আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৭১রের গনহত্যা, একজন রুবেল সাহেবের ৪২ বছর পুরনো স্ত্রী আর বীরাঙ্গনা ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী . . . .

আমি ঘুরিয়া ঘুরিয়া সন্ধানো করিয়া স্বপ্নেরও পাখি ধরতে চাই আমি স্বপ্নেরও কথা বলতে চাই আমার অন্তরের কথা বলতে চাই... বিয়ের রাতে রুবেল জানলেন তার স্ত্রীর দীর্ঘ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ওই মুহুর্তে মেনে নিলেন স্ত্রীকে। তার ৪২বছর পর রুবেল ঠিক করলেন স্ত্রীকে ডিভোর্স দিবেন। উনার ১ ছেলে ১ মেয়ে ও ৬ নাতি নাতনী সমর্থন দিল। আর ২ছেলে ১ মেয়ে ও ৫ নাতি নাতনী উনার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করল।

অবশেষে রুবেল সাহেব বুঝতে পারলেন ৪২ বছর আগের বিচার ৪২ বছর আগেই করে ফেলা উচিত ছিল। ৪২ বছর আগের বিচার ৪২ বছর পরে করতে গিয়ে ১৭ জনকে তিনি বিরোধে জড়ালেন . . . ঘটনা একঃ ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী; ভাস্কর, যিনি শাহবাগের নাম দিয়েছেন প্রজন্ম চত্বর তার আরেক পরিচয় বীরাঙ্গনা বীরাঙ্গনা ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী। একজন জীবন্ত কিংবদন্তী। একজন বীরঙ্গনা একাত্তরে ২৩ বছরের তরুণী। কোমলমতি স্ত্রী।

তিন সন্তানের মমতাময়ী মা। তার স্বামী-সন্তানের সামনে দিয়েই তাকে সেনা-ট্রাকে করে তুলে নিয়ে যায় পাক আর্মি। দীর্ঘ সাত মাস ঢাকার একটি সেনা ক্যাম্পে তার উপর চালানো হয় পাশবিক অত্যাচার। ফেরদৌসি আজ এই লেখা দেখলে নিশ্চয়ই খুবই খুশী হতেন ঘটনা দুইঃ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের স্ত্রী মিলি রহমান এসেছিলেন শাহবাগে তিনি বললেন "সরকারকে বলি, আপনাদের কতো প্রমাণ দরকার আমি প্রমাণ দেবো আমার মতো লাখো মানুষ প্রমাণ দেবে"। তিনি জামাত নেতাদের যুদ্ধাপরাধের চিত্র তুলে ধরে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান শহীদ হওয়ার পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের পাশে সমাবেশ করে মহান এই বীরকে ভারতের দালাল বলে অভিহিত করেছিল আজকের জামাতের আমির নিজামী।

এই যুদ্ধাপরাধী ও তার সহযোগীরা সমাবেশে বলেছিল, দেশবিরোধী ভারতীয় দালালকে হত্যা করেছে পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর সদস্য রশিদ মিনহাজ বীর। কেবল তাই নয়, মতিউর রহমান শহীদ হওয়ার পর তার হত্যাকারী রশিদ মিনহাজের বাবাকে সে বলেছিল, ‘আপনাকে অভিনন্দন। আপনার বীর সন্তান ভারতীয় দালালকে হত্যা করে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে’। আজকে যুদ্ধাপরাধীরা মুক্তিযুদ্ধকে মিথ্যা বলছে, গণহত্যাকে মিথ্যা বলছে। এরা যদি রক্ষা পেয়েই যায় তাহলে কিসের বীরশ্রেষ্ঠ, কিসের বীরউত্তম, বীরপ্রতীক . . . মিলি রহমান খুব খুশী হতেন এই লেখাটা দেখলে ঘটনা তিনঃ শহীদ বুদ্ধিজীবী এসডিপি ফয়জুর রহমানের স্ত্রী আয়শা খানম (প্রবাদ প্রতিম লেখক হুমায়ুন আহমেদ এবং জাফর ইকবালের মা) যার স্বামী কে বেয়াল্লিশ বছর আগে কোন এক সকালে দেইল্লা নামক এক রাজাকার ধরে নিয়ে যায়।

তারপরের ইতিহাস খুব স্বাভাবিক, বাংলাদেশের অসংখ্য বধ্যভুমির একটিতে তার স্থান হয়। এই মহিলা এর পর যতগুলো সরকার এসেছে তাদের সবার কাছে তার স্বামী হত্যার বিচার চেয়েছেন। বেয়াল্লিশ বছর ধরে। প্রায় আশি বছর বয়সি এই বৃদ্ধা বারবার এসেছিলেন প্রজন্ম চত্বরে যেমন আরও দশ বছর আগে আসতেন "ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি" র যে কোন অনুষ্ঠানে . . . আয়শা খানম আজ খুব খুশী হতেন এই লেখাটা দেখলে বিয়ে এবং সংসার সংক্রান্ত যে উদাহরনটা দেয়া হয়েছে সেটা আসলে স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং যুদ্ধাপরাধীর মতন ব্যাপক পরিসরের ইস্যুতে খাটে না। এর পরিধি এত বড় যে একটা পরিবারের সাংসারিক জটিলতা দিয়ে এর বিশালতা বোঝা বা বোঝানোটা কেবল মাত্র বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।

সমস্যা হচ্ছে এসব কথা বলতে গেলে আমরা আবার ভাসুর হয়ে যাই। তখন কেউ আর আমাদের নাম মুখে নিতে চায় না। বিশ্বের বৃহত্তম গনহত্যার বিচারকে যারা হাস্যরসের উপাদান বানায় তাদের জন্য ঘৃণা, ধিক তোদের . . . ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।