আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রত্যাখ্যানে রায় বদলায় না: ট্রাইব্যুনাল

বুধবার জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রায়ের সূচনা বক্তব্যে ট্রাইব্যুনাল-২ এর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এ কথা বলেন।
বেলা পৌনে ১১টার দিকে সঙ্গী দুই বিচারককে নিয়ে এজলাসে বসেই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, কিছু প্রয়োজনীয় বিষয়ে তিনি কথা বলতে চান।
“যেদিনই ট্রাইব্যুনাল কোনো মামলা রায়ের জন্য রাখে, সেদিনই হরতার ডাকা হয়। আর সেই হরতালের অজুহাত ব্যবহার করে মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা আসেন না। তারা প্রতিনিধি পাঠান।

প্রতিনিধিরা আসতে পারলে তারা কেন আসতে পারেন না?”
রায় প্রত্যাখ্যান করে বক্তব্য দেয়া আদালত অবমাননারই নামান্তর বলেও উল্লেখ করেন এই বিচারপতি।  
তিনি বলেন, “রায়ে কেউ খুশি না হলে তারা এটাকে প্রত্যাখ্যান করেন। রায়ে কেউ সংক্ষুব্ধ হতে পারেন। কিন্তু রায় প্রত্যাখ্যান করা যায় না। এটা আদালত অবমাননার শামিল।


“আমরাতো এ দেশের মানুষ। রাতে টিভিতে দেখি, অনেকে ঘৃণাভরে রায় প্রত্যাখ্যান করেন”
ওবাদুল হাসান বলেন, রায় ‘ভ্রষ্ট’ হতে পারে। আর ভুল হয়ে থাকলে সর্বোচ্চ আদালতে তার প্রতিকারও চাওয়ার সুযোগ আছে।
“আমরা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক। রাগ, অনুরাগের ঊর্ধে উঠে রায় দিতে আমরা শপথ নিয়েছি।

সুপ্রিম কোর্ট থেকে আমরা এখানে এসেছি। সুতরাং রাগ অনুরাগের বশবর্তী না হয়ে আমরা রায় দেই। ”
ট্রাইব্যুনালে আসা সাক্ষ্য প্রমাণ দেখে ‘সামর্থ্য’ অনুযায়ী রায় দেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এমনকি আমাদের রায়ে ভুলও হতে পারে। সেটা সংশোধনের জায়গা উপরে। গাড়ি ভাংচুর বা প্রত্যাখান করে রায় বদলানো যায় না।


বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত সংবাদভিত্তিক আলোচনায় ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে বক্তব্যের বিষয়েও সতর্ক করেন এই বিচারপতি।
ওবায়দুল হাসান বলেন, “রাত যখন গভীর হয় তখন টকশো চালু হয়। সেখানে এমন কিছু প্রসঙ্গের অবতারণা করা হয়, যাতে মনে হয় তারা রায় পড়েননি। রায় না পড়েই মন্তব্য করেন।
“বিচারাধীন বিষয়ে কথা না বলাই ভাল।

বিচারকদের বিষয়ে অনেক কথা বলা হয়। কিন্তু জবাবে তারা কথা বলতে পারেন না। তাদের কথা বলার একমাত্র জায়গা এটা (এজলাস)। এই অর্থে তারা খুবই দুর্বল। এ কারণে রাস্তায় কথার জবাব দিতে পারি না।


“তবে বাংলাদেশের সীমানায় সে যত বড়ই হোক, আদালতের হাত তাকে জবাবদিহিতা করতে বাধ্য করতে পারে। এই কোর্ট সেই ক্ষমতা রাখে। সুপ্রিম কোর্ট সেই ক্ষমতা রাখে। ট্রাইব্যুনাল সেই ক্ষমতা রাখে। ”
ভবিষ্যতে আর রায়ের দিন হরতাল দেয়া হবে না এবং রায় প্রত্যাখ্যান করা হবে না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত এই ট্রাইব্যুনালের ছয়টি রায়ের মধ্যে প্রথমটি ছাড়া সবগুলো রায়ের দিনই বিচার ঠেকানোর শপথ নিয়ে সারা দেশে হরতাল ও সহিংসতা চালায় জামায়াতে ইসলামী।
প্রথম রায়ে জামায়াতের সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসি, দ্বিতীয় রায়ে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন, তৃতীয় রায়ে নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসি, চতুর্থ রায়ে আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড এবং পঞ্চম রায়ে গোলাম আযমের ৯০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ হয়।  
প্রথম রায় ছাড়া পরের প্রতিটি রায় প্রত্যাখ্যান করেও হরতাল করে জামায়াত। এর মধ্যে সাঈদীর রায়ের পর দেশজুড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সহিংসতা তাণ্ডবে নিহত হন ৭০ জনেরও বেশি মানুষ।  
গোলাম আযম ও মুজাহিদের রায়কে কেন্দ্র করে গত রোববার ধরে টানা তিন দিন ধরে হরতাল করছে জামায়াতে ইসলামী।

রায় প্রত্যাখ্যান করে তারা হরতাল ডেকেছে বৃহস্পতিবারও।
গোলাম আযমের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়ায় শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চও মঙ্গলবার সারা দেশে হরতাল করে। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গত ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছে তারা।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।