আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্টীলের মানুষ(Man Of Steel) এ যা দেখলাম

আমি সান্তনা চাই না, সান্তনা দিতে চাই। আমি ভালবাসা চাই না ভালবাসতে চাই। ক্ষমা করলেই যেহেতু ক্ষমা পাওয়া যায় তাই মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ফিরে পাই অনন্ত জীবন। সুপারহিরোদের নিয়ে বানানো সিনেমা দেখার আগে যে ধারনা নিয়ে বসতে হয়: শান্ত শিষ্ঠ ভদ্র ছেলেটা ধীরে ধীরে তার সুপার পাওয়ার টের পায়, কিন্তু কখনো সেটা খারাপ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে না। তবু নিরাপত্তা বাহিনীর রোষানলে পড়ে যায়।

হঠাৎ শহরে উজবুক কিছু প্রাণীর উপদ্রব এ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। দালান কোটা ইমারৎ গুলো হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়ে। লোকজন পালাতে পালাতে হঠাৎ দাড়িয়ে পড়ে মজা দেখে, আর অজস্র বিপদগ্রস্তের মধ্য থেকে দু’একজন কে রক্ষা করে ক্যামেরার সামনে পড়ে যায় সুপারহিরোটি। দেশবাসী টিভির দিকে তাকিয়ে থাকে। শেষপর্যন্ত সুপারহিরোর জয় হয়, নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ভূল বুঝতে পারে।

মূলত এটাই ফমূর্লা। Man of Steel এ যা দেখলাম, ক্রিপটন গ্রহে ছেলে পয়দা করে কার্লের ড্যাডি ষ্টীল বানাবেন বলে ডাইসের ভিতর ঢুকিয়ে দেন। দুর্ঘটনা ক্রমে গ্রহ, নক্ষত্র, সাত সমুদ্র, তের নদী পাড়ি দিয়ে ক্যাপসুলের ভিতর কার্ল পৌছে যায় পৃথিবীতে তার পালক পিতা মাতার কাছে। তাদেরকেই বাবা মা হিসেবে জানে। ধীরে ধীরে সে বুঝতে পারে তার অস্বাভাবিকতার কথা।

কালো কুত্তাটাকে বাচাতে গিয়ে অকালে ঝড়ে মরেন তার পালক পিতা। ক্রিপটন গ্রহের সেনাপ্রধান জড যে এ ছবির খলনায়ক কেমন কেমন করে চলে আসেন পৃথিবীতে। ঘাড়ে লাল দোপাট্টা উড়িয়ে কার্ল হয়ে ওঠেন সুপারম্যান। জড খলনায়ক হলেও তার গ্রহপ্রেম অসীম। ধ্বংস হয়ে যাওয়া নিজের গ্রহকে ঠিক করতে চান পৃথিবী থেকে মানুষ আমদানি করে।

ক্রিপটন এত বোকা কেন কে জানে, বাংলাদেশে আসলেই পারত, আমেরিকার মানুষ কি অত সস্তা! নিমেষেই ঝকঝকে তকতকে শহরটিতে জ্বলে ওঠে আগুন। ১২০তলা ভবনটি পরিণত হয় রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপে। জনৈক সাংবাদিকের ভাষায় একের পর এক তলা স্যান্ডুউচের মত লেপ্টে যায়, স্যান্ডুউচের ভেতর কত লোক ডিমপোচ হয় কে জানে। কেবল গ্রাউন্ড ফ্লোরে হঠাৎ রড ধরে নাড়া দেয় রেশমা। শাবল দিয়ে রেশমাকেও বের করে আনা হয়।

নায়িকাকে চুম্বনের মধ্য দিয়ে শেষ দৃশ্য রচনার দিকে চলে যায় ছবি। সবমিলিয়ে ভালোই লাগে, বলা হয় কাহিনীতে নতুনত্ব আছে। কিন্তু প্রিন্টটা আমার কাছে কেমন যেন লাগল, একবার ভাবলাম আমার চশমার সমস্যা কিনা! পাশের সিটের জোয়ান বয়সী বুড়োকে জিজ্ঞেস করলাম, তার কাছে কেমন লাগছে। আমার কাছে ভৃট্টার গাছগুলো কেমন ব্লারি মনে হচ্ছে, সে বলল ঠিক আছে। অগ্যতা আর চশমা পরিবর্তন করার ঝামেলায় গেলাম না।

ধ্বংসস্তুপ তৈরীর ছবি খুব বেশি পছন্দ না, সিনেপ্লেক্স এ গিয়ে দেখার একমাত্র কারণ হলো ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তিতে প্রদর্শন। মোদ্দাকথা: লোহার চেয়ে দামী ধাতু হলো স্টীল, স্থান কাল পাত্র ভেদে কদুর ভাল নাম লাউ। বহুমাত্রিক ছবিকে ত্রিমাত্রিক করা বাহুল্যমাত্র। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।