জন্ম আমার ধন্য হল মাগো আমার গনিত উৎসবের কাহিনীটা ২০০৪ এর । আমি তখন এস,এস,সি, পরীক্ষার্থী। অনুষ্ঠান হবার কথা ৭ মে শুক্রবারে। আমার বাড়ি নড়াইল এর ইতনায়। আর অনুষ্ঠান হবে খুলনায়।
৬ই মে আমি খুলনায় পৌছলাম। ৭ মে সকাল ৯টার মধ্যে উৎসবে পৌছলাম আমার ফুফাত ভাই- একরামুল ভাইয়ার সাথে। খুলনা জিলা স্কুল এ গনিত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
উৎসবে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী এসেছে। এসেছেন অভিভাবকরাও।
আমি দেখলাম কি বোকামিটাই না করেছি-কোনো ক্যামেরা না এনে! কারন ওখানে উপস্থিত - ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, গৌরাঙ্গদেব, প্রফেসর হারুনর রশিদ……
ভাইয়া কে একটা ক্যামেরা জোগার করে দিতে বললাম, কিন্তু উনি ব্যর্থ হলেন। এতবড় একটা অনুষ্ঠান একা উপভোগ করা যায়? মেজাজটাই গেল খারাপ হয়ে!
যাহোক উদ্বোধনের ঘন্টাখানেক পর শুরু হল ৫০ মিনিট-এর মুল আয়োজন, গনিত অলিম্পিয়াড। প্রশ্নতো খুব সোজা- যতটা কঠিন হবে ভেবেছিলাম ততটা নয়। ওরা আপ্যায়ন ও করেছিল। অলিম্পিয়াডের পর শুরু হল স্পট কুইজ পর্ব।
স্যাররা বিভিন্ন কুইজ ধরলেন। আমি দুটো কুইজের উত্তর জানলেও মনোবল না থাকার কারনে সাথে সাথে বলতে পারিনি।
এ পর্ব শেষে সাড়ে বারটার দিকে বিরতি পেয়ে ভাইয়াদের বাসায় গিয়ে খেয়ে এলাম। অনুষ্ঠান শুরু হবার কথা দুটোয়, আমি দুটো দশ এ এসে দেখলাম এখনো শুরু হয়নি। একটা বিল্ডিং এর সামনে এসে দাড়ালাম।
‘ ভাইয়া একটা পেজ হবে?’ কে যেন আমাকে বলল।
‘কেন, কি করবে?’
‘জাফর ইকবাল স্যার এর একটা অটোগ্রাফ নিবতো, তাই’
‘উনি কোথায়?’ অত্যন্ত আগ্রহস্বরে জিগ্যাসা করলাম।
‘এই তো উনি’ !!!
দেখলাম উনি বসে আসেন, চারপাশে ছাত্র-ছাত্রীদের ভীড়। কারণ অটোগ্রাফ চাই।
বিস্ময়ের সাথে দেখতে লাগলাম জাফর ইকবাল স্যার কে।
মেজাজটা আবারো খারাপ হয়ে গেলো- একে তো ক্যামেরা নেই, তার উপর অটোগ্রাফ নেওয়ার ও কিছু নেই। কি করা যায়?
গনিত অলিম্পিয়াডের পক্ষ থেকে দেওয়া কাগজের
ক্যাপটিই নিইয়ে স্যারের সামনে বসলাম,
‘আমাকে একটা অটোগ্রাফ দিন’
‘তোমার নামটা বল’
‘শিহাব’ এবং বললাম ‘স্যার, আমার আপনার মতো লেখক হবার ইচ্ছা!’
‘বেশ তো’
‘এর মধ্যে আমার বেশ কিছু লেখা প্রথম আলোতে ছাপাও হয়েছে’
‘তুমিতো অনেক এগিয়ে গেছ’ স্যারের ব্যস্ত উত্তর।
‘স্যার, আমি একটা সায়েন্স ফিকশান ও লিখেছি’
‘কনগ্রাচুলেশন। লেখক তো তুমি হয়েই গেছ’
‘স্যার,আপনার মোবাইল নাম্বার টা প্লিজ’
‘শোন,আমি তো অপরিচিত নাম্বার রিসিভ করি না’
(ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল নাম্বারটা লিখে দিয়ে হাসতে হাসতে
বললেন)
‘কিন্তু স্যার…’ আমি ইতস্তত করলে উনি আবার বললেন,
‘নাম্বারটা ছড়িয়ে গেছে তো তাই অপরিচিত কাউকে রিসিভ করি না। ’
ঐ পর্যন্তই।
এমনিতেই আর কোন কথা আসছিল না, তারপর ভীড়ের ঠেলা। এরপর গনিত উৎসবের বাকি অংশটা উপভোগ করলাম এবং অংশগ্রহন করলাম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।