ধনী লোকের ক্ষতি করা একদম সোজা। যদি ধনী ব্যক্তি পুরুষ হন তাহলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিশেবে নির্বাচনে নামিয়ে দিলেই হয়। আর ,ধনী মহিলা হলে কয়েকটা শপিং ক্যাটালগ, ট্যুরিজম এর গাইড, দিয়ে দিলেই হবে। যদিও আখেরে ক্ষতি টা মহিলা না উনার স্বামীর হবে।
মধ্যবিত্ত এমনিতেই আতন্কিত; সব কিছুতেই আশন্কায় থাকে।
অতীত নিয়ে ভাবালুতা আর ভবিশ্যত নিয়ে এতটাই অন্ধকারে থাকে যে বেচারা বর্তমান উপভোগ করা ভুলেই গেছে। তবুও বেচারাদের একান্তই ক্ষতি করতে চান - পুরুষ হলে বিয়ে করিয়ে দেন,মহিলা হলে স্টার প্লাসের সিরিয়াল দেখার পরামর্শ দিন।
গরীব লোকের ক্ষতি হলি্উডি নায়িকার প্রেমিক পাল্টানো মতই সুলভ। গরীব লোকের ক্ষতির ক্ষেত্রে লিন্গ বিভাজন নেই- এখন তালের সিজন- এক জোড়া তাল গিফট করেন দাম মাত্র বিশ টাকা। তাতেই যা কিছু হবার ঐ জোড়া তাল করে দিবে।
বিশ টাকার তালের পিঠা বানাতে ৬০ টাকা কেজি দামের চালের গুড়ি,ষাট টাকা কেজি গুড়। হাফ কেজি তেল দাম পড়বে ষাট টাকা,ব্যাস। আরেকটা উপায় আছে অবশ্য- ক্ষুদ্র ঋণ নেবার পরামর্শ।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শ্রেণির ক্ষতির বিভিন্ন মত পথ প্রচলিত থাকে,কোনটা টিকে থাকে কোনটা হারিয়ে যায়। তবুও নিপাতনে সিদ্ধ বলে একটা কথা আছে-কখনোই রোগা পাতলা মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না।
মারচেন্ট অব ভেনিসে শাইলাক শুকনো পাতলা। শেক্সপিয়র স্বয়ং রোগা পাতলা মানুষ সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন। সুতরাং মুরুব্বীর আদেশ শিরোধার্য। ওদের সাথে তেরি বেরি করলে টিসু চাইলে শিরিষ কাগজ ধরিয়ে দিবে।
আমার বন্ধু কায়েশ ঐ রকম শুকনো।
অবহেলা পছন্দ করেনা।
একদিন ফোন এলো ওর কছে ;ও মামা হয়েছে।
কায়েশের বড় বোনের বেবি হবে- মফস্বলের এক ক্লিনিকে ভর্তি ছিলেন। ঐ ক্লিনিকের আবার বিজলি ব্যবস্হা সরকারের কল্যানে বিরলপ্রজ। জেনারেটর আছে,তবে অবহেলায় ,স্টার্ট নিতে দেরী হয়।
পীর সাহেব ছোট হলে কি হবে দরগা বড় আছে। অব্যবস্হাপনা থাকলে কি হবে ,ভাব আছে আবার। জুতো নিয়ে ক্লিনিকে প্রবেশ নিষেধ। সামনে কাউন্টার আছে,জুতো সেখানে রেখে টোকেন নিতে হবে। কায়েশ জানতোনা ব্যাপারটা,অফিস থেকে ছুটি নিয়ে তাড়াহুড়ো করে যখন ক্লিনিকে আসে তখন সন্ধ্যা।
খুশির চোটে জুতো নিয়ে ঢুকতেই গেটে রিসেপশনে প্রবল বাধার মুখে পরলো। রিসেপশনিস্ট যা তা বল্লো- দেখেতো ভদ্রলোক মনে হয়,আরো যা তা বলার ইচ্ছেমতো। সামান্য রিসেপশনিস্ট একজন অতিথির সাথে এরকম ব্যবহার করবে কায়েশ সেটা আশা করেনি। শুকনো বলেই রিসেপশনিস্ট এ সাহসটা দেখালো। স্যর আর্থার কেনান ডয়েলের র্স্টাডি ইন স্কারলেটের ভিলেনের মতো কায়েশের অন্তর বলে উঠলো-র্যাচেল-রিভেন্জ,প্রতিশোধ।
মন খারাপ করে সদ্য ভুমিষ্ট ভাগ্নে কে দেখে তাড়াতাড়ি রিসেপশনের পাশের ওয়েটিং চেয়ার গুলোতে বসে থাকলো। কারণ মহিলা ওয়ার্ডে বেশিক্ষণ থাকতে আনইজি লাগে,এছাড়া কায়েশ তার মাকে নিয়ে বাড়ি যাবে। এসময় বিজলি চলে গেছে। কায়েশ এই অন্ধকারের মধ্যে এক নম্বর টোকেনের জুতো পাঁচ নম্বরে,পাঁচ নম্বরেরটা দশে এভাবে যতটা সম্ভব নিখূত দ্রূততায় পরিবর্তন করে দিলো। এক টোকেনের জুতো আরেক টোকেনে পাঠিয়ে দিলো।
কিছুক্ষণ পর জেনারেটর অন হলো। এর পর শুরু হলো নাটক। টোকেন জমা দিলে জুতোর পরিবর্তে চপ্পল,চপ্পলের বদলে স্নিকার। রিসেপশনিস্ট গালি থাপ্পর রিসিভ করতে লাগলো।
সুতরাং পাতলা হাল্কা ভদ্রলোকদের সমঝে চলবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।