আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"বারমুডা ট্রায়াঙ্গল"...পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রহস্য যা আজও অমীমাংসিত

সকল স্বপ্ন সত্য হবে- ছেড়েছি এই আশা, জরুরী নয় সব স্বপ্নই- সত্য রুপে আসা... 'বারমুডা ট্রায়াঙ্গল'। কম বেশি সবাই এই নামটির সাথে পরিচিত। এটি 'ডেভিলস ট্রায়াঙ্গল' নামেও পরিচিত। এটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম অংশে অবস্থিত একটি অঞ্ছল যেখানে একাধিক বিমান ও জাহাজ খুব রহস্যময়ভাবে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা আছে। অধিকাংশ মানুষই ব্যাপারটাকে 'প্যারানরমাল' অথবা 'এক্সট্রা-টেরেষ্ট্রায়াল' জাতীয় কিছু মনে করে থাকেন।

অবস্থানঃ এটির গণ্ডি বা সীমারেখা ফ্লোরিডা, বাহামা, এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ হয়ে পূর্ব-আটলান্টিক এর আযোরেস পর্যন্ত গেছে। এছাড়াও এর কিছু পয়েন্ট আটলান্টিক উপকূলে মিয়ামি, সান-জুয়ান, পুয়ের্তোরিকো-এর উপর দিয়েও গেছে। বাহামার দক্ষিন সীমানার কাছাকাছি ফ্লোরিডা উপকূলে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনাগুলো ঘটে থাকে। এই এলাকাটি জাহাজ চলাচলের জন্য পৃথিবীর অন্যতম একটি ব্যাস্ত এলাকা এবং বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট। উৎপত্তিঃ বারমুডা এলাকার অস্বাভাবিকতা এবং রহস্যজনকভাবে বিমান বা জাহাজের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার কথা সর্বপ্রথম 'এডওয়ার্ড ভ্যান উইঙ্কেল জোন্স' নামক একজন ব্যাক্তির দ্বারা ১৯৫০ এর ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়।

২ বছর পর 'Fate' ম্যাগাজিনে "Sea Mystery at Our Back Door" নামক একটি প্রবন্ধ প্রকাশ হয় যার মূল বিষয়বস্তু ছিলো 'বারমুডার রহস্যময় আচরণ'। 'ফ্লাইট ১৯'- একটি ২৭ সদস্য বিশিষ্ট আমেরিকান নেভি দল। যারা বারমুডার উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন। ১৯৬২ সনে আমেরিকার 'লিজিওন' ম্যাগাজিনের এপ্রিলে সংখ্যায় বলা হয়- 'ফ্লাইট ১৯' এর ফ্লাইট লিডারকে নাকি বলতে শোনা যায়- "আমরা পরিষ্কার সাদা পানিতে প্রবেশ করছি...এখানে অশুভ কিছু একটা হচ্ছে....কোন কিছু ঠিক মনে হচ্ছে না, আমরা জানিনা আমরা এখন কোথায়....পানির রং সবুজ, সাদা নয়"। পরে নেভির তদন্ত বোর্ডের কর্মকর্তারা নাকি দাবি করেন যে তাদের 'ফ্লাইট ১৯' মঙ্গল গ্রহে চলে গেছে।

তবে কারো বুঝতে বাকি থাকেনা যে এখানে 'সুপার ন্যাচারাল' কিছু একটা ঘটেছে। ১৯৬৪ এর ফেব্রুয়ারিতে 'ভিনসেন্ট গাডিস' নামক এক ব্যাক্তির একটি প্রবন্ধে বলা হয়_'ফ্লাইট ১৯' মুলত ভয়ানক বারমুডার অন্যান্য শিকারের মতই কেবল আরেকটি শিকার ছিলো মাত্র। পরবর্তী বছর তিনি তার প্রবন্ধটিকে সম্প্রসারন করে একটি বই বের করেন। যার নাম- "Invisible Horizons" সুপারন্যাচারাল বা অতিপ্রাকৃতিক ব্যাখ্যাঃ অনেক লেখকই বারমুডার রহস্যকে বিভিন্নরকম অশরীরী বা ভৌতিক যুক্তি দিয়ে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। সকল রকম ব্যাখ্যা এবং নানারকম উন্নত প্রযুক্তিও বারমুডার রহস্যকে ভেদ করতে পারেনি।

অনেকে মনে করেন এটা বিশ্বাসীদের জন্য একটি রাস্তা বা দেয়াল স্বরূপ যদিও ভূতাত্ত্বিকরা এটাকে বলে থাকেন শুধুমাত্র একটা প্রাকৃতিক বস্তু। অনেক লেখক ব্যাপারটিকে 'UFO'- ঘটিত ব্যাপার মনে করে নেন এবং হলিউডের শ্রেষ্ঠ পরিচালক 'স্টিভেন স্পিলবার্গ' তার সাইন্স ফিকশন ছবি 'ক্লোস এনকাউন্টা্রস অফ দা থার্ড কাইন্ড' -এ এই ধারনাটিকে ব্যাবহার করেন যা বহুল আলোচিত 'ফ্লাইট ১৯' এর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ৬টি বহুল আলোচিত বারমুডার শিকারঃ ১) 1945: Flight 19 (Bomber Squad Disappears, So Do Rescuers) ২) 1918: U.S. Battleship Goes Missing With 306 on Board ৩) 1948: DC-3 Commercial Flight Vanishes ৪) 1976: Panamanian Ship Trades Cargo for Mystery ৫) 1963: Something Smells Funny With the Sulphur Queen's Disappearance ৬) 1948: Star Tiger Drops Out of the Sky ........"বারমুডা ট্রায়াঙ্গল" পৃথিবীর খুব পুরনো একটি রহস্য। আজ অব্দি এই রহস্য, রহস্যই রয়ে গেছে। হলিউডে এ নিয়ে অসংখ্য মুভি তৈরি হয়েছে।

বারমুডা নিয়ে মানুষের আগ্রহ কখনই কমেনি বরং, দিন দিন আরও বেড়ে চলেছে। অনেকেই অনেকরকমভাবে এর ব্যাখ্যা দেয় কিন্তু সঠিক ব্যাখ্যা আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কখনো পাওয়া যাবে কিনা, কে জানে? কারন বিজ্ঞান এখনো অনেক কিছুরই জবাব দিতে পারেনি। এই ব্যাপারটাও হয়তো সেরকম কিছু। জরুরি নয় যে পৃথিবীর সব রহস্যেরই সমাধান হবে।

কিছু রহস্য,রহস্যই থেকে যাবে। মানুষ কেবল দূর থেকে তা দেখবে এবং ধারনা করবে। এর বেশি কিছু করা........থেকে যাবে সাধ্যের বাইরে। .......The true mystery of the world is the visible, not the invisible.-OSCAR WILDE ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.