মুভির নামঃ Saving Private Ryan (1998)
__________________________________
http://www.imdb.com/title/tt0120815/
গতকালকে যুদ্ধ নিয়ে নির্মিত লাইফের সেরা মুভিটি দেখলাম। সাধারণত যুদ্ধের মুভিগুলিতে কমান্ডো মিশন টাইপের কিছু অ্যাকশান সিন আর ইতিহাসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে দেখানো হয়। বেশীরভাগ মুভি সম্পর্কেই আমার ধারনা এমন। তবে এই মুভিতেও আমেরিকাকে খুব উচুতে তুলে ধরা হয়েছে। যাই হোক তাতে আমার আপত্তি নেই।
মুভির কাহিনীও সেখানে সীমাবদ্ধ নেই। মুভির আসল ম্যসেজ যেটা সেটা হল যুদ্ধের ভয়াবহতা।
পৃথিবীতে এ যাবত বহু যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে। কেউ হয়ত যুদ্ধে জিতেছে, কেউ হেরেছে। কিন্তু যুদ্ধ মানেই ধংস, হত্যা, আপনজন হারানোর বেদনা।
একেকটা যুদ্ধে যেসব মানুষ মারা যায় তাদেরও হাজারও স্মৃতি বিজড়িত মুহূর্ত থাকে। নিজ কাধে আত্মীয়-স্বজনের লাশ বহন করা খুব সম্ভবত সব থেকে কষ্টের। তার থেকেও কষ্টের নিজ সন্তানের লাশ মা-বাবার পক্ষে বহন করা। মুভিতে সেটাই দেখানো হয়েছে। জেমস প্রাইভেট রায়ান (ম্যাট ড্যামন) হল এক হতভাগ্য মায়ের চার নম্বর সন্তান যার অন্য তিন সন্তান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে ১৯৪৪ সালে মিত্র শক্তির পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে নরম্যান্ডী আক্রমন করতে গিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যায়।
তার মাকে এই তিন সন্তান মারা যাবার টেলিগ্রামটি গ্রহন করতে হবে। :’( এর থেকে আর কষ্টকর অভিজ্ঞতা আর কিইবা হতে পারে?? তাই ইউএস আর্মি চিফ অব স্ট্যাফ একটি সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি জানতে পারলেন এই হতভাগ্য মায়ের আরেক সন্তান #জেমস প্রাইভেট ফ্রান্সিস রায়ান যিনি নরম্যান্ডিতে যেকোনো একজায়গায় যুদ্ধ করছেন তাকে খুজে বের করে অন্তত জীবিত তার মার কাছে ফেরত দিতে হবে। তাই তিনি সেকেন্ড রেঞ্জার থেকে ক্যাপ্টেন মিলারকে (টম হ্যাঙ্কস) প্রধান করে একদল যোদ্ধাকে পাঠালেন তাকে খুজতে। সংক্ষেপে এতটুকুই বলা যায় বাকিটা বললে স্পয়লার হয়ে যাবে।
মুলত যুদ্ধের ভয়াবহতায় কিভাবে পরিবারগুলি ধংস হয়ে যায়, মা হারায় তার সন্তানকে, সন্তান হারায় বাবাকে, ভাই হারায় বোনকে অথবা বোন ভাইকে তার এক নিখুত বর্ণনা চিত্রায়িত হয়েছে মুভিটাতে। এবং সেটা এত অসাধারনভাবে যা আজীবন মনে থাকবে।
____________________________________________________
এখন মুভি সম্পর্কে আমার কিছু মতামত। প্রথমেই বলে নিয়েছি এখনও পর্যন্ত দেখা সেরা যুদ্ধ নিয়ে নির্মিত মুভি। আসলে শুধু যুদ্ধের মুভি না এটা আমার জীবনে দেখা সেরা মুভিও বটে।
স্পীলবারগ যে কি জিনিস!!!!!!!!! তা এই মুভি না দেখলে কেউ বুঝবে না। এত্ত চমৎকার ডিরেকশন। পুরো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আবহটা ফুটিয়ে তুলেছে মুভির মধ্যে এত সূক্ষ্মভাবে যে এই মুভির খুত ধরতে সমালোচকদের ভালো নাগানি-চুবানি খেতে হবে। এই কারনেই সে পৃথিবীসেরা ডিরেক্টরদের একজন। একটা পিস!!!!! :/ মাস্টারপিস।
আর মুভিটা দেখার আরও একটা উদ্দেশ্য ছিল কারন মুভিতে আছে টম হ্যাংকস। আমার জীবনে দেখা টম হ্যাংকসের প্রথম মুভি ছিল “ফরেস্ট গাম্প”। ফরেস্ট গাম্প আমার সব দিক থেকে ভালো লাগার একটা মুভি। তার সাদামাটা অভিনয়, আলাদা স্টাইল যে কাউকেই আকর্ষণ করতে বাধ্য। এই মুভিও আমার সব দিক থেকে ভালো লাগার মত একটা মুভি।
সিনেমাটোগ্রাফি, সাউন্ড, ডিরেকশন, অভিনয় OMG!!!!!!! স্পিলবারগ তুমি বেচে থাকো হাজারো সিনেমাপ্রেমী মানুষের হৃদয়ে। আই লাভ ইউর মুভিজ। টম হ্যাংকস তুমিও বেচে থাকো। তোমার অভিনয়ের তুলনা আমি কারও সাথে করব না। “টম হ্যাংকস ইজ টম হ্যাংকস” Simplicity মানুষকে কিভাবে আকৃষ্ট করতে পারে টম হ্যাঙ্কস হল তার নিদর্শন।
ও মুভিতে আর একটা ম্যাসেজ আছে ক্যাপ্টেন মিলার মারা যাবার পূর্বে জেমস রায়ানের কানে কানে যে কথাটা বলে যায়। “রায়ান Earn this, Earn it” এই সময়কার একটা দৃশ্য দেখলে চোখের পানি আটকে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে, ক্যাপ্টেন মিলার সংশপ্তুকের মত ট্যাংকে রিভলবার দিয়ে গুলি করছে। :’( :’( :’(
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।