আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদায় মিশুক স্যার !

Click This Link ওপরের লিঙ্কের ১নং কমেন্টের জবাবে গত ১ আগস্ট ফটোগ্রাফী ক্লাস নিয়ে মিশুক স্যারের ( শহীদ মুনীর চৌধুরীর মধ্যমপুত্র আশফাক মুনীর) কথা উল্লেখ করলাম। তখন স্বপ্নেও ভাবিনি এর দু'সপ্তাহের মধ্যে স্যারকে চির বিদায় জানিয়ে পোস্ট লিখতে হবে। সাথে হারাতে হবে তারেক মাসুদের মতো অনন্যনির্মাতাকেও। দু'জনের আজীবন বন্ধুত্ব সহমৃত্যু দিয়ে চিরকালীন পরিণতি পেলো ! মিশুক স্যারের সারাটা জীবন গেছে পরিশ্রম করে। পিতাকে অকালে হারিয়ে কৈশোর কাল থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি টাকা রোজগারের দিকেও যেতে হয়েছে।

মুনীর চৌধুরীর বাসাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর পরিবারকে থাকার জন্য দিয়েছিলো। খাবার জন্য, লেখাপড়াসহ অন্যান্য প্রয়োজন মেটাবার জন্যতো টাকা দরকার। লেখাপড়া শেষ করে মিশুক স্যার জাতীয় জাদুঘরের অডিওভিজ্যুয়াল বিভাগের প্রধান হিসাবে কাজ করছিলেন। আমরা যখন মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারে তখন মিশুক স্যার আমাদের সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। তিনি আমাদের পড়াতেন ইলেক্ট্রনিক সাংবাদিকতা।

তার অংশ হিসাবে পরে ফটোগ্রাফির ক্লাসও নিতেন। আমেরিকার সাউদার্ন এলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় ( কার্বনডেল) আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ঢাকায় ডকুমেন্টারী মুভি প্রডাকশনের ওপর এক মাসের একটা বিশেষ কোর্সে অংশ নিই আমি। সেই কোর্সের প্রস্তুতি হিসাবে মিশুক স্যার ফটোগ্রাফির ওপর আমাদের (কোর্সের জন্য মনোনীত যারা) মাস খানে বিশেষ ক্লাস নেন। সেই কোর্সকে ঘিরে স্যারের সাথে আন্তরিক একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে জানলাম ১৬ মিলিমিটারে স্যার দেশের সেরা ক্যামেরাম্যান (স্যার সম্প্রতি বলতেন ক্যামেরা পারসন)।

তারেক মাসুদের আদম সুরতের সাথে স্যার নানাভাবে যুক্ত ছিলেন। ক্যামেরা ছাড়াও ইংরেজী ধারাবর্ণনা দিয়েছিলেন স্যার। কথা বলতেন খুব সুন্দর করে। পিতার এই গুনটি তিনি ভালোভাবেই পেয়েছিলেন। তখনই হাইডেফিনিশন টিভির আভির্ভাব ঘটে।

এশিয়া উইকে পড়ে এসে স্যারের সাথে আলোচনা শুরু করলাম। স্যার দেখলাম বিষয়টার কারিগরী দিক পুরোই ওয়াকিফহাল। তাঁর নানা বিষয় জানার তীব্র একটা আকাঙ্খা ছিলো। এরপর কর্মজীবনে ঢুকে প্রায় পনেরো বছর আমি ঢাকার বাইরে কাটাই। ফলে অনেকের মতো স্যারের সাথেও যোগাযোগের সূত্রটি কেটে যায়।

আর কখনো স্যারের সাথে দেখা বা কথা হয়নি। এটিএন নিউজের প্রথম প্রধান ছিলো আমার সহপাঠী মঞ্জুরুল ইসলাম। ওর কাছে শুনেছি স্যর কানাডা আছেন। এর মধ্যে মঞ্জু আবার আমেরিকা চলে গেছে শুনেছি। মঞ্জুও চৌদ্দ পনেরো বছর আমেরিকা ছিলো।

সেখান থেকে এসে এটিএন নিউজে যোগ দেয়। তার আগে ও এটিএন-এ একটা টক শো উপস্থাপন করতো। এর মধ্যে স্যার বেসে যে মঞ্জুর জায়গায় ঢুকেছেন সেটা জানতাম না। জানলাম কাল টিভিতে দেখে। এই জানার জন্য আমি মোটেও তৈরী ছিলাম না।

ভালো থাকুন স্যার। হাসিখুশী থাকুন। বিদায় ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.