পৃথিবীতে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যে কখনো নিদ্রাহীনতায় ভোগে নাই। এটি নিঃসন্দেহে একটি যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা যা ভুক্তভোগীরাই ভালো বলতে পারবেন।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন সুস্বাস্থের জন্য কমপক্ষে ৫-৬ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। কেউ কেউ কম ঘুমিয়েও ভালো থাকতে পারেন আবার কারো ঘুম আবার খুব বেশি। এই বেশি ঘুমানো কিন্তু স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকার।
এবার দেখে নেয়া যাক এর ক্ষতিকর দিকগুলো :
>> বিষন্নতা বা উদ্বেগ গ্রাস করে।
>> অলসতা কোনো কাজ করতে দিতে চায় না।
>> মেজাজ খিটখিটে হয়
>> ধৈর্য্যর অভাব দেখা দেয়।
>> কাজে মন বসে না।
উল্লেখিত কারণগুলো কিন্তু একটি মানুষের কর্মক্ষমতা অনেকাংশই হ্রাস করে যা আমরা ঠিক অনুধাবন করতে পারি না।
অন্যদিকে যারা সুনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘুমিয়ে অভ্যস্ত তাদের জীবন যাত্রায়ও অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন-
>> স্বাভাবিকভাবেই তারা হোন কর্মঠ।
>> উচ্চাকাঙ্খা থাকে যা তাকে উপরে তুলতে সহায়তা করে।
>> আত্মতৃপ্তি তার জীবনকে সুখী ও সমৃদ্দ করতে সহায়তা করে।
>> এরা অধিক মাত্রায় বন্ধুবৎসল হয়ে থাকেন।
>> কাজে কর্মে স্বতষ্ফূর্ততা থাকে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো অনিদ্রা কেন হয় ? অনিদ্রার নানা রকম কারণ রয়েছে।
>> সংসারিক ঝামেলা
>> শারীরিক ব্যথা
>> হাঁপানি
>> শ্বাসকষ্ট
>> পুরনো কাশি
>> আবহওয়ার পরিবর্তন
>> অধিক মাত্রায় চা কফি পান
>> দিনে বেশি ঘুম
>> সিগারেট সেবন
>> যে-কোনো বেভারেজ সেবন
>> ব্যথা নাশক টেবলেট
>> উচ্চ রক্তচাপ।
অনেকে আমরা ঘুমের ঔষধ খেয়ে এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে চাই যা এক অর্থে আমাদের ভয়ঙ্কর ক্ষতি করে। ঔষধ খেলে শরীরের রক্ত কণিকা তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।
একটা পর্যায়ে তা আরো আপগ্রেড করতে হবে। যেমন ধরুন : আপনি ঘুমের জন্য রাতে ১টা করে হিসটাসিন টেবলেট খেতে শুরু করলেন। একটা পর্যায়ে আপনার শরীর কিন্তু আর ১টা হিসটাসিনে সন্তুষ্ট থাকবে না। সে চাইবে আরো আপনিও আপনার দেহের দাস হয়ে আরো বেশি করে হিস্টাসিন খেতে শুরু করলেন যার ফলাফল আর যাই হোক পজিটিভ কিছু হবে না। অথচ একটু চেষ্টা করলে আপনি নিজেই কিন্তু পারেন নিদ্রার সাগরে ডুব দিতে।
কিছু অসুখ আছে যেমন উচ্চ রক্তচাপ, খুশখুশে কাশি, শারীরিক ব্যথা কিংবা হাঁপানি যেগুলো হলে অতি অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। এছাড়া মনোস্তাত্বিক কারণেই কিন্তু অনিদ্রা বেশি হয়। এসব থেকে মুক্ত থাকতে হলে আপনি নিুলিখিত বিষয়গুলো অনুসরণ করে দেখতে পারেন।
>> ঘুমতে যাবার আগে মুক্ত বাতাসে ২০-৩০ মিনিট হাটুন।
>> সম্ভব হলে হালকা গরম পানিতে শরীর মুছতে পারেন।
>> যোগ ব্যায়াম করে দেখুন। এতে মন ও শরীরের মাঝে এক অদ্ভুত সামঞ্জস্য তৈরি হবে।
>> জোরে জোরে শ্বাস নিন এবং ছাড়ুন। এ প্রক্রিয়া ৫-১০ মিনিট করতে পারেন।
>> মেডিটেশন করুন
>> একটি বই নিয়ে বিছানায় যেতে পারেন
>> ক্যাসেট প্লেয়ার লো ভলিউমে ছেড়ে দিন।
তবে ভুলেও ওয়াকম্যান কানে লাগাবেন না।
>> ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ খান। এটা কমপক্ষে আধঘণ্টা আগে করুন।
>> সন্ধ্যার পর চা কফি পান করা বাদ দিন।
>> অতিরিক্ত ধূমপান বা এলকোহল অনিদ্রার কারণ হলে তা ছাড়–ন।
একবারে নয়, আস্তে আস্তে।
>> ঘুমুতে যেয়ে আগামীকালের কাজের লিস্ট করতে থাকুন।
>> ঘুমাবার কক্ষে নীল রঙের ডিমলাইট জ্বালান। এটা আরামপ্রদ পরিবেশ তৈরি করবে।
>> রাতে দয়া করে লোভে পড়ে ভুড়িভোজ করবেন না।
>> ক্যলসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ শাক সবজি খান।
>> সর্বোপরি কারো সাথে ঝগড়া-বিবাদ বা মনোমালিন্য এড়িয়ে চলুন।
ভাবছেন এতসব কিভাবে মেনে চলবেন ? উপরের অংশগুলো আবার পড়ে দেখুন। এক নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন কোন কাজটি আপনি করতে অক্ষম। স্বাভাবিক সব অভ্যাস একদিনে হবে না।
আস্তে আস্তে যখন দেখবেন ভালো ঘুম হচ্ছে তখন আপনি নিজেই দেখবেন জীবনটা কত অর্থবহ। প্রতিটি সকাল আপনার জন্য বয়ে আনবে নতুন দিনের সুবাস। প্রিয় পাঠক, একবারও কি ইচ্ছে হয় না সে স্বাদ আস্বাদনের ?
সূত্রঃনিদ্রাহীনতা: বাঁচার উপায় কি? নিদ্রাহীনতা: বাঁচার উপায় কি? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।