পানিপথের যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদী কে হারিয়ে বাবর দিল্লীর সিংহাসন এ মোঘল বংশের গোড়াপত্তন করেন। মোঘল শব্দ টা এসছে মোঙ্গল শব্দ থেকে। এই মোঙ্গল রা ছিল মধ্য এশিয়ার সবচেয়ে দুর্ধর্ষ জাতি, সমস্ত এশিয়ার আতঙ্ক। এদের একজন শ্রেষ্ঠ নায়কের নাম চেঙ্গিস খাঁ। এর পরেই নাম বলতে হয় তৈমুর লং এর।
তৈমুর এর শরীরে ছিল মোঙ্গল আর তাতার রক্ত। বাবর ছিলেন বাবার দিক দিয়ে তৈমুর আর মায়ের দিক দিয়ে চেঙ্গিস এর বংশধর।
বাবর মানে সিংহ। সিংহের মত তেজস্বী ছিলেন এই বাবর। খুব অল্প বয়স থেকেই শুরু হয় তার জীবন সংগ্রাম।
মাত্র এগার বছর বয়সে তিনি ফরগনার রাজা হন উত্তরাধিকার সুত্রে, কিন্তু আত্মিয়দের ষড়যন্ত্রে সিংহাসন হারান। এর কিছুদিন পড়ে তিনি কাবুল অধিকার করেন। ভারতে তখন সবচাইতে শক্তিশালী রাজা ছিলেন রাজপুত বীর রানা সংগ্রাম সিংহ। ১৫২৭ সালে খানুয়ার যুদ্ধে বাবর তাকেও হারিয়ে দেন। ১৫৩০ সালে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে বাবর মারা যান।
একবার তার ছেলে হুয়ায়ুন খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবর কোন এক পীরের কাছে জানতে পারেন যে তিনি যদি তার সবচাইতে প্রিয় জিনিস খোদাকে নিবেদন করেন তা হলে হুমায়ুন বাচবে। বাবর তার নিজের প্রানের বিনিময়ে পুত্র কে বাঁচাবার জন্য খোদার কাছে প্রার্থনা করেন। হুমায়ুন সেরে ওঠেন, কিন্তু বাবর মারা যান।
বাবর মোঘল সম্রাট হলেও তার পূর্ব পুরুষদের মত নিষ্ঠুর আর হিংস্র ছিলেন না।
তিনি ছিলেন সুশাসক আর রুচিবান। তার লেখা আত্মজীবনী ঐতিহাসিক দের কাছে এক মূল্যবান সম্পদ।
বাবরের পরে হুমায়ুন দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। কিন্তু বাবরের মত তিনি প্রতিভাধর ছিলেন না। আফগান দের সাথে যুদ্ধে তিনি দিল্লীর সিংহাসন হারান।
এর পড়ে শুরু হয় আফগান নায়ক শের শাহ এর রাজত্ব। শের শাহ এর আসল নাম ছিল ফরিদ খাঁ। একবার একা লড়াই করে বাঘ মারার জন্য তিনি শের উপাধি পান। ১৫৩৯ সালে চউসার যুদ্ধে হুমায়ুন কে হারিয়ে শের খাঁ হলেন শের শাহ। বাবরের মত তার জীবনের শুরুটাও ছিল ভাগ্যবিড়ম্বনা ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।
যুদ্ধ ক্ষেত্রেই এই বীরের মৃত্যু ঘটে ১৫৪৫ সালে, কিন্তু এর মধ্যেই তিনি জয় করেন গৌড়, সিন্ধু, মুলতান, গোয়ালিয়র, মালব ও রায়সিন দুর্গ। শের শাহ ছিলেন অত্যন্ত সুশাসক। ভারতের ইতিহাসে তার মত সুশাসক কেউ ছিল না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।