শূন্য হৃদয়ে ডঙ্কা বাজে এ কিসের, জানো কি হে!
প্রথম পর্ব
এটি একটি সুন্দর গল্পের কাহিনী হতে পারতো। যদি না সেই দুঃস্বপ্ন ভর না করতো! তবে এটি সেই নিকষ কালো রাতের গল্পও হতে পারে.
ধ্রুব মামার বাড়িতে থাকার জন্য সব সময় এক ধরনের বিশাল টান অনুভব করে। নানী তার বড়ই প্রিয়। সেই ছোট বেলা থেকে দুরন্তপণার নানা শুভ কাজে নানী প্রশ্রয় দিতেন আর তখন থেকেই তার নানার বাড়ীর প্রতি গভীর অন্তরঙ্গতা। ধর্মপরায়ন নানা নিজে শিক্ষক ছিলেন আর তার নিজের সংসার বানিয়েছেন বিশাল আকারের।
একটি ভালো ফুটবল টিম হওয়ার কারণে তার মেয়ের জামাই, ছেলের বউ ও ছেলেমেয়ের সংখ্যাও ছিলো বেশ। ধ্রুব তার নানার বাড়িতে গেলেই উৎসব আর খালাতো ভাই বোনদের মেলায় থাকতো দিনভর সরব।
গ্রামের সেই নির্মল পরিবেশ তার ছেলেমানুষীকে অত্যন্ত গভীরভাবে আকর্ষণ করতো। ধান ক্ষেতে, মাঠে, বিলে ঘুরে চলা আর পানিতে , কাদায় নিমেষেই হারিয়ে চলার মাঝে আর প্রকৃতির সঙ্গ তাকে জড়িয়ে রাখতো দিনভর। তারপরও আছে নানা ঘটনা।
ধ্রুবর জীবনে সেগুলোর আঁচ গভীরভাবেই দাগ কাটে অন্য সব কিছুর মতো।
নানার মেয়েদের অনেকের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে মাদ্রাসায় পাশ করে পরে মাদ্রাসায় চাকুরি করাদের সঙ্গে। তারা বছরের প্রায় সব সময়ই আসতেন শ্বশুরবাড়িতে। এর মাঝেই এক খালার স্বামীর জীবনাচরণের কারণে ধ্রুব মুখোমুখি হয় নতুন অভিজ্ঞতার। সেটা যে মোটেই সুখকর নয়, বরং তার কিশোর জীবনের অত্যন্ত অনভিপ্রেত ঘটনা সেটাই তাকে তাড়া করে ফেরে।
দ্রুব তখনসবেমাত্র অষ্টম শ্রেনীতে উঠেছে।
অনেক অতিথির ভীড়ে থাকার জায়গা সংকট পড়ায় নানা বাড়ীতে প্রতিদিনই ধ্রৃবকে থাকতে হয় খালাতো, মামাতো ভাইদের সঙেগ্ গাদাগাদি করে। এটা প্রতিদিনের রাতে ঘুমানোর আগে টের পাওয়া যায়। অবশ্য রাতের বেলায় নানা বাড়ীর বিশাল উঠোনে মাদুরের বিছানায় নানীর গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়েছে অনেক দিন। গল্প শুনতে শুনতে যে কখন ঘুমিয়ে পড়ে তা টের পায় সকালে রোদ উঠা আর লোকজনের ডাকডাকিতে।
এমনি একদিন ধ্রুব তার এক খালুর সাথে ঘুমাবে। ছোটবেলা থেকেই আদব কায়দা ও সেখানে র্ধমপরায়ণতার কারণে বড়দের সালাম ও শ্রদ্ধার বিষয়টা সব সময়ই কাজ করতো। তার খালুকেও সে অনেক শ্রদ্ধা করে। খালু শহর থেকে মাঝে মাঝে আসেন। শ্রদ্ধেয় খালার মাঝেই ধ্রুব খুঁজে পেল সে্ই আঁধারের অভিজ্ঞতা।
রাতে আকস্মিক ঘুম ভাঙ্গে ধ্রুবর। বুঝতে পারে তার শরীরের সঙ্গে কিচুর স্পর্শ। তার খালু তাকে পাশ থেকে জড়িয়ে ধরছেন আর পশ্চাতদেশের দিকে ...সে অবস্থায় নিজে নড়ানড়ি আর ঘুমের মাঝে নড়াচড়ার ভাব করেও ধ্রুব যেন দমাতে পারেনি খালুকে। উঠে গিয়ে তাকে মারবে, দরজা খুলে বেরিয়ে যাবে কি করবে ভেবে পায় না। তার এত শ্রদ্ধেয় একজন মানুষ এভাবে এই ধরনের কিছু করবে ভাবতেই ঘৃণা ও কষ্টে , অশ্রদ্ধায় তার গা রি রি করে উঠে।
সে কিছুতেই তার আগের ধারণাকে মেলাতে পারে না। এই মানুষ এমন সম্ভব! কিশোর বয়সে বন্ধুদের সাথে তার এ ধরনের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার হলেও তার চেয়ে বড় ও নিজের আত্মীয়ের সঙ্গে এ ধরনের গভীর সম্পর্ক থাকার পরও চরম অশ্লীল এ অভিজ্ঞতা তাকে নতুন কিছূ ভাবিয়েছে।
এরপর থেকে সে আর কোনোদিন তার খালুকে কোনো কিছূ জিজ্ঞেস করা তার কাছে ঘেরা, তাকে সালাম বা শ্রদ্ধা দেখানো বহু দূরে। যতো বার সে তার খালুর মুখটা দেখে , মনে পড়ে সেদিনের কথা। ধ্রুব এখন যৌবনে পদার্পণ করেছে।
কিন্তু মাদ্রাসার হুজুর, বা এরকম কেউ হলে তার আগের কথা মনে পড়ে যায়।
ধ্রুবর মনে হয় এ ধরনের শোনা কথা যে অনেক সময় শুনতো তা মিথ্যা নয়। কিন্তু তার জীবনের আকাশে সেই দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা ভয়ংকর হয়েই মনের মাঝে গেঁথে থাকে।
[ অ.ট- লেখাটি গল্প হলেও এটি একটি ছেলের জীবনের বাস্তব ঘটনা এবং প্রথম পর্বের প্রেক্ষিতে লেখা হয়েছে। বর্ণনার ক্ষেত্রে অসংলগ্নতা ক্ষমার যোগ্য]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।