আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চকের ইফতারি খাইবেন................................এদিকে আহেনদি

একটু ওয়েট করেন আইতাছি, ইমার্জেন্সি কাম পইরা গেছে................................................................................................ ....................................................................................................... ....................................................................................................... ....................................................................................................... ....................................................................................................... .........................................................................। আইয়া পরছি ভাই। যাউকগা যা কইতাছিলাম হেডলাইন দেইখাই বুজবার পারতাছেন যে আইজকা পুরান ঢাকার ইফতারি কোপাইছি। কাহিনী লেংটা কইরা(খুইলা ) কওয়ার আগে একটু পিছন থেকা কই। জীবনে বহুত চকে গেসি কিন্তু আজিব ব্যাপার হইল কখনই চকে ইফতারি করি নাই।

হেই ছোডত্তে রমজান আইলেই টিভি তে যেই জিনিষটা দেখতাম হেইডা অইলো চকবাজার এর ইফতারি। পয়লা রমজানে চান দেখা মিস গেসে কিন্তু খবরে আর পেপারে চকবাজারের ইফতারির খবর মিস নাইক্যা। ক্ষুদার্ত কবির ভাষায় "চাদ উঠুক আর নাই উঠুক আইজকা চকবাজারে ইফতারি করমুই" আর ইফতারির খবরেও দেখাই তোও রে ভাই কি আর কমু। দেইখ্যা যে লোল ছুটতো ঐটা আটকানির লইগা কয়বার যে লোল পেটে চালান কইরা দিতে হইতো তার হিসাব রাখসে কেডায়। গত বছর একদিন চিন্তা করলাম যে চকে ইফতারি না করলে জীবনটার অর্থ ডিকশনারিতে খুইজ্যা পামু না।

তো গেলাম চকবাজারে। ঐখানে গিয়া সাজানো ইফতারির পসরা দেইখ্যা তো আমাদের তিনজনের মস্তিস্কের মাথা পাগল অবস্থা। পুরা বাজার তিনবার চক্কর কাটলাম। আমার এক বন্ধু কইলো যে আজানের পরে সব দোকানে গিয়া হাইট্টা হাইট্টা সব আইটেম টেস্ট করব। তখন আমি কইলাম যে দোস্ত সারাদিন রোজা রাইখ্যা এমনে শিয়ালের মতন দৌড়াইয়া দৌড়াইয়া মুরগি খাইতে পারুম না,চল যা যা খামু কিইন্না নিয়া গিয়া মসজিদে বইস্যা আরামসে ইফতার করি কিন্তু ওর রোখ চাইপ্যা গেসে অয় এমনে শিয়ালের মতোন মুখে মুরগি নিয়াই দৌড়াইবো।

কি আর করা শুকনা মুখে গিয়া নুরানী লাচ্ছির দোকানে গিয়া লাচ্ছির ঠোংগা হাতে নিয়া বইস্যা রইলাম। আজানের শুরু হইতে দেরি কিন্তু লাচ্ছি শেষ হইতে দেরি নাই। দৌড়াইয়া গেলাম ইফতারির বাজারে। বিশ্বাস করেন আর নাই করেন গিয়া দেখি একটা কুত্তাও নাই। পুরা ভেটকি মাছের মতন কতক্ষন খাড়াইয়া থাইক্যা একটা মুরুব্বিরে জিগাইলাম যে সব কই, মুরুব্বি কইলো যা আজানের আগেই সব গুছানি হইয়া যায়।

মিজাজ গেল বিলা হইয়া, চক্ষে পাওয়ার থাকলে বেকুব বন্ধুটা ভস্ম হইয়া যাইতো। গাধাটা অভিগ্গতার দাম দিলো না। আগেই কইছি যে খাওয়ার আগে আর মাইরের পিছে। যাউকগা হেইদিন জীবনে প্রথম ফুচকা দিয়া ইফতার করছি। পরের দিন আবার আসার কথা আসিলো তো সেই বন্ধুর ল' পরিক্ষার রেজাল্টে খারাপ করায় গত বছর আর চকে ইফতারি করা হ্য় নাই।

আরেকটু ওয়েট করেন একটু আইতাছি বেশিক্ষন লাগবো না................................................................................................................................................................................................................................... .............................................................. .............................................................. .............................................................. .............................................................. .............................................................. .............................................................. .............................................................. .............................................................. .............................................................. .............................................................. .............................................................. .............................................................. আইস্যা পরছি কইসিলাম না যে বেশিক্ষন লাগবো না। যা কইতাছিলাম তো এই বছরও যথারীতি পয়লা রমজানের খবর আর পরের দিনের পেপারে চকের ইফতারির ছবি এবং সাথে গতবারের ব্যর্থতার গ্লানি সবমিলাইয়া একটা কঠিন জিদের জন্ম হইলো। সেই জিডের ফলাফল স্বরূপ এইবারে আবার ও চকের ইফতারির টানে গেলাম চকবাজারে। গিয়া গতবারের মতনই মাথা পাগল অবস্হা। তো ধুপধাপ কইর‌্যা আগে ভাগে ইফতার কিইন্না ফালাইলাম।

যা যা কিনলাম: ১/ খাসির লেগ রোস্ট ২/ কোয়েল পাখির রোস্ট ৩/পেল্লাই জিলাপী ৪/চিকেন সাসলিক ৫/কিমা পরোটা ৬/দই বড়া ৭/ এবং অতি অবশ্যই বাপের বড় পোলায় খায় এগুলা নিয়া আইসা টিএস সি তে বইসা আজানের অপেক্ষা করতে থাকলাম। যখনই আজান দিলো অর মায়রে বাপ দিলাম খাসির লেগ রোস্টে কামড়.....ভাইরে ভাই কি জিনিস....কামড়ের চোটে মাংস কম বাসি গন্ধ বেশি ধক কইরা গিয়া সারা দিনের অভুক্ত পাকস্হলিতে গিয়া প্রতিধনি খাইলো... ভাগ্যিস পেটে কিছু আছিলো না নাইলে ম্যাসাকার হইয়া যাইত। চারিদিকে চাইয়া দেখি লগের কেউ কিছু কয়না নগদে ঘটনা চাইপ্যা গেলাম। পরে খুল্লাম বড় বাপের পোলায় খায় এ বাক্স খুলতেই সবাই কাড়াকাড়ি শুরু কইরা দিল, সাড়া জীবন নাম শুনছে যেই শাহী খানার আইজকা অয় সামনে যাই হোক আমি কোনোমতে সবাইরে সম বন্টন কইরা দিলাম। ভাই মুখে দেয়ার পরে মনে হইলো যে চকের যাবতীয় বাসি আইটেম এর ঝাকি দিয়া মিশাইয়া থুইছে।

আমার ভাগের টা যে বন্ধু বেশি ফালাফালি করছে অর প্লেটে চালান কইরা দিতে গেলাম, বন্ধু নিমরাজি হইয়া কয় দোস্ত তুই খা না.. আমি রক্ত চক্ষু কইরা তাকাইয়া কইলাম শালা ফালাফালি করসিলি ক্যান। অয় মিন মিন কইরা কয় বন্ধু বান্দবের লগে কাড়াকাড়ি কইর‌্যা খামু না তো কি শশ্বুরবাড়িতে গিয়া কাড়াকাড়ি করুম নাকি। আমি না শোনার ভান কইরা পরের আইটেম এর দিকে হাত বাড়াইলাম। পরের আইটেম ব্যাং সদৃশ্য কোয়েল পাখি। আগে খাইসি তাই জিনিস টা এমনিতে খাইতে ভালো কিন্তু চকবাজার বইল্যা কথা।

মুখে দিয়া ই বুজলাম এইটা আগের আইটেম এর যথার্থ উত্তরাধিকার(বুদ্ধিমান পাঠক বুঝে নেন) তারপরই হাত দিলাম কিমা পরোটার দিকে। ঠান্ডা করকরা শক্ত পরোটা মুখে নিয়া ই বুজলাম তুলনামুলক ভাবে এইটাই ঐলো সবচেয়ে ভালো আইটেম। তাই দেখলাম এইটা নিয়াই কিন্চিত কাড়াকাড়ি শুরু হইছে। তারপরে হাত দিলাম চিকেন সাসলিকের দিকে। অইডা চিকেন নাকি কাউয়া ছিলো এইটা নিয়া আমার এখনো সন্দেহ আছে।

জিলাপির কথা আর না কই। সবচেয়ে ফ্রেশ জিলাপি টাও মনে হ্য় ভোর রাইতে ভাজা। বাকিগুলানের কি অবস্হা সেটা বুঝার লইগ্যা আপনারা কি এখনো আমার বলার জন্য অপেক্ষায় আছেননি, আরে ভাই দিমাগ টারে একটু জিমে পাঠান না অহহো দই বোড়ার কথা কইতে তো ভুইলাই গেছি জিনিসটা দেখতে যতটা আকর্ষনীয় খাইতে ততটাই কুৎসিত। মুখে দেওয়ার সাথে সাথে যে জিনিসটা আগে মনে হইব সেটা হইলো "মাগো আমরা তোমার শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে তবে শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ঢরতে জানি" ভাই আমারে আরেকটু ছাড়তে হইব আমি একটু আইতাছি। ততক্ষনে নিচে কিছু ছবি দিলাম দেখেন #এই ছাগুরে রে প্রথম রোজা থেকা আমি দেখতাছি।

এখনো বহাল তবিয়তে আছে # এইটার নাম সুতি কাবাব জীবনে একবারই খাইছিলাম বছর দুয়েক আগে , খাওয়ার পরে কানে ধইর‌্যা মাফ চাইসি। তাই আর অই পথ মাড়াই নাই। ছবিটা দেহেন আমার তো মনে হয়না এই কাবাব বাকি রমজানে শেষ হইব। আগামি রমজানের অর্ধেক টা অনায়াসে চইল্যা যাইব। আর কাবাব বেচে এরকম দোকান আছে গোটা দশেক আমরা যখন চইল্যা আসি তখন বাজে পোনে ৬ টা তখনও ইফতারির দোকান ইফতারিতে ভরপুর তো আজকে যারা চকে ইফতারি করতে যাইয়া যা কিনবেন তা কিন্তু আমি গতকালকে দেইখ্যা আইছি সো খাদক সাবধান।

আপনাগো মনে যে একটা কোয়েশ্চেন খেলা করতাছে অইটা আমি ভালো কইরাই জানি অইটা হইলো যে এত বাসি খাইয়াও সুস্হ আসি ক্যামনে। ভাই উপর থেকা আবার পইড়া আসেন দেখেন কয়বার আমি আপনদের কাছে কইসি একটু ওয়েট করেন আইতাছি, আপনাগো কি মনে হ্য় আমি কই গেসিলাম? বি:দ্র: এরপরেও যাদের চকে ইফতারি করার খায়েস আছে তাদের কই আমার পোস্ট টা প্রিয়তে রাখেন যখনই খায়েস জাগবো বাইর কইরা পইরেন। এরপরেও জদি খায়েস থাকে তাইলে আপনের জন্য দামি উপদেশ দয়া কইরা প্রথম রোজায় যাইয়েন তাইলে অন্তত বাসি খাই্য়া দৌড়ের উপরে থাকা লাগতো না। বি:দ্র:২ পোস্টের ছবি দেইখ্যা কেউ মইজ্যা যাইয়েন না...দেখতে অনেক সুন্দর হইলেও এগুলা একেকটা সাক্ষাত জম। নিজের রিস্কে খাইবেন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।