হেঁটে হেঁটে যতদূর চোখ যায় একজন মুসলমান হিসেবে আমি সব সময় বিশ্বাস করি যে আমাদের নামাজ পড়া উচিৎ। রমজানে রোজা রাখা উচিৎ এবং পাশাপাশি নিয়মিত তারাবির নামাজও পড়া উচিৎ।
এটা স্বীকার করতে আমি মোটেই কুণ্ঠিত নই যে ছোটকালে আমি খুব একটা সুবিধাজনক মানুষ ছিলাম না। স্বভাবতই নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আমার আকর্ষণ ছিল দুর্নিবার! ছোটকালে আমার ক্ষেত্রে এমনই এক নিষিদ্ধ বস্তুর বিষয়ে এখন একটা ঘটনাটা বলতে যাচ্ছি তার সময়কাল ১৯৯৮-১৯৯৯। তখন আমি বরিশালে থাকি।
স্কুলে পড়ি। আর আমাদের বাসা ছিল কলেজ রোতে।
সময়টা ছিল রমজান মাস। বাসা থেকে সবাই জানে আমি অনেক ভাল ছেলে। নিয়মিত রোজা রাখি।
নামাজ পড়ি। এমন কি মসজিদে যেয়ে প্রতিদিন তারাবির নামাজও পড়ি। তো অন্যান্য দিনের মত সেদিনও এশার আজানের পর বাসা থেকে বের হয়েছি। গেট থেকে বের হতেই দেখি শাওন আর মুন্না দাঁড়িয়ে। একটু পর তানভির আসল।
একজন তখনও আসেনি- মিঃ বাবু। আমরা ওদের বাসার সামনে যেয়ে ওকে ডাক দিতেই বলল, আসছি! আসছি! আমাদের মত নামাজির ডাকে বাবু যেন বাসা থেকে বের হবার জন্য তাড়াহুড়া শুরু করে দিল। শুনলাম ওর ছোট বোন চিৎকার করে তার মাকে বলছে, আম্মু দেখো, ভাইয়া হাফপ্যান্ট পরে ওজু করছে!!!
তো প্রতিদিনের মত নামাজ শুরু হল। আমরা পাঁচ নামাজি নামাজে দাঁড়ালাম মসজিদের একদম শেষ কাতারে। আমরা অনেক ভদ্র ছেলে ছিলাম।
তাই মুরুব্বিদের সামনে বসার সুযোগ দেই! যাই হোক। নামাজ শুরু হল।
দেখা গেল রুকুর পরে সিজদা আসার আগেই পাঁচ নামাজি (!) মসজিদ থেকে গায়েব!
কিছুক্ষন পরে এই পলাতক নামাজিদের (!) পাওয়া গেল বিসিক শিল্প নগরির খোলা মাঠে!
আমি বললাম, এমন শীতের রাতে সিগারেট খাওয়ার মজাই আলাদা!
এ কথা বলেই আমি বেনসনের এক শলাকায় শুক টান দেবার চেষ্টা করলাম! একটু পরেই খ্যাঁক
খ্যাঁক করে কাশতে শুরু করলাম! আমার মত শিক্ষানবিশ ধূমপায়ীর করুন অবস্থা দেখে উৎসাহ যোগাতে এল বাবু। সে বলল, দেখো আমি কিভাবে টানি!
দেখলাম সে ধোঁয়াগুলো চাকতি চাকতি আকারে ছাড়তে লাগল। তার দেখাদেখি আর একজনকে দেখলাম কাঠি টাইপ লম্বা লম্বা ধোঁয়া ছাড়তে শুরু করল।
চাকতি আর কাঠির মাঝে সংঘর্ষ হতে লাগল। এ যেন এক অদ্ভুত ধোয়াটে কাঁটা গোল্লার খেলা!
তানভিরের যেন ওদের এই শিল্পকর্ম উৎপাদন সহ্য হল না। সে বলল, দ্যাখ তোরা!
বলেই সে বরিশালের লোকাল বিড়ি কারিকরের একটা নিয়ে ধরিয়ে যেই না দিল টান অমনি কু-ই করে দাঁত কপাটি লেগে ঢপাস মাটিতে পরে গেল! আমরা ওকে ধরাধরি করতেই বলল, বাপরে অনেক কড়া! বরিশাইল্যা জিনিস বলে কথা!
হঠাৎ মনে হল দূর থেকে অনেক লোকজনের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে! কি ব্যাপার! আমাদের মনে হল আওয়াজটা আস্তে আস্তে এদিকেই আসছে! বাপরে! নির্জন খোলা মাঠে আমাদের দেখে লোকজন ডাকাত ভেবে মারতে আসছে নাতো! ওরে মোর আল্লাহ! পালাও!
পরিমরি করে আমরা মসজিদের কাছে চলে আসলাম। নাহ তখনও নামাজ শেষ হয়নি। দুই এক রাকাত বাকি ছিল।
আমরা পাঁচজন শেষ কাতারে আবার দাঁড়িয়ে গেলাম!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।