আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুভি রিভিউ: The Fall (2006)

© এই ব্লগের কোন লেখা আংশিক বা সম্পূর্ণ আকারে লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। অনেকদিন পর হাজির হলাম আরেকটি অন্যরকম মুভির রিভিউ নিয়ে। প্রথমত এই মুভিটি একেবারেই আনকমন। ডিরেক্টর থেকে শুরু করে পুরা কাস্টিং, একেবারেই অচেনা। কিন্তু বড়ো ভাইদের কাছে রিভিউ শুনে বুঝেছিলাম,এটি টোটালি অন্যধাঁচের সিনেমা,অনেকটা আর্টফিল্মের মতো,যাকে বলে টোটালি মাই টাইপ।

একটু আগে মুভিটি দেখে শেষ করলাম। মুভিটি শেষ করে বলতে বাধ্য হচ্ছি ব্লাডি ব্রিলিয়ান্ট ফি্ল্ম,টোটালি মাই টাইপ এবং সোজা বাংলায় দুর্দান্ত মুভি। মুভিটির নাম The Fall (2006)। পরিচালক Tarsem Singh, হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত।

২০০০ সালে The Cell মুভিটির মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালনায় ডেব্যু হলেও এই পর্যন্ত আর মাত্র ১ টিই মুভি বানিয়েছেন। আর তা হলো The Fall (2006)। তবে আসছে দুই বছরে তার পরিচালিত আরো দুইটি মুভি রিলিজ হওয়ার কথা। একটি হলো Immortals যা ২০১১ এর শেষের দিকে এবং The Brothers Grimm: Snow White যা ২০১২ তে বের হবে। পরিচালক Tarsem Singh কে গণণা করা হয় হালের One Of The Most Promising Young Directors দের একজনকে।

যাই হোক,এবারে The Fall মুভিটির ব্যাপারে আসা যাক। এটি একটি ফ্যান্টাসিধর্মী ড্রামা মুভি,যার মধ্যে রয়েছে অ্যাডভেন্চারের একটি অন্যরকম ফ্লেভার। মুভিটি ২০০৬ এর হলেও এটি সর্বপ্রথম অফিসিয়ালী রিলিজ পায় ২০০৮ সালে, রাশিয়াতে। এই মুভিটি সম্পর্কে আরো একটি মজার তথ্য দেই। এটির শুটিং লোকেশান ছিলো মূলত ভারতের আগ্রা ফোর্ট,উত্তর প্রদেশ সহ নানান জায়গায়।

আসুন এবারে প্লটটি সম্পর্কে আপনাদের কিছু ধারণা দেই। মুভিটির সময়কাল ১৯২০ সাল, Alexandria নামের একটি ছোট্ট মেয়ে ভাংগা হাত নিয়ে আমেরিকার লস আন্জেলস এর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে তার সাথে Roy Walker নামের একজন মুভি স্ট্যান্টম্যানের বন্ধুত্ব হয়। শরীরের নীচের অংশ প্যারালাইসিস হওয়ায় Roy Walker সেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো। একদিন ছোট্ট Alexandria অনুরোধ করে Roy কে একটি গল্প শুনানোর জন্য।

Roy তখন তাকে শুনায় মহান বীর যোদ্ধা আলেক্সান্ডারের একটি গল্প। সেই গল্প শুনে Alexandria বেশ মজা পায়। সে প্রতিদিন তার কাছে ছুটে আসে নতুন নতুন গল্প শুনার জন্য। এইবার Roy তাকে শুনায় ৬ জন বীরের গল্প,যাদের কমন শত্রু হলো কুখ্যাত গভর্নর Odious,এবং তাদের একমাত্র মিশন হলো সেই ক্ষমতাধর Odious কে হত্যা করা। এই গল্পের সেই ছয়জনের মধ্যে একজন হলো Black Bandit , Roy নিজেকে সেই চরিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা শুরু করে।

গল্পের কিছুদূর পর Roy গল্প বলা থামিয়ে দেয়। Alexandria বাকিটুকু শুনতে চাইলে Roy বলে ডিসপেনসারী থেকে মরফিন ঔষধ এনে দিলে সে বাকিটা শুনাবে। কারণ হলো,প্যারালাইসিস হওয়ার পর থেকে Roy মানসিকভাবে বেশ ভেংগে পড়েছিলো। তার ক্যারিয়ার তখন ধ্বংসপ্রায়,তার প্রেমিকা টখন তাকে ছেড়ে চলে গেছে। সে তখন সুইসাইড করার সি্দ্ধান্ত নেয়।

তাই সে গল্প বলার ছলে বিষ এনে দেয়ার জন্য নিষ্পাপ Alexandria কে ব্যবহার করতে চায়। ওদিকে গল্প শুনবার জন্য উৎসুক Alexandria। সেতো আর জানে না রয় কীজন্য মরফিন চাচ্ছিলো। একদিন সে মরফিন এনে দেয়। শুরু হয় আবারো রয়ের গল্প বলা।

রয়ের গল্প বাঁক নেয় অন্যদিকে। গোটা গল্পের মধ্যে রয়ের জীবনের সকল নিরাশা আর হতাশা ভর করে। শেষ পর্যন্ত কি সে আত্মহত্যা করে? ছোট্ট Alexandria কি জানতে পারে কি হয় সেই গল্পের শেষে? জানতে হলে দেখে ফেলুন The Fall মুভিটি। মুভিটির কাহীনির দুইটি পর্যায় রয়েছে। একটি হলো রয় আর আলেক্সান্ড্রিয়ার সেই হাসপাতালের দৃশ্য আরেকটি হলো রয়ের সেই ছয় বীরের গল্পের দৃশ্য।

এই দুইটি কাহীনির সিনক্রোনাইজশান অসাধারণ লেভেলের সামন্জ্ঞস্যপূর্ন। তবে মুভিটির যেদিকটির প্রশংসা আপনি সবার আগে করবেন তা হলো এর এক্সট্রিমলি ব্লিলিয়ান্ট লেভেলের সিনেমাটোগ্রাফী। পরিচালকের মুন্সীয়ানা শতভাগ। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও বেশ দারুন। আর কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয় আর আলেক্সান্ড্রিয়ার শক্তিশালী পারফর্মেন্স আর কি বলবো গোটা মুভিটি যেনো একটা টোটাল প্যাকেজ।

বিশেষ করে ছোট্ট আলেক্সান্ড্রিয়ার অভিনয়টা বেশ মনকাড়া। তবে মুভিটির দুই একটি সিনের এডিটিংয়ে ভুল থাকলেও সেটি চোখ বুঁজে ক্ষমা করে দেয়া যায়। মুভিটি ডিভিডি রিপে দেখেছি। ক্যামেরার এমন এমন কাজ দেখে ভাবছি হাই ডেফিনেশন কোয়ালিটির প্রিন্ট ডাউনলোড করে দেখবো। মুভিটি কোনোমতেই মেইনষ্ট্রীম ধারার নয়,বরং একটু বেশি ভাবের,অনেকটা আর্ট ফিল্মের মতো।

পরিচালক যে কতোটা ব্রিলিয়ান্ট তার বেশ ভালো পরিচয় পেয়েছি এই মুভিটি দেখে। কিছু কিছু সিন একেবারে আলাদা করে মনে রাখবার মতো। এই মুভিটি অনেকের ভালো নাও লাগতে পারে তবে আমি বেশ মুগ্ধ হয়েছি। মুভিটির আইএমডিবি রেটিংও বেশ ভালো,৭.৯। মুভিটি Austin Film Critics Association, Berlin International Film Festival সহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেষ্টিভ্যালে বেশ কয়েকটি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।

মুভিটির স্টোরিটি একটু শ্লো লাগতে পারে তবে কোনো সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফীতে যদি মুগ্ধ হতে চান দেখে ফেলুন এই মুভিটি। তবে মেইনস্ট্রীম ধাঁচের না ভেবে দেখতে বসে যান,আশা করি ভালোই লাগবে। মুভিটির ডাউনলোড লিংক: http://www.megaupload.com/?d=WPUT7MHR http://www.megaupload.com/?d=CUWWRW5E http://www.megaupload.com/?d=7PGTH45R http://www.megaupload.com/?d=WTJHBU19 http://www.megaupload.com/?d=LNNK8W68 http://www.megaupload.com/?d=SDUWLHI2 http://www.megaupload.com/?d=1OR8PDOD ইংলিশ সাবটাইটেল: Click This Link আর স্টেজভ্যু সিংগেল লিংক: http://stagevu.com/video/ytzwznrrznuf  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.