বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীদের ধর্ম বিশ্বাসের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল Dreaming । অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীরা বিশ্বাস করত আদিতে বিশ্বজগতের রূপ বা বিষয়বস্তু ছিল না। তারপর একটা সময় এল - যে সময়টা ড্রিমিং নামে পরিচিত- এই সময়ে আত্মারা আবিভূর্ত হল।
এরাও ‘ড্রিমিংস’ নামে পরিচিত। আত্মাদের কাজকর্ম জীবনের অপর রূপ, অর্থাৎ মানবের জন্ম দিল। প্রাকৃতিক দৃশ্যও জন্ম দিল তারা। অষ্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা বিশ্বাস করে এইসব আত্মারা কখনোই অবলুপ্ত হয়ে যায় নি, তারা আজও বিশেষ বিশেষ স্থানে উপস্থিত।
অস্ট্রেলিয়ার মানচিত্র
অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীদের ছবি
অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীরা সচরাচর Aborigines বলে আখ্যায়িত করা হয়।
অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীদের ছিল নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও সীমানা। তারা শিকার করে ও খাদ্যসংগ্রহ করে জীবনযাপন করত। এ ছাড়া জটিল বানিজ্যিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিল
অষ্ট্রেলিয়া মহাদেশ জুড়ে । এরা আজ থেকে প্রায় ৪০,০০০ বছর পূর্বে অস্ট্রেলিয়ায় আসে, তারপর তারা সেখানে বিচিত্র-জটিল এক ধর্মসংস্কৃতি গড়ে তোলে, সে ধর্মসংস্কৃতির ছাপ পড়েছে তাদের অঙ্কিত পাথরচিত্র।
অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীদের আঁকা পাথরচিত্র।
পাথরচিত্র। পাথরচিত্রগুলি ১৫০০০ বছর পুরনো বলে ধারণা করা হয়।
১৭৮৮ খ্রিষ্টাব্দে ইউরোপীয়রা অস্ট্রেলিয়ায় আসে। তবে সেখানকার আদি অধিবাসীরা ইউরোপীয়দের সাদর সম্ভাষন জানায়নি।
তারপর থেকে সেখানকার আদি অধিবাসীরা যুদ্ধে ও অসুখে প্রাণ হারায়।
অনেকেই প্রাচীন ধর্মমত পরিত্যাগ করে। এরা ইউরোপীয় সমাজে মিশে যায় এবং অনেকেই খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহন করে। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী আদিবাসী জীবনধারা কেবল উত্তর এবং মধ্যঅষ্ট্রেলিয়াতেই সীমাবদ্ধ।
ইউরোপীয় সভ্যতার স্পর্শে আদিবাসীদের জীবনধারা বদলে গিয়েছিল
তখন একবার বলেছিলাম ‘ড্রিমিংস’ নামে পরিচিত আত্মাদের কাজকর্ম জীবনের অপর রূপ, অর্থাৎ মানবের জন্ম দিল। আত্মারা প্রকৃতিকে ধনে-ধান্যে পরিপূর্ণ করে।
তারা ভ্র“নে প্রাণ সঞ্চার করে। এ কারণে প্রত্যেকেই আত্মার অংশ। মৃত্যুর পর আত্মা ফিরে যায় আত্মার জগতে এবং পুর্নজন্মের জন্য অপেক্ষা করে।
অষ্ট্রেলিয়ার প্রথম অধিবাসীর মুখচ্ছবি
কয়েকজন গুরুত্বপূর্ন আত্মা রয়েছে। এরা হল: সর্ব-পিতা, সর্ব-মাতা, রংধনু সাপ।
সর্ব-পিতার প্রভাববলয় হল দক্ষিণপূর্ব অস্ট্রেলিয়া। উত্তর অষ্ট্রেলিয়ায় প্রভাব বিস্তার করে আছেন সর্ব-মাতা । সর্ব-মাতার সাহায্যকারী একজন পুরুষ আত্মা বলে অনুমিত হয়। রংধনু সাপ উর্বরা বৃষ্টির কারক। কেউ মনে করে এই আত্মাটি পুরুষ-কেউবা মনে করে নারী।
আবার কেউ কেউ এমনও মনে করে যে রংধনু সাপ একই সময়ে উভয় লিঙ্গ। আবার কেউ কেউ মনে করে রংধনু সাপ হল সর্ব-মাতা।
বর্তমানকালের অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীদের ছবি । দানবীয় ইউরোপীয় সভ্যতাকে উপেক্ষা করে এরা এখনও টিকে রয়েছে ... ভাবলে অবাক হতে হয়। এইই হয়তো শিকড়ের শক্তি।
অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীদের ধর্মসংস্কৃতির উদ্দেশ্য জীবনের প্রতিপালন। তারা এটি করে আত্মার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের দ্বারা ও স্বপ্নের মাধ্যমে। আত্মা কখনও প্রতীকরূপে ও ছবির আকারে উপস্থিত হয়। আরান্ডা জাতির জুরুঙ্গা বোর্ডের কথাই ধরা যাক। এটি একটি সমতল বোর্ড, কখনও-বা অলংকৃত।
এই বোর্ডে স্বপ্নে ব্যাখ্যা ফুটে ওঠে।
অস্ট্রেলিয়ার আরান্ডা জাতির জুরুঙ্গা বোর্ড। স্বপ্নে কথা বলার সময় গান গাওয়া হয় অভিনয় করা হয় ।
জীবনচক্রের পার্বণ অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীদের ধর্মসংস্কৃতির আরেকটি অনন্য বৈশিষ্ট্য। লাইফ সার্কেল পার্বনে সাধারনত নারীপুরুষের দীক্ষা দান করা হয়।
এটি ওদের সবচে গুরুত্বপূর্ন অনুষ্ঠান এবং জীবনচক্রের কৃত্যের দুটি স্বতন্ত্র দিক রয়েছে। একটি প্রকাশ্য-যা জনগনের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়, অন্যটি গুপ্ত। যারা দীক্ষিত তারাই কেবল গুপ্ত অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারে। লিঙ্গ অনুসারে ভাগ করা হয় দীক্ষিত দের। অবশ্য গুপ্ত অনুষ্ঠানে নারীর ভূমিকা রয়েছে।
তবে অষ্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসীদের ধর্মীয় ও সামাজিক ক্ষমতা বরাবর পুরুষের হাতেই ছিল।
অষ্ট্রেলিয় আদিবাসীদের ধর্মসংস্কৃতির নানা প্রতীক। নারীর চিত্রকল্প লক্ষনীয়ভাবে অনুপস্থিত।
তথ্যসূত্র:
University of Southern California -র অধ্যাপক Robert S. Ellwood সম্পাদিত The Encyclopedia of WORLD RELIGIONS
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।