আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইকনোমিস্ট এর প্রতিবেদনঃ বিষাক্ত রাজনীতি ও আমরা হতাশা

দিয়ে ছিলে যা নিয়ে নিতে পার, লেখা কবিতা গাওয়া গান যত, খুজে দেখো না পাবে না কেউ আমার মত... ইকনোমিস্টের মূল প্রতিবেদন বিষাক্ত রাজনীতির কথা বলতে গিয়ে ইকনোমিস্ট এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের জাতিয় নির্বাচন ছিল বাংলাদেশের জন্য এক যুগসন্ধিক্ষণ। উক্ত নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। ওই বিজয়ের পেছনে ছিল জাতির এক বুক আশা। সবার প্রত্যাশা ছিল শেখ হাসিনা তার দলের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করবেন, জাতীয় ঐক্য গড়বেন, আওয়ামী লীগ ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মধ্যে চলতে থাকা 'উইনার টেকস অল' (বিজয়ীরাই সব পাবে) চক্রাকার রাজনীতির অবসান ঘটাবেন। তবে আশঙ্কাও ছিল যে, 'ওই বিপুল ম্যান্ডেটকে দলীয় সুবিধার কাজে লাগাবেন হাসিনা সরকার'।

নির্বাচনের আড়াই বছরের শেষে আশাবাদ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চুরমার হলো। মোটামুটি প্রতিফলন ঘটল আশঙ্কারই। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পযন্ত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সে সময় শেখ হাসিনার নামে ১৩টি মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলা প্রত্যাহার আর খালেদা জিয়াদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো সচল রাখা হয়েছে।

এই সপ্তাহে বিএনপির চেয়ারপারসন ও দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার নির্বাসিত ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও জারি করা হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। এই দুই পরিবার ক্ষমতায় এলে একে-অপরের প্রতি প্রতিহিংসায় লিপ্ত থাকে। ইকোনমিস্টের বিশ্লেষণে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি সংবিধান সংশোধন। গত বছর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজপাকসে যেমনটা করেছেন, সংসদীয় গণতন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে শেখ হাসিনাও তেমনটাই করেছেন বলে মন্তব্য করেছে পত্রিকাটি।

বলা হয়েছে, অন্য সব পরিবর্তনের মধ্যে এ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। যে সরকার অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য নির্বাচনের তত্ত্বাবধান করতো। বিএনপি নতুন ব্যবস্থায় নির্বাচনে যাবে কি-না সেটা বলা মুশকিল। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতার কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবকে ঘিরে শেখ হাসিনা যে আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করছেন, সে ব্যাপারে 'পাবলিক ডিবেট' বা বিতর্কও কম।

এ সপ্তাহে ইস্যু করা ব্যাংক নোটসহ তার (শেখ মুজিবের) ছবি সর্বব্যাপী। ইকোনমিস্টের এ বিষয়ে মন্তব্য 'কোনো এক দলের নিজেকে জাতির এতো ঘনিষ্ঠ হিসেবে চিহ্নিত করা সুস্থ স্বাভাবিক লক্ষণ নয়। ' প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একইসঙ্গে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতার সময় সংঘটিত নৃশংসতার জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। ঝুঁকির বিষয় হচ্ছে এ বিচারকে দেখা হচ্ছে দলীয় ভিত্তিতে। এ মাসে আসামিপক্ষের একজন নেতৃস্থানীয় ব্রিটিশ আইনজীবীকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, 'বাংলাদেশ যখন বিশাল প্রতিশ্রুতির সামনে দাঁড়িয়ে, তখন দেশটির রাজনীতি রয়ে গেছে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে এবং বিষাক্ত আকারে। ইকোনমিস্টের ভাষায়, এটাই বাংলাদেশের রাজনীতির স্বাভাবিক ঘটনা। দ্বি-দলীয় ব্যবস্থায় পারিবারিক কলহ-বিবাদই হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন রাজনীতির মূলকথা। ইকনোমিস্টের এই প্রতিবেদনের সাথে পুরোপুরি সহমত । ফখরূদ্দীন তত্তাবধায়ক সরকারের শুরুতে আমাদের দেশের রাজনৈতিক কালচারের পরিবর্তনের যে আশা দেখেছিলাম তা পুরোটাই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।

বর্তমান সরকারের সেই পুরানো ধারার হিংসাত্বক রাজনীতি দেখে আসোলেই খুবই হতাশ । এই হিংসাত্বক , বিষাক্ত দ্বি-দলীয় ব্যবস্থায় পারিবারিক কলহ-বিবাদ থেকে কবে এবং কিভাবে যে আমরা মুক্তি পাবো তা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক ই জানেন । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।