আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এইসব স্বপ্নহীন দিনরাত্রি

যান্ত্রিকতার স্বরচিত কারাগারে আমি এক অযান্ত্রিক মানুষ আমি স্বপ্নচারী ভীষণ । মৃত্যুর উপত্যকায় দাঁড়িয়ে আমি ভবিতব্যের সাথে কথা বলি । চারদিকে আমার কেবলই দীর্ঘশ্বাস । কেবলই আশাহীনতার আর প্রাণহীনতার গল্প । আমি ভ্রষ্টাচারী হয়ত ।

তবুও স্বপ্নচারী বড় । এবং গতকাল পর্যন্তও আমি এমনই ছিলাম । কিন্তু আজ আমি স্বপ্ন দেখতে পারছিনা, জানি পারবও না কোনদিন । রাত শেষে যখন ফযরের আযান হল কাল, মসজিদ থেকে ফিরছিলাম কোন বা কতগুলি মানুষের জানাজা পড়ে, যেমন হয় প্রতিদিন, তাদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর গল্পগুলি শুনে মোটেও অবাক না হয়ে আমি বাড়ি ফিরি যখন, ততক্ষণে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায় , পাশের বাড়ির ছোট্ট খুকিটি, প্রিয়ন্তি, তখন স্কুল ব্যাগ কাধে হাটতে হাটতে আমাকে বলে, “আজও ?” আমি নিরাবেগ উত্তর দেই “হ্যা” । সে কিন্তু অবাক হয় না এতটুকু ।

শুধু তার স্বপ্নহীন দৃষ্টির আড়ালে লুকিয়ে থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কিছু জিজ্ঞাসা । যে জিজ্ঞাসা নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার চাইতেও অনেক বেশি কঠিন , যে জিজ্ঞাসা আমাদের সহস্র সভ্যতার অস্তিত্বকে অস্বীকার । এবং তারপরে এই সব মৃত্যুময় দিনরাত্রি তাদের নিজেদের নিয়মে আসে আর যায়, রেখে যায় প্রতিদিন শুধু অনেক মৃত্যুর পাথুরে নিস্তব্ধতা । হাহাকার ? সে তো আমরা কবেই ভুলে গেছি । এতসবের মাঝে থেকেও আমি অসুস্থের মত স্বপ্ন দেখে গেছি এতকাল ।

কিন্তু আজ আমি স্বপ্নহীন প্রাণ এক । আজ আমার চোখে কোন সুদূরের হাতছানিও নেই । শুধুই অর্থহীন অমানিষার ঘোর অন্ধকার । আজ আমি ‘ক্লান্ত ব্যথিত প্রাণ’ । কিন্তু আজ আমার ক্ষণিক উদ্বেলিত হবার জন্য কোন বনলতা সেনও নেই ।

বনলতাকে ওরা কবে ছিড়ে খুরে মেরে ফেলেছে । আজ কেবলই অন্ধকার আর মৃ্ত্যুময় বিভীষিকা । তারই মাঝে আমি ছোট্ট প্রিয়ন্তির দিকে চেয়ে একটু খানি ভবিতব্যের আশা খুজতাম । কিন্তু আজ ভোরে মসজিদে আমি প্রিয়ন্তির জানাজা পড়ে এসেছি । শুনেছি স্বাভাবিক ভাবে নয় ।

কিন্তু কীভাবে তা কারো কাছে জানতে চাইনি আমি । কি হবে ! [এটি কোন ব্যক্তিগত শোকগাথা নয় , প্রতিদিনের বাংলাদেশে এত শত মৃত্যুতে আমি সত্যিই আর স্বপ্ন দেখতে পারছি না ] ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।