জীবনের প্রত্যেক প্রবাহ অমৃত চায়।
একাত্তরের পূর্ব পাকিস্তানের মান্যবর মেহমান!
প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মদ কসাই ইয়াহিয়া খান-
হাতে তার বরফ মেশানো ফেনায়িত শরাবের পাত্র;
ওষ্ঠে স্পর্শ করলেন বিচিত্র ভঙ্গীমায় এই মাত্র।
আসন্ন ভয়াবহ পরীক্ষায় উত্তম উর্ত্তীর্ণের লক্ষ্যে
চেয়ে আছে সুদূরের পানে ঘুমকাতুরে মদালস চোক্ষে।
অসুস্থ্য বয়োবৃদ্ধ ফিল্ড মার্শাল দুর্বিনীত আইয়ুর খান
দু’বছর আগে তুলে দিয়েছিলো পেয়ারের পাকিস্তান-
সামরিক শৃংখলে দৃঢ়তার সাথে সংযোজিত,
‘নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র’ পাক-ভূঁয়ে হবে সুসংহত;
কিন্তু, মৌলিক সমস্যা, জাতীয় ঐক্যের অর্থ-
সামরিক শাসকেরা অনুধাবনে হয়নি সমর্থ;
সেই সংকটকালে দুর্বৃত্তের দম্ভের তরঙ্গাঘাতে-
বাংলার বিক্ষুব্ধ খরস্রোত অনুকুলে আনতে
ক্ষমতার রাজনীতির খেলা, কতো প্রয়াস!
পরীক্ষা-নিরীক্ষার চক্র ক্রমশঃ হয়েছে হ্রাস।
তেইশ বছরের শোষনে হতাশাগ্রস্থ জনতা,
এক সূর্যের উত্তাপে উজ্জীবিত পরস্পর একতা
প্রকাশিল সুদৃঢ় বন্ধনে; বজ্রমুষ্ঠিবদ্ধ হাত
তীব্রতায় উদ্বেলিত শোষণের কাঠামো হবেই নিপাত;
রাজনৈতিক অগ্ন্যুদগার পুণর্জাগরিত আজ,
ভুল সংশোধনের বাইরে চলে গেছে বাঙ্গালী সমাজ।
এমন বেদনাঘন পরিস্থিতিতে উর্ধ্বাকাশের উড়তিপথে
ক্ষমতা দখলের দ্বিতীয় অভিষেক উদযাপনে হুইস্কি হাতে
আত্ম নিমগ্ন প্রেসিডেন্ট; নিরানন্দ, নিঃসঙ্গ, বিষন্নতায়
পেয়ালার পর পেয়ালা শরাব পানে শান্তনা পেতে চায়।
‘‘রাজনীতিবিদ ঘৃণ্য জীব’’ অথচ ঘন্টার পর ঘন্টা বিরামহীন
রাজনীতির প্রসঙ্গ নিয়ে কাটায়েছে অনেকদিন;
সর্বাত্মক আগাত হাননে কালক্ষেপনের ছিল প্রয়োজন;
তাই, ব্যর্থ বৈঠকের পর বৈঠক করেছে ,লক্ষ্য - উদ্দেশ্য সাধন।
নরাধম ইয়াহিয়া যেই পৌঁছিলেন পশ্চিম পাকিস্তান;
ইষ্টার্ন কমান্ড হেড কোয়ার্টারস পাঠায় এক ফরমানঃ
‘‘সর্ট দেম আউট’’- শুরু হলো বাঙালী নিধনযজ্ঞ, গণহত্যা!
জাগে রক্তের ভেতর তীব্র নাচন, উদ্বেলিত বাঙালী সত্ত্বা।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু প্রেরনার শ্লোগান
যুদ্ধ মাঠে উর্ধ্বমূখী মুক্তির জয়গান।
আমার সোনার বাংলা আামি তোমায় ভালোবাসি,
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় নিয়ে কাঁদি হাসি।
( ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ-এর ঘটনার প্রাকদৃশ্যাবলী )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।