধামন্দা, অস্বস্থিকর মনে হতে পারে। তাই সেখানে বাঙ্গালী হোটেল খোঁজ করে দেশী পরিচিত খাবার খান। রাস্তাঘাটের খোলা খাবার খেয়ে অনেকেই পবিত্র স্থান গুলো অপবিত্র করে নিজের ও অন্যের ইবাদতের ক্ষতি করেন।
তাই রসনাকে কঠোরভাবে সংযত রাখুন। সেখানে ফল খুব সহজলভ্য এবং দামও কম। ফল স্বাস্থ্য ভাল রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই সেখানে প্রচুর ফল খাবেন। অনেকেই পায়খানা কসার জন্য কাঁচা খেজুর খান।
কিন্তু অন্যদের বেলায় এই কাচা খেজুর পাতলা পায়খানা করে। তাই কাঁচা খেজুর খেতে সাবধান। সকালের নাস্তা খাবেন ফযরের নামাযের পর পরই, দুপুরের খাবার খাবেন জোহরের নামাযের পর পরই, রাতের খাবার খাবেন এশার নামাযের পর পরই। মনে রাখবেন প্রিয় নবীজীর (সা রওজা মোবারক ও মক্কার পবিত্র স্থানগুলোতে যেতে অপেক্ষাকৃত কম ভিড়ে সুযোগ নিতে চাইলে ফজরের ২ ঘন্টা পর, জোহরের ১ ঘন্টা পর ও এশার নামাযের ২ ঘন্টা পর সুযোগ নিন।
৮।
ঘুম
সৌদি আরবে হজ্বের সময়ে শান্তিমত ঘুমের অপেক্ষাকৃত পর্যাপ্ত সময়টুকু হচ্ছে ফযরের নামাজের পর পরই নাস্তা শেষে ঘুম দেয়া। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন। ঘুম বাদ দিয়ে অতি সওয়াবের লোভে দিনের পর দিন ইবাদত করতে গিয়ে হঠাৎ মাথা ঘুরিয়ে, ব্লাড প্রেসার বেড়ে ষ্ট্রোক বা মুর্ছা যেতে পারেন। তাই প্রতিদিন ৬ ঘন্টা অন্তত একটানা ঘুমাতে হবে। সৌদি আরবে বাসা থেকে মসজিদুল হারামে গিয়ে অনেকের নামাজ পড়তে অবস্থানের কারণে বেশ হাঁটতে হয় (কখনো কখনো ১ থেকে ২ মাইল পর্যন্ত হাঁটতে হয়)।
তাই আসরের নামাজের সময় বাসা থেকে এমন প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন যেন আসর, মাগরিব, এশার নামাজ শেষে রাত্রের খাবার সেরে বাসায় যেতে পারেন। পাহাড়ের ঢালে বা উচুতে বাসাগুলোতে আসা-যাওয়ায় (ফিতারা-হাজী) ব্যাপক শারীরিক শ্রম হয়- তা খেয়াল রাখবেন।
৯। প্রচুর পানি পান করুন
সৌদি আরবে গিয়ে পবিত্র হাজীগণ একটি সত্য দারুন ভাবে অনুভব করেন ‘পানির অপর নাম জীবন’। প্রচুর হাঁটাহাঁটি ও শারীরিক শ্রমে প্রচুর ঘাম ঝরে শরীর থেকে।
এইজন্য প্রচুর তৃষ্ণা পায়। মহান আল্লাহ পাক সেই জন্য এইখানে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ‘আবে জমজম’ এর পানির। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন এই পানি জীবাণুমুক্ত এবং মিনারেল ওয়াটারের গুণ সম্পন্ন এবং তা শরীরে শক্তি যোগায় (সোবহান আল্লাহ)। এই পানির শেষ নাই, লক্ষ লক্ষ হাজীগণ এই পানি পান করছেন প্রাণ ভরে। সুতরাং কিছুক্ষণ পর পরই প্রয়োজনে প্রচুর পানি পান করুন।
তাছাড়া সৌদি আরবে স্বাভাবিক পানির মূল্য অনেক বেশী, ফলের জুসের চেয়েও পানির দাম বেশী। সেজন্য বাসা থেকে আসার সময় খালি বোতল নিয়ে আসবেন। ইবাদত শেষে ‘আবে জমজম’ এর পানি বোতলে ভরে বাসায় নিয়ে যাবেন।
১০। ভিড়ে পায়ের সেন্ডেলের মায়া ত্যাগ করুন
সৌদি আরবে হজ্বের সময় পুরুষদের এমন কোন জুতা পরা যাবে না যা পায়ের বড় হাড় গুলো ঢেকে দেয়।
ফলে দুই ফিতার সেন্ডেল ব্যবহার করতে হয়, তাও আবার জুতার ব্যাগ সাথে নিয়ে সেটার মধ্যে জুতা ঢুকিয়ে জুতার বাক্সে রাখতে হয়। সেই বাক্সের নম্বরটিও মনে রাখতে হয়। ইবাদত শেষে, প্রচন্ড ভিড়ে, শয়তানকে কংকর নিক্ষেপের সময় অনেকের পায়ের সেন্ডেল ছিড়ে যেতে পারে, বা সেন্ডেল হারিয়ে যেতে পারে। এমতাবস্থায় ভিড়ের মধ্যে মাথা নিচু করে সেন্ডেল খুজতে যাবেন না, তাহলে ভিড়ে পাদপিষ্ঠ হয়ে মৃত্যু অবধারিত। আপনার জীবনের চেয়ে এক জোড়া সেন্ডেল এর দাম কি বেশী? তাই বাংলাদেশ থেকে কম দামের স্পঞ্জের সেন্ডেল ২/৩ জোড়া সাথে নিয়ে যাবেন।
মনে রাখবেন আফ্রিকান দেশগুলো নাগরিকরা বিশাল দেহের অধিকারী, অত্যন্ত শক্তিশালী ও কিছুটা গায়ের জোড় খাটানো স্বভাবের, তাদের ধারে কাছে থাকলে চাপ খেতে পারেন বা আঘাত পেতে পারেন। তাই ভিড়ে তাদেরকে দেখলে নিরাপদ দূরত্বে থাকবেন।
১১। আনুষঙ্গিক টিপস
(ক) সৌদি আরবে রাস্তা পার হতে সাবধান। রাস্তার মাঝখানে গাড়ি দেখে ফেললে সেখানে ঠান্ডা মাথায় সোজা দাঁড়িয়ে থাকুন, কিন্তু হঠাৎ সেখান থেকে দৌড়া-দৌড়ি করবেন না।
(খ) বাইরের চত্বরের ভূগর্ভস্থ বাথরুম গুলোতে পানির টেপে পানির বেগ অত্যন্ত বেশী থাকে। না জানার কারণে টেপে জোড়ে চাপ দিলে প্রচন্ড বেগে পানি এসে জামা-কাপড় ভিজানো সহ ঠান্ডা সর্দি লাগাতে পারে। কথাটি মাথায় রেখে টেপে খুব আস্তে চাপ দিন। (গ) উমরা ও হজ্বের সময় আতর, সুগন্ধি তেল, সুগন্ধি সাবান ব্যবহার করবেন না, লোম উঠানো, চুল কাটা, নখ কাটা, সেইভ করা নিষেধ। ইহরাম বাধা অবস্থায় শরীরের ময়লা দুর করা যাবে না।
কোন প্রাণী বা পতঙ্গ মারা যাবে না এবং জোড়ে শরীরে চুলকানোও যাবে না। তাই দেশে থাকতেই যারা দীর্ঘদিন ক্রিমিনাশক বড়ি খান না, খেয়ে যাবেন (এলবেনডাজল বড়ি চুষে খাবেন একটি ভরাপেটে) এবং ইহরাম বাধার আগেই শরীরের চুলকানি রোগ থাকলে প্রয়োজনমত এন্টি হিসটামিন জাতীয় ওষুধ (এলাট্রল, এটরিজিন, ডেজলর ইত্যাদি) খেয়ে নিবেন। (ঘ) পাতলা পায়খানা যাদের প্রায়ই হয় অথবা আইবিএসএ আক্রান্ত তারা এন্টিনিল, মেট্রোনিডাজল, সিপ্রোফ্লক্সাসিন বড়ি সাথে নিয়ে যাবেন (অবশ্যই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন সহ) (ঙ) স্বামী-স্ত্রী বা দুই আত্মীয় এক সাথে হজ্বে গেলে ইবাদত শেষে হারিয়ে গেলে কোথায় মিলিত হবেন- তা আগে-ভাগেই নির্ধারণ করে নেবেন, যাতে ভিড়ে হারিয়ে গেলেও কিছুক্ষণ পর দুজনের আবার দেখা হয়। নতুবা সাথীর টেনশনে ব্লাড প্রেসার ও মানসিক চাপ বেড়ে শরীর অসুস্থ হয়ে ইবাদত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (চ)শয়তানকে কংকর নিক্ষেপের পর তাবুতে ফেরার সময় বাম দিক দিয়ে ফিরবেন, খবরদার ডান দিক দিয়ে ফিরবেন না, এতে প্রচন্ড ভিড়ে পড়বেন।
তাই বাম দিক দিয়ে ‘মসজিদে খাইফ’ এর সামনে দিয়ে টিনসেডের নিচ দিয়ে হেঁটে তাবুতে ফিরবেন। তাবুর নম্বর ও পিলার নম্বর অবশ্যই মনে রাখবেন নতুবা একই রকম হাজার হাজার তাবু দেখে আপনি হারিয়ে ফেলবেন আপনার তাবু কোনটি?
বাংলাদেশ হজ্ব মিশনের মেডিক্যাল টিম
বাংলাদেশ থেকে এ বছর লক্ষাধিক পবিত্র হাজী হজ্ব করতে সৌদি আরব যাচ্ছেন- তারা অসুস্থ হয়ে গেলে তাদের জরুরি চিকিৎসার জন্য এ বছর সরকার ৫৪ জন ডাক্তারের সমন্বয়ে ১০৯ জনের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করেছেন। এই টিমে ডাক্তার ছাড়াও থাকছে নার্স, ফারমাসিস্ট ও এমএলএসএস। এই ১০৯ জনকে তিন ভাগ করে ৩ সময়ে সৌদি আরব পাঠানো হচ্ছে- প্রথম টিম ২৭ সেপ্টেম্বর, দ্বিতীয় টিম ১৩ই অক্টোবর, তৃতীয় টিম ৩০ অক্টোবর যাবে। সৌদি আরবের তিনটি স্থানে এই মেডিক্যাল টিম কাজ করবে- মক্কায়,মদিনায় ও জেদ্দায়।
বাংলাদেশে হাজীদের সেখানে আউট ডোর চিকিৎসা প্রদান ও জরুরি চিকিৎসা শেষে প্রয়োজনে এম্বুলেন্সে করে সৌদি আরবের বিভিন্ন বড় বড় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা থাকবে। বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হবে। এই মেডিকেল টিমে সেনাবাহিনীর ১৪ জন ডাক্তার, সরকারি ২৮ জন ডাক্তার ও ইসলামিক মিশনের ১২ জন ডাক্তার রয়েছেন।
কুমিল্লার সৌভাগ্য এবার- কুমিল্লা সিএমএইচের ডাক্তার লে:কর্ণেল মো: ফারুক আহমেদ ভূইয়া এ মেডিকেল টিমের দলনেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, কুমিল্লা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. মো: আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ও কেন্দ্রীয় কাউন্সিলর ডা. মো: আতোয়ার রহমান বাংলাদেশ হজ্ব মিশনের ‘মক্কা মেডিকেল টিমের’ সদস্য হিসেবে সেখানে কাজ করবেন এবং হোমনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চর্মবিশেষজ্ঞ ডা. জয়নাল আবেদীন ‘মদিনায় মেডিকেল টিমে’ কাজ করবেন।
কুমিল্লার হাজীগণ সুস্থ্য থাকুন সেই দোয়া করি।
তবুও অসুস্থ হয়ে গেলে মক্কায়, মদিনায় বা জেদ্দায় যে কোন মেডিকেল টিমে গিয়ে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিন।
সবচেয়ে আশ্চার্য্যরে বিষয় হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক কাবা শরীফকেই পৃথিবীর কেন্দ্র হিসেবে বানিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন সেখানে পৃথিবীর চৌম্বক শক্তি শূন্য। স্বভাবতই সেখানে মানুষের স্বাস্থ্য ভাল থাকার কথা, যেটুকু খারাপ হয় তা আমাদের আচরণগত ও অসাবধানতার জন্যই। তাই ইবাদত করুন নিজেকে সুস্থ্য রেখে এবং সুস্থ্য দেহে ফিরে আসুন বাংলাদেশে- সেই কামনাই করি।
আল্লাহ হাফেজ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।