ভাবতে ভালই লাগে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কে বলে আমাদের সোনার ছেলেরা কর্মঠ নয়। সারাদিন চাকুরীর পরিশ্রম করার পর ওভারটাইম হিসেবে চাদাবাজী কে বেছে নিয়েছে। এতে তো কোন অন্যায় হওয়ার কথা নয়। সারাদেশে কয়েক লক্ষ আওয়ামীলীগ ও বিএপি নেতকর্মী আছেন যারা এই পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন এবং বেশ সচ্ছলতার সাথেই তাদের পরিবার চালাচ্ছেন।
শুধু কি তাই! দেশের অধিকাংশ সংসদ সদস্য এই জাতীয় জীবিকার পক্ষে গোপন প্রচারনা চালিয়ে থাকেন। এখন ষোল কলা পূর্ন হতে শুধু বাকি ছিল এই জীবিকার সাথে আমাদের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনির একাত্মতা প্রকাশ করা। ভাই তৌফিক সেই কাজটিই তো করেছেন। কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতেই হবে। তিনি এই মহৎ দায়িত্ব পালন করেছন।
এইভাবে একদিন চাঁদাবাজ এবং পুলিশ মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে। মানুষে মানুষে এমন ভেদাভেদ আর থাকবে না।
কি তামসা !!!!
অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চাঁদাবাজি : রাজশাহীতে এসিসহ আট পুলিশ গ্রেপ্তার
কালের কন্ঠ (২৩/০৮/২০১১)
রাজশাহীতে চিকিৎসক পরিবারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে নগর পুলিশের (আরএমপি) সহকারী কমিশনার (সদর) তৌফিকুল ইসলামসহ আট পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সকালে পুলিশ লাইন থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন রাজপাড়া থানার ওসি মোকাররম হোসেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর এসি তৌফিকুলকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং অন্য সাত পুলিশকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত অন্য সাত পুলিশ সদস্য হলেন রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মতিউর রহমান ও মাসুদ রানা, কনস্টেবল আক্তার হোসেন, সুজন, আতিকুর রহমান, গোলাম মোস্তফা ও ইসলাম আলী।
রাজপাড়া থানার ওসি জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পরেই মামলা করা হয়েছে। অস্ত্রের মুখে এক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে বলে নগরীর লক্ষ্মীপুর মিঠুর মোড় এলাকার আধুনিকা ক্লিনিকের মালিক ডা. আবদুর রফিক বাসুনিয়া গত ১৭ আগস্ট নগর পুলিশের কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর পরই এই পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি মোকাররম জানান, গতকাল দুপুরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজত (রিমান্ড) চেয়ে অভিযুক্তদের মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে পাঠানো হয়। তবে ছুটি থাকায় রিমান্ড শুনানি না করে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আজ মঙ্গলবার শুনানি হতে পারে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে আরো নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
আমাদের রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রিজন ভ্যানে উঠানোর সময় ফটো সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে তাঁরা কেউ গামছা আবার কেউ গায়ের জামা খুলে মুখ ঢেকে ফেলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৭ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে এসি তৌফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে রাজপাড়া থানার এসআই মতিউর, মাসুদ ও পাঁচ কনস্টেবল ডা. বাসুনিয়ার লক্ষ্মীপুর মিঠুর মোড়ের বাসায় যান। পুলিশের এই দলটি তাঁর বাসায় অবৈধভাবে সংগ্রহ করা ভারতীয় রসুন মজুদ আছে দাবি করে তল্লাশি শুরু করে। কিন্তু রসুন না পেয়ে পুলিশ তাঁকে ও তাঁর স্ত্রী ডা. ফাতেমা জাহানারা, মেয়ে মারিয়া রফিককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। মোবাইল ফোনে কারো সঙ্গে কথা বলতেও দেওয়া হয়নি তাঁদের। কিছুক্ষণ পর ডা. বাসুনিয়ার ছেলে ফাহিম বাসায় ঢুকলে পুলিশ তাঁকেও জিম্মি করে।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে থাকা কথিত এক সোর্স ডা. বাসুনিয়াকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে এক লাখ টাকা দিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু বাসায় ছিল ১০ হাজার টাকা। বাকি টাকা সংগ্রহ করতে ডা. বাসুনিয়ার স্ত্রী ফাতেমা পুলিশের মাধ্যমে ফোন করেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের রংপুর শাখায় কর্মরত তাঁর ভাই রুহুল আমিন সিদ্দিকীকে। বোনের বিপদের কথা শুনে রুহুল আমিন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের রাজশাহী শাখায় ফোন করে তাঁর সহকর্মী অসীম কুমার দাসকে ৬০ হাজার টাকা জোগাড় করে দিতে বলেন।
এরপর এসআই মাসুদ ডা. বাসুনিয়ার ছেলে ফাহিমকে তাঁর মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের রাজশাহী শাখায় যান।
অসীম কুমার ৬০ হাজার টাকা তুলে দেন ফাহিমের হাতে। এরপর ফাহিম এটিএম বুথ থেকে আরো ৩০ হাজার টাকা তোলেন। বাসায় ফিরে ফাহিম মোট এক লাখ টাকা পুলিশের হাতে তুলে দেন। টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার সময় পুলিশ সদস্যরা সাদা কাগজে ডা. ফাতেমার স্বাক্ষর নেন। পরে ওই সাদা কাগজে লিখে নেওয়া হয় ডা. ফাতেমা পুলিশের ওই সোর্সের কাছে ২০ হাজার টাকার রসুন বিক্রি করেছেন।
এজাহারে আরো বলা হয়, রাত ৮টার দিকে ডা. ফাতেমা তাঁর আরেক ভাই মাসুদুর রহমান সিদ্দিকীকে ফোন করে পুরো ঘটনাটি জানান। মাসুদ বিষয়টি জানান পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কার্যালয়ের স্টাফ অফিসার পদে কর্মরত তাঁর বন্ধু আবদুস সবুরকে। এরপর সবুর বিষয়টি মহানগর পুলিশ কর্মকর্তাদের জানান।
উল্লেখ্য, ঘটনার পর রাত ২টার দিকে অভিযুক্ত এসি তৌফিককে অব্যাহতি এবং অন্যদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়। এ ছাড়া পুলিশের চাঁদাবাজির ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়।
ওই কমিটি গত শনিবার সকালে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেয় রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার এম ওবাইদুল্লাহর কাছে।
ওই দিনই পুলিশের দুই উপপরিদর্শক ও পাঁচ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ১৫ দিনের মধ্যে স্থানীয়ভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সহকারী কমিশনার তৌফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।